[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

ঝিনাইদহ, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতি বিজরিত, কলা ও পানের জন্য সুপরিচিত বাংলাদেশের।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সাইদুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি জেলা।
এ জেলার ব্র্যান্ডিং স্লোগান হলো:
কলা আর পান
ঝিনাদাহের প্রাণ
ঝিনাইদহ যশোর জেলার একটি মহকুমা ছিল। যেটি ১৮৬২ সালে মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৪ সালে একটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
ঝিনাইদহ জেলার পূর্ব পার্শ্বে মাগুরা জেলা, উত্তরে কুষ্টিয়া জেলা, দক্ষিণে যশোর জেলা ও পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণা এবং পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণা ও বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলা অবস্থিত।
এই জেলার নামকরণ সম্পর্কে জানা যায় কথিত আছে
প্রাচীনকালে বর্তমান ঝিনাইদহের উত্তর পশ্চিম দিকে নবগঙ্গা নদীর ধারে ঝিনুক কুড়ানো শ্রমিকের বসতি গড়ে ওঠে। সে সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা থেকে ব্যবসায়ীরা ঝিনুকের মুক্তা সংগ্রহের জন্যে এখানে ঝিনুক কিনতে আসতো। সে সময় ঝিনুক প্রাপ্তির এই স্থানটিকে ঝিনুকদহ বলা হতো। ঝিনুক থেকে মুক্তা সংগ্রহের মাধ্যমে এবং ঝিনুক পুড়িয়ে চুন তৈরি করে তা বিক্রি করে মানুষ অর্থ উপার্জন করতো। অনেকের মতে ঝিনুককে আঞ্চলিক ভাষায় ঝিনেই, যার অর্থ ঝিনুক এবং দহ অর্থ বড় জলাশয় ও ফার্সি ভাষায় দহ বলতে গ্রামকে বুঝানো হতো। সেই অর্থে ঝিনুকদহ বলতে ঝিনুকের জলাশয় অথবা ঝিনুকের গ্রাম বুঝাতো। আর এই ঝিনুক এবং দহ থেকেই ঝিনুকদহ বা ঝিনেইদহ, যা- রূপান্তরিত হয়ে আজকের ঝিনাইদহ নামকরণ হয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী ঝিনাইদহ গ্রন্থে ঝিনাইদহ সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘‘বারো আউলিয়ার আশীর্বাদপুষ্টঃ গাজী-কালু-চম্পাবতীর উপাখ্যানধন্য; কে.পি. বসু, গোলাম মোস্তফার স্মৃতিবিজড়িত; বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, বিপ্লবী বীর বাঘাযতীনের শৌর্যময়; খেজুর গুড়, কলা-পানের প্রাচুর্যমণ্ডিত; পাগলাকানাই, লালন শাহের জম্মস্থান, কপোতাক্ষ, বেগবতী, চিত্রা, নবগঙ্গার ঝিনুকদহ এক কথায় নাম তার ঝিনাইদহ।’’

মুক্তিযুদ্ধের সময় ঝিনাইদাহ ৮ নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিলো এবং এ জেলা ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে।
এই জেলা ৬টি উপজেলা, ৬টি পৌরসভা, ৪টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত। ঝিনাইদহ জেলার উপজেলা গুলো হল:
কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ সদর, মহেশপুর, শৈলকুপা এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলা।
ঝিনাইদাহে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চত্বর রয়েছে। তার মধ্যে আছে: পায়রা চত্বর. ঝিনুক চত্বর ইত্যাদি।
এ জেলার মধ্য দিয়ে ৭টি নদ-নদী প্রবাহিত: বেগবতী, ইছামতী, কোদলা, কপোতাক্ষ নদ, নবগঙ্গা নদী, চিত্রা নদী ও কুমার নদী।
খাবার: শৈলকুপার রসমালাই,
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান
ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ
ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
ঝিনাইদহ সরকারি কে,সি, কলেজ
ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ
ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
শেখ কামাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ঝিনাইদহ
দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা
ঢোল সমুদ্র দীঘি
দত্তনগর কৃষি খামার- বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃষিবীজ উৎপাদন খামার
মিয়ার দালান
মদন মোহন মন্দির
ধোপঘাট ব্রিজ
জোহান ড্রিমভ্যালি পার্ক এন্ড রিসোর্ট
নলডাঙ্গা জমিদার বাড়ি
নলডাঙ্গা মন্দির
নলডাঙ্গা রাজবাড়ি রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পট
সাতগাছিয়া মসজিদ
হরিহরা গড়
বলুহর বাওড় – বাংলাদেশের সবচেয় বড় বাওড়
খালিশপুর নীলকুঠি ও আমবাগান
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
সুন্দরপুর জমিদার বাড়ি
শৈলকুপা জমিদার বাড়ি
শৈলকুপা শাহী মসজিদ
বারোবাজার প্রত্নতাত্ত্বিক মসজিদ
মল্লিকপুর বটগাছ – এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং দুইশত বছরের প্রাচীন বটবৃক্ষ
ধান্য হাড়িয়া পূর্বপাড়া জামে মসজিদ, ধান্য হাড়িয়া, যাদবপুর, মহেশপুর।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
লতিফুর রহমান – বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা;
খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর ; – ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও অধ্যাপক আল-হাদিস বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া
গোলাম মোস্তফা – কবি, গীতিকার ও গায়ক
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান – বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠ;
লালন শাহ – বাউল সাধক, গায়ক, গীতিকার;
কেপি বসু- বিশিষ্ট গণিতবীদ
মুস্তফা মনোয়ার – চিত্রশিল্পী;
পাগলা কানাই – সাধক এবং কবি
মনির খান – গায়ক;
জুয়েল রানা:ফুটবলার।
বাঘা যতীন বা যতীন্দ্রনা মুখোপাধ্যায় – ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্র সৈনিক
জামাল নজরুল ইসলাম- দেশ বরেন্য পৃথিবীর বিখ্যাত গণিতবিদ ও পদার্থ বিজ্ঞানী
মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুল আবেদীন আশা, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ, ঝিনাইদহ।
কাজী মুতাসিম বিল্লাহ, ইসলামি পণ্ডিত; জামিয়া শরইয়্যাহ মালিবাগ, ঢাকার মহাপরিচালক (১৯৩৩ — ২০১৩)
ইলা মিত্র – তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম নেতা
মসিউর রহমান – ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা
আল-আমিন হোসেন- বোলার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।
জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী- বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ
হরিপদ কাপালী- হরিধানের উদ্ভাবক
সিরাজ সাঁই- লোকায়ত আধ্যাত্মবাদী এবং যার পালিত পুত্র ছিলেন লালন সাঁই
পাঞ্জুশাহ- সুফি সাধক
এ জেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যার মধ্যে আছে: দৈনিক নবচিত্র, সাপ্তাহিক সীমান্তবাণী, দূরন্ত প্রকাশ ইত্যাদি।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *