[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

নড়াইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ হাচিবুর রহমান, নড়াইল প্রতিনিধিঃ

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার ঘড়িভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মোল্যার (৫৬) বিরুদ্ধে একাধিকবার অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে।মিজানুর রহমান মোল্যা ঘড়িভাঙ্গা গ্রামের হবিবর মোল্যার ছেলে। প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বিষয়গুলি মিটিয়ে ফেলেছেন কয়েকবার। সাম্প্রতি ৪র্থ শ্রেনীর একটি মেয়ের সঙ্গে ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় ফুঁসে ওঠেছে অভিভাবক মহল ও স্থানীয়রা। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের চরম শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন এবং খবর প্রকাশ না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন।
১৭-১৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার-রবিবার) সরেজমিনে গেলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড ঘটিয়েছেন তিনি এগারবার বলে জানা গেছে। অভিভাবক ও স্থাণীয়দের মধ্যে ওই গ্রামের সাইফুল ইসলাম, খবির মোল্যা, ওয়াজকুরুনী, শেখ তরিকুল ইসলামসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক মহিলারা জানান, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুটি মেয়ে ওই শিক্ষকের নির্যাতনে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া ওই স্কুলে দু’জন মহিলা শিক্ষকও ওই প্রধান শিক্ষক মিজানুর মোল্যার অনৈতিক প্রস্তাবে অতিষ্ঠ হয়ে ইজ্জত হারানোর ভয়ে অন্যত্র বদলী হতে বাধ্য হয়েছেন। পিতা-মাতার পরেই শিক্ষকের স্থান, শিক্ষক হলো মানুষ গড়ার কারিগর আর সেই শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রধান হয়ে যদি চরিত্রহীন হয়, তাহলে আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা কোথায়? চরম শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা চরিত্রহীন প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে আমাদের সন্তানদের আর পড়াবোনা। এর আগেও সে বহুবার এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে এলাকার প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে স্থাণীয় শালিসের মাধ্যমে অর্থদন্ডসহ লাঞ্ছিত হয়েছে অনেকবার। এছাড়া আরো কয়েকটি কেলেংকারী গোপনে অর্থের বিনিময়ে রফাদফা করেছেন। তাতেও তার চরিত্র পাল্টায়নি। সম্প্রতি ৪র্থ শ্রেণীর একটি মেয়ের সঙ্গে একই ঘটনার পুনরাবৃতি ঘটিয়ে মেয়ে পক্ষকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তারা জানায়। প্রয়োজনে ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে তারা মানববন্ধনও করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
ঘড়িভাঙ্গা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য কুদ্দুস খান বলেন, মিজানুর মাষ্টরের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অনেক আছে। তবে তার চারটি অনৈতিক কর্মকান্ডের শালিসে আমি ছিলাম। ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডসহ লাঞ্ছিত হয়েছে বারবার।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানকে তার ব্যবহৃত মোবাইল (০১৭২৫৩০৬৬৮৫) নম্বরে ফোন দিলে সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাতে তার বক্তব্য দিবেন বলে আর আসেননি। পরবর্তীতে তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর মামা জানান, ওই প্রধান শিক্ষক এর আগেও অনেকবার এ ধরণের অনৈতিক কাজ করেছে এবং স্থাণীয় শালিসে হেনস্থা ও অর্থদন্ডের শিকার হয়েছেন বলে শুনেছি। আমার ভাগ্নির বিষয়ে আমি অত্র স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানিয়েছি, তারা এখনো কিছু ব্যাবস্থা নেয়ার কথা জানায়নি। তবে আমি এহেন অনৈতিক কাজের শুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খান মাহাবুব বলেন, আমি এলাকায় থাকতামনা। তাই ওই প্রধান শিক্ষক সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানিনা। তবে এ ধরণের স্পর্শকাতর বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে সকল সদস্যদের সাথে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবো।

এ বিষয়ে কালিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার দাশকে তার ব্যবহৃত মোবাইল (০১৭১২-২২০১৯২) নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *