২৫শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১০ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।বৃহস্পতিবার

বাঁধা বিপত্তি ভয়কে দুরে ঠেলে শার্শায় গম চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ সাগর হোসেন,বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: অভাবনীয় পুষ্টিগুণে ভরা একটি ফসলের নাম গম। ভাতের পাশাপাশি গমের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। চিকিৎসকরা বলেন, গম দিয়ে তৈরী হয় রুটি, বিস্কুট, কেক সহ নান রকম খাদ্য। এটি শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি খাবার।
গম চাষ একটি লাভ জনক ফষল হলেও বর্তমান সময়ে এ চাষের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। যে গম দেশের মাঠে প্রান্তরে ব্যাপক ভাবে চাষ হতো সেই গম চাষের প্রতি অনিহা দেখা দিয়েছে চাষিদের মাঝে। গম চাষে ব্যাপক বিস্তার লাভ করা উৎপাদনশীল ফষলটি আজ চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই গমই চাষের মধ্যে দেশে দানা ফষল হিসাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। আর আজ ক্রমেই এই গম চাষ ব্যাপক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
গত কয়েক বছর পিছনের দিকে লক্ষ করলে আমরা দেখতো পাই গম চাষের ব্লাষ্ট ভাইরাস কতটা ক্ষতি করেছে এই গম চাষে। চলতি বছরে যশোরের শার্শা উপজেলায় গমের আবাদ হচ্ছে মাত্র ৭ হেক্টর জমিতে। যা বিগত কয়েক বছর আগে এই উপজেলাতে গম চাষ হয়েছে ৫শ হেক্টরের উপরের। যা তারও আগে ১ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে ছিল। গম চাষের প্রতি চাষিদের চলতি গম আবাদে এক প্রকার নিরুৎসাহিত করছেন বলে জানান স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, যশোরের শার্শা উপজেলায় কৃষি পণ্য উৎপাদন হিসাবে এক সময় বিখ্যাত ছিলো। বছরের বিভিন্ন সময়ের নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও সব সময় ব্যস্ত থাকতো কৃষি কাজে। এই উপজেলার চাষিদের চাষযোগ্য ফষলের অন্যতম একটি ফষল হিসাবে ছিল এই গমের আবাদ। কিন্তু হঠাৎ করেই গত কয়েক বছর ধরেই ব্যাপক ভাটা পড়ে গম চাষে। গমে ক্ষতিকর ব্লাষ্ট ভাইরাস লাগায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়ে এই উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন চাষযোগ্য অঞ্চল।
প্রথম অবস্থায় ক্ষতিটি পুশিয়ে নিয়ে পুনরাই পরের বছর আবারো গম চাষ করে একই ভাবে আর্থিক ও মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন কৃষককুল। গম চাষে মন্দা ভাবের কারনে এই চাষের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন গম চাষিরা। আর তারপর থেকে গম চাষ থেকে একে বারই বিরত থাকতে অনুরোধ করেন কৃষি বিভাগ। পরপর কয়েক বছর এ চাষের থেকে বিরত থাকার পর আবারো এই উপজেলায় গম চাষ শুরু হয়েছে।
যা হয়েছে তা ১শ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশেরও কম। চলতি গম আবাদ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং কোন রকম ব্লাষ্ট ভাইরাস না থাকায় গম আবাদ ভালো হয়েছে এবং চাষিরা লাভবান হবে বলে জানান কৃষি বিভাগ পাশাপাশি এখনো কোন রকম ঝুঁকি না নিয়ে এ বছরও গম চাষিদের নিরুতসাহিত করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
গম চাষিরা জানান, গম চাষি মাসুদ রানা জানান, শত বাঁধা বিপত্তি ভয় ও নানাবিধ প্রতিকুলতাকে দুরে ঠেলে আমরা গম চাষ করেছি। কোন রকম দুর্যোগ না আসলে আশা করছি ভালো ফষল ঘরে তুলতে পারবো পাশাপাশি লাভের মুখ দেখবো।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সৌতম কুমার শীল জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। বিগত বছরে গমে ব্লাষ্ট ভাইরাস লাগার কারনে কৃষকদের গম আবাদ থেকে নিরুতসাহিত করেছি এবং এখনও করছি যার কারনে চলতি ২০১৯ সালে গমের আবাদ পুরোপুরি ভাবে কমে গিয়ে মাত্র ৭ হেক্টর জমিতে কৃষক গমের আবাদ করছে।
ভাইরাস বর্তমানে এখনও লাগেনি যদি না দেখা দেয় তাহলে আবারো আগামী বছর থেকে আশা করছি কৃষকরা এ চাষের উপর মনোযোগী হবে। আমি এবং আমার কৃষি বিভাগ সর্বদায় গম চাষিদেরকে সঠিক পরিচর্যা পরামর্শ প্রদান ও সহযোগীতা করছি। আশা করি এবছর গমের আবাদ ভাল হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।

মুক্তাগাছা প্রতিনিধি:

মুক্তাগাছায় চাচা শ্বশুরের দায়ের কোপে ভাতিজা বউ শিউলী আক্তার খুন হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার বাঁশাটি ইউনিয়নের গোয়ারী উত্তর পাড়া গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়, উপজেলার গোয়ারী উত্তর পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সিএনজি চালক শরিফুল ইসলামের স্ত্রী শিউলী আক্তার (৩০) স্বপরিবারে ঘুমাচ্ছিল। এ সময় তার চাচা শ্বশুর মৃত নেওয়াজ আলীর পুত্র সোলায়মান মিয়া তাদেরকে ডাকা ডাকি করে ঘর থেকে বের হতে বলে। দরজা খুলে শরিফুল ও তার স্ত্রী শিউলী ঘর থেকে বের হলে সোলায়মান তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালজ করে। এক পর্যায়ে সোলায়মানের হাতে থাকা দা দিয়ে এলোপাতারি কোপাতে শুরু করে। সোলায়মান দা’ দিয়ে শিউলীর ঘাড়ে কোপ দিলে শিউলী ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে সোলায়মান দা নিয়ে শরিফুলকে ধাওয়া দিলে শরিফ প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে লাফ দিয়ে প্রণে বাঁচায়। পরে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে।
নিহত শিউলী একই উপজেলার মুজাটি গ্রামের মৃত হামেদ আলীর মেয়ে। গত ১২ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। শিউলর ৫ মাসের মেয়ে শিশুসহ ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে।
উল্লেখ্য গত শুক্রবার বিকেলে শিউলীর ৬ বছরের মেয়ে লামিয়া এর সাথে সোলায়মানের পুত্রের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়ার জেরেই সকালে নিহতের বাড়িতে এসে তাদের ঘুম থেকে ডেকে এ খুনের ঘটনা ঘটান।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম মুন্না জানান, শনিবার সকালে উপজেলার গোয়ারী উত্তর গ্রামে হত্যার ঘটনা ঘটে। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠায়। মামলার প্রস্তুতি চলছে। এঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

মুক্তাগাছায় চাচা শ্বশুড়ের দায়ের কোপে ৩ সন্তানের জননী খুন।