৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।রবিবার

মাদকের র্স্বগরাজ্য টঙ্গী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

টঙ্গীর ভোটের রাজনীতিতে যেহেতু এই বস্তিবাসী একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়, সেই হেতু সব রাজনৈতিক নেতারাই তাদের অপরাধকে দেখেও না দেখার ভান করেন। টঙ্গীর রাজনীতিতে মিটিং-মিছিলে লোক সংগ্রহ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অস্ত্রবাজিসহ বিভিন্ন কাজে বস্তিবাসীরাই বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে খুব প্রিয়। এসব বস্তির শতকরা ৮০ ভাগ লোকই কোনো না কোনো অবৈধ ব্যবসা ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। প্রত্যেকটি বস্তিই অপরাধের স্বর্গরাজ্য। ভয়ংকর অপরাধীদের ভয়ে বস্তিগুলোতে পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের লোকজন রাতের বেলায় ঢোকার সাহস করেন না। সরকার যায়, সরকার আসে, কিন্তু বস্তির অপকর্ম বন্ধ হয় না। বস্তিবাসীর অপকর্র্মের ফলে টঙ্গীর সুশীল সমাজ অনেক জায়গায় বিব্রত ও লজ্জাবোধ করেন। আশপাশের থানার লোকজন মনে করেন, বস্তিবাসীর মতোই নাকি টঙ্গীবাসী। তাই বস্তির লোকদের অপকর্মে টঙ্গীবাসীরা কলংকিত।
মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট
টঙ্গীর মতো বাংলাদেশের আর কোনো থানায় অমন প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা হয় বলে টঙ্গীবাসীর জানা নেই। কারণ ভারত ও মিয়ানমার থেকে যত বড় বড় মাদকের চালান বাংলাদেশে ঢোকে তার বেশিরভাগই প্রথমে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক ও নদীপথ হয়ে অন্যতম ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয় টঙ্গীর বিভিন্ন বস্তি। এখান থেকে পর্যায়ক্রমে মাদকদ্রব্য পাইকারি বিক্রি হয় ঢাকা, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। টঙ্গীতে পাইকারির পাশাপাশি খুচরা মাদকদ্রব্যও খুব কম মূল্যে পাওয়া যায়। ফলে ঢাকাসহ আশপাশের জেলা থেকে অনেকেই প্রতিদিন আসেন মাদক সেবনের জন্য টঙ্গীর বস্তিগুলোতে।
দেশের আলোচিত অপরাধীরা গ্রেফতার হয় টঙ্গীতে
দেশের বিভিন্ন এলাকায় বড় ধরনের হত্যাকা-, অপহরণ, ডাকাতিসহ সব ধরনের নাশকতার চাঞ্চল্যকর মামলার অনেক আসামিই বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়েছে টঙ্গী এলাকা থেকে। কারণ টঙ্গীর ২৩টি বস্তিজুড়ে দেশের আলোচিত অপরাধীদের নিরাপদ জোন তথা অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন সময় টঙ্গী থেকে গ্রেফতার হয়েছে দেশের আলোচিত লেডিকিলার চাঁদপুরের কুখ্যাত খুনি রসু খাঁ, জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র অন্যতম সদস্য সানি, নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ অন্যতম আসামি, কেরানীগঞ্জের স্কুলছাত্র আলোচিত পরাগ অপহরণকারী, ময়মনসিংহ ভালুকার ফোর মার্ডারের প্রধান সন্দেহভাজন আসামি হাফিজুর রহমান তনুসহ দেশের অসংখ্য চাঞ্চল্যকর মামলার অপরাধী।
ভয়ংকর ২৩ বস্তি
টঙ্গী এরশাদনগর বাস্তুহারার বৈধ বস্তিটিসহ আরও ২২টি বস্তি রয়েছে। এগুলো হচ্ছে এরশাদনগর বাস্তুহারা বস্তি, নতুন বাজার এলাকায় ব্যাংকের মাঠ বস্তি আমতলী এলাকায় কেরানীরটেক রেলওয়ে বস্তি, মাছিমপুর এলাকায় জিন্নাতের পেছনের বস্তি, নিশাতনগর এলাকার পেছনের বস্তি, চুড়ি ফ্যাক্টরির বস্তি, তেঁতুলতলা বস্তি, সিপাইপাড়া বস্তি, নামা বাজার বস্তি, কলাবাগান বস্তি, মেডিকেলের পেছনের বস্তি, দেওড়া এলাকায় কড়ইতলা বস্তি, কাঁঠালদিয়া বস্তি, দক্ষিণ আউচপাড়া এলাকায় বালুর মাঠ বস্তি, বেক্সিমকোর পেছনের বস্তি, নোয়াগাঁও এলাকায় বাহার আলীরটেক বস্তি, রেলজংশন এলাকায় জিআরপি বস্তি, আরিচপুর এলাকায় বৌবাজার বস্তি, নেকারবাড়ি বস্তি, বেলতলা বস্তি, টঙ্গীবাজার এলাকায় গোহাটা বস্তি, সান্দারপাড়া বস্তি, হাজীর মাজার (হাজীপাড়া) বস্তি।
ভয়ংকর অপরাধীদের গবেষণাগার
বাস্তুহারার জায়গাটি ছিল পিডব্লিউডি বিভাগের। দেশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ঢাকায় আসা নদীভাঙন কবলিত এলাকার ভিটেমাটিহারা মানুষদের আশ্রয়ের জন্য টঙ্গীর দত্তপাড়ায় ১৯৭৪ সালের ৪ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহৃদয়তায় ১০১ একর (৩ বিঘা) জমির ওপর ‘দত্তপাড়া পুনর্বাসন এলাকা’ হিসেবে এ বস্তির গোড়াপত্তন ঘটে। বর্তমানে এ বস্তিটিকে বলা যেতে পারে ভয়ংকর অপরাধীদের গবেষণাগার। বাস্তুহারা বস্তির আগের নাম ‘দত্তপাড়া পুনর্বাসন এলাকা’ হলেও স্থানীয়রা এলাকাটিকে মুজিবনগর হিসেবে বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মৌখিকভাবে নামকরণ করেন জিয়া কলোনি, পরে ১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকার বস্তিটির নামকরণ করেন এরশাদনগর, বর্তমানে ‘এরশাদনগর বাস্তুহারা’ নামে পরিচিত। প্রায় ৮৫ হাজার লোক বসবাস করেন এ বস্তিতে। এর মধ্যে ভোটার রয়েছেন প্রায় ২৯ হাজার। নামকরণের উলট-পালট হয়েছে মূলত রাজনৈতিক প্রভাবে। টঙ্গীর রাজনীতির পদপরিবর্তনে এই বস্তিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। টঙ্গীর রাজনীতিতে এখানকার ভোটার ও সন্ত্রাসীরা একটি বিরাট ভূমিকা রাখে। তাই স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বহু নেতার আগমন ঘটে এ বস্তিতে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।