২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজে অচলাবস্থা ৩ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না শিক্ষক- কর্মচারীরা। কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতির অপসারণ দাবী।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।

বরগুনার আমতলী উপজেলায় নারীদের উচ্চ শিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজ। ওই কলেজে নতুন পরিচালনা পরিষদ (এডহক) কমিটি গঠন করার পর থেকে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ মাস ধরে বেতন ভাতা পাচ্ছেন না ওই কলেজের ৩৪ শিক্ষক- কর্মচারীরা। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির অপসারন চেয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও আমতলীর সাধারণ জনগণের ব্যানারে দাবী সম্বলিত একটি ব্যানার কলেজের সম্মুখে টানানো হয়েছে ।

 

জানা গেছে, বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের পরিচালনা (এডহক) কমিটির সভাপতি হিসেবে গত ১৬ আগষ্ট তারিখে-৭ (ব-১০৬২) জাতী:বি:/ক:প:১৬১৪/৫১১৮৪ নং স্বারকে ফাহিমা সুলতানা কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর, স্বাক্ষরিত একটি পত্রে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকুকে ১৬ আগষ্ট ২০২১ থেকে ৬ মাসের জন্য পূর্নাঙ্গ পরিচালনা কমিটি করার জন্য সভাপতি হিসেবে মনোনোয়ন দেয়। গোলাম সরোয়ার টুকু সভাপতি মনোনিত হওয়ার পরে গত ৩ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও তিনি এখন পর্যন্ত কলেজ পরিচালনা (এডহক) কমিটির কোন সভা আহবান করেননি। এছাড়া বেতন ভাতায় স্বাক্ষর না করায় গত ৩ মাস ধরে ওই কলেজে কর্মরত ৩৪ জন শিক্ষক- কর্মচারী তাদের বেতন ভাতা উত্তোলন করতে না পেরে মানবতার জীবন যাপন করছেন। বর্তমানে কলেজটিতে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যাওয়া লক্ষ করা গেছে এবং শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যেমন বিঘœ ঘটছে তেমনি প্রশাসনিকভাবে অচলাবস্থারও সৃষ্টি হয়েছে।

 

অপরদিকে আজ (বুধবার) সকালে বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের সম্মুখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মনোনিত ওই কলেজের পরিচালনা (এডহক) কমিটির সভাপতি গোলাম সরোয়ার টুকুর অপসারন চেয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও আমতলীর সাধারণ জনগণের ব্যানারে দাবী সম্বলিত একটি ব্যানার টানানো হয়। এ সংবাদ পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে ছুটে যায়। এ সময় সাংবাদিকরা ওই ব্যানারের ছবি তুলতে গেলে ওই কলেজের কর্মরত শিক্ষক বশির আহম্মেদ ও জয়নুল আবেদীন টানানো ব্যানারটি খুলে ফেলেন। এরপর কলেজের অভ্যন্তরে গিয়ে দেখা যায়, ওই দুই শিক্ষকের উপস্থিতিতেই কলেজে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা টি-সার্ট পড়ে, মুখে রং মেখে, হিন্দী গান বাজিয়ে র্যা গ ডে পালন করছেন। কলেজে ওই র্যা গ ডে পালনের বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষসহ অধিকাংশ শিক্ষক ও পরিচালনা (এডহক) কমিটির অধিকাংশ সদস্যরা জানেন না বলে তারা জানায়।

 

অধিকাংশ শিক্ষকরা জানায়, বর্তমান কলেজ পরিচালনা (এডহক) কমিটির সভাপতির অনুগত ওই দুই শিক্ষক বশির আহম্মেদ ও জয়নুল আবেদীনসহ ৩/৪জন শিক্ষক মিলে কলেজটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্ঠির পায়তারা করছেন।

 

কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক সহকারী প্রভাষক হেলেনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, কলেজে আজ র্যা গ ডে পালনের বিষয়টি অধ্যক্ষ ও আমিসহ অধিকাংশ শিক্ষকরাই জানেন না।

 

এ বিষয়ে জানতে ওই কলেজের পরিচালনা কমিটির বিদোৎসাহী সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম মৃধা বলেন, কলেজ থেকে কোন অনুষ্ঠানের দাওয়াত পাইনি এবং গত ৩ মাস পর্যন্ত কলেজ পরিচালনা (এডহক)কমিটির জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মনোনিত সভাপতি কোন সভাও আহবান করেননি।

 

কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ফোরকান মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা শিক্ষক-কর্মচারীরা একাধিকবার বিলে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য এডহক কমিটির সভাপতিকে অনুরোধ করলেও তিনি অদ্যবদি কলেজের কোন বিল ভাউচার ও কলেজ সংশ্লিষ্ট কোন কাগজে স্বাক্ষর করেননি। বাধ্যহয়ে আমিসহ কর্মরত অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন ভাতার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়ের নিকট লিখিতভাবে এবং জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সাথে দেখা করে বিষয়টি জানিয়েছেন। এডহক কমিটির সভাপতি মনোনিত হওয়ার পরে গত ৩ মাসে তিনি কলেজের পরিচালনা কমিটির কোন সভা আহবান করেন নাই। আর আমার নিয়োগ নিয়েও কোন আইগত জটিলতা নেই।

 

কলেজ পরিচালনা (এডহক) কমিটির সভাপতি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু মুঠোফোনে গত ৩ মাসে ওই কলেজের পরিচালনা (এডহক) কমিটির কোন সভা আহবান করেননি বলে স্বীকার করে বলেন, কলেজের অধ্যক্ষের নিয়োগ নিয়ে আইনগত জঠিলতা থাকায় আমি অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক- কর্মচারীদের বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করিনি। তবে শ্রীগ্রই অধ্যক্ষ ছাড়া অন্যান্য শিক্ষক- কর্মচারীদের বিলের ব্যবস্থা করা হবে। তার অপসারন চেয়ে টানানো ব্যানারের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানায়।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর নির্ঘুম রাত কাটছে এলাকাবাসীর

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : ১ মাসে ১৬ টি ছাগল চুরি
পর থেকে চোর আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটচ্ছে গ্রামের ছাগল মালিকরা। মইদুল ইসলামের ২ টি ছাগল চুরি হয়েছে। এর ধারাবাহিক এই চুরির ঘটনার পর থেকে গ্রামজুড়ে চোর আতঙ্ক
বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলার পাঁচলিয়া গ্রাম থেকে গত ১মাসে ৯ বাড়ি থেকে ১৬ টি ছাগল চুরির ঘটনা ঘটেছে। পল্লী চিকিৎসক আব্দুল আলিমের ১টি, তহিদুল ইসলামের ১টি, আশরাফুল ইসলামের ৩টি, সাইদুল ইসলামের
১টি, জহির হোসেনের ১টি, দুরুদ মন্ডলের ১টি, তসলেম উদ্দিনের ২টি, ও আবু কালামের ২টি রয়েছে। চোরেরা ছাগল মেরে রেখে যায় আরও ১টি।
মইদুল ইসলাম বলেন, গত ১০ বছর ধরে আমি পঙ্গু হয়ে ঘরে পড়ে আছি। মাঠে অল্প একটু জমি আছে, তা থেকে খাবার ধানটা কোন রকম আসে। বাজার আর অন্যান ব্যয়ভার চলতো
আমার ছাগল বিক্রি করে। ছাগল ২টি পেয়েছিলাম আমি ছাগল পোষানি থেকে। তাও নিয়ে গেল চোরেরা। তিনি বলেন,
৩ছেলে মেয়ে আর স্ত্রী নিয়ে আমার সংসার। সংসারের আয় করি আমি একাই। এদিকে একের পর এক ছাগল চুরির ঘটনায় নির্ঘুম রাত কাটছে ওই গ্রামের ছাগল মালিক লালন খন্দকার ও মমিনুর রহমান। তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে
ছাগল পালন করে আসছি। এমন সমস্যা হয়নি কোনদিন
প্রায় দিন না ঘুমিয়ে রাত কাটছে এলাকাবাসীর। এ ব্যাপারে দোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বিশ্বাস বলেন, চুরির ঘটনা ঘটেছে আমি জানি। বিষয়টি উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় তোলা হয়েছে। তবে আজ পর্যন্ত কোনো
ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কোটচাঁদপুরের লক্ষ্মীপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক ( এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, চায়ের দোকানে গল্প শুনেছি ১/২ টা ছাগল চুরি হয়েছে। এই ব্যাপারে আজ পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ ও করেনি

ঝিনাইদহের৷কোটচাদপুর ১ মাসে ১৬ টি ছাগল চুরি