[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

অনিশ্চয়তায় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১৪৮ শিক্ষার্থী।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 

এম এ রশীদ বিশেষ প্রতিনিধিঃ

 

অনিশ্চয়তার মধ্যে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১৪৮ শিক্ষার্থীর কর্মজীবন। অনার্স সম্পন্ন করলেও আইনজীবী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর এই শিক্ষার্থীদের বার কাউন্সিলে আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন জমা নিচ্ছে না বার কাউন্সিল। বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১,২২,২৩,২৪ তম ব্যাচে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করায় তারা আবেদন জমা নিবে না।

 

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ২৩তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৫ সালে দুই লক্ষ টাকা টিউশন ও রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে ভর্তি হন তিনি। আইন বিভাগের ২৩তম ব্যাচের এ শিক্ষার্থী ২০১৯ সালে শেষ করেন তার অনার্স। হাওরের খুব সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা এই শিক্ষার্থীর এল এল বি অনার্স শেষ করতে চার বছরে তার প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু অনার্স সম্পন্ন করার পরও বার কাউন্সিলে আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারছেন না তিনি।

 

এই চার ব্যাচের একাদিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি ও আইন বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করান। এজন্য বার কাউন্সিল ইন্টিমেশন জমা নিচ্ছে না এই শিক্ষার্থীদের। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রায় ৮ মাস আগে এই ১৪৮ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে হাইকোর্টে ২টি রিট (৫০৯১ ও ৫৩৭০) দাখিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আপতার মিয়া ও ২২তম ব্যাচের ছাত্র শফিকুল ইসলাম শফি। এই রিট দুটোর উপর ভিত্তি করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর মধ্যে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা আপতার মিয়া ও ১৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা শফিকুল ইসলাম শফির রিটের পক্ষে হয়। এবং হাইকোর্ট ৮ সপ্তাহ সময় দেন এই টাকা পরিশোধ করার জন্য। সর্বমোট ৬টি কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত জরিমানার টাকা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

 

শিক্ষার্থীরা বলেন, আইন বিভাগের প্রধান হুমায়ুন কবির অতিরিক্ত মুনাফার জন্য প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করায় আজ এই সমস্যায় আমরা জর্জরিত। তর জন্য আমরা ক্যাম্পাসে আসতে পারি না। জরিমানার টাকা পরিশোধের কথা উনাকে বললে উনি নয়-ছয় করে এড়িয়ে যান বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান। এজন্য অনেক শিক্ষার্থীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে কোন ছাত্রছাত্রীর কোন রকম ক্ষতি হলে আইন বিভাগের প্রধান হুমায়ূন কবির স্যার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অথরিটি দায়ী থাকবে। সেই সাথে জরিমানার টাকা পরিশোধের কথা আইন বিভাগের প্রধানকে বললে উনি বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখান। যদি আমরা সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করি আর সেই সময় যদি কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে হুমায়ুন স্যার ও ভিসি এর জন্য দায়ী থাকবেন।

 

তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছেন, ট্রাস্টি বোর্ডের অসহযোগিতার কারণে এই ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ড চাইলে শিক্ষার্থীদের এই সমস্যা সমাধান সম্ভব। এদিকে এই টাকা পরিশোধের জন্য সহযোগিতা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন করেন। এই আবেদনের জবাবে গত ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারপারসন কর্তৃপক্ষকে আরেকটি পত্র প্রেরণ করেন। পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের উৎস বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৪১ ধারা অনুযায়ী উহার উৎস হইতে অর্থ সংগ্রহ করিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলে জমা প্রদান করিয়া তহবিল পরিচালনা করা হবে। ইতিপূর্বে একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হতে দশলক্ষ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বারবার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে একই ভুল কাম্য নয়।’

 

পত্রে বিশ্ববিদ্যালয় চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজকে অবগত না করে কোষাধ্যক্ষ ও অর্থ পরিচালককে অব্যাহতি দিয়ে নামমাত্র সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অন্যদের দায়িত্ব দিয়ে নিজেদের খেয়াল মত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল পরিচালনা করে আসছেন। যা আইন পরিপন্থী। ‍বিগত প্রায় ১০/ ১১ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ সম্পর্কিত কোনো তথ্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজের নিকট নেই। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যরা জানতে পেরেছেন নতুন আরেকটি ব্যাংকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ব্যাংক হিসাব খোলে তা পরিচালনা করা হচ্ছে। যা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিপন্থী। যেহেতু উল্লেখিত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জড়িত, সেহেতু নিয়ম অনুযায়ী অর্থ উত্তোলনের ব্যাপারে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে। অর্থ উত্তোলন সাপেক্ষে, উক্ত অর্থ আইন বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা নিরসনে খাতে ব্যবহারে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যদের কোনো আপত্তি নেই।’

 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান হুমায়ূন কবির বলেন, মূলত ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি না করার জন্য নোটিশ দেন। এবং এটা সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য ছিল। তাই শুধু আমরা না অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এই জরিমানা করেছে হাইকোর্ট। এর আগে আমাদেরকে এই অপরাধের জন্য ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ওই টাকা জমা দেওয়ার পরও আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে বার কাউন্সিলে আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে দেয়নি। পাশাপাশি একই অপরাধের জন্য আমাদের দুইবার জরিমানা করা হয়েছে। এটা আমাদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। তারপরও আমরা টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এখন শিক্ষার্থীরা যেহেতু এ বিষয় নিয়ে কোর্টে গেছেন তাই সব কিছু কোর্টর মাধ্যমেই হবে। আমরা যদি টাকা দিতে না পারি তাহলে কোর্ট আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেবে।

 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. শহিদ উল্লাহ তালুকদার রিট, রায় ও জরিমানার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টে কোনো অর্থ নেই। এই অর্থের যোগান বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দিতে পারবে। এ ব্যাপারে ট্রাস্টিজের সদস্যদ

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *