নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোশারফ হোসেন(মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জে সাটুরিয়া উপজেলায় পরকীয়ায় প্রেমে বাধা দেওয়ায় কারণে ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া কলেজ শিক্ষক শাহিনুর ইসলামের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নিহতের এলাকার শতাধিক নারীপুরুষ সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে পলাতক হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নিহত কলেজ শিক্ষক শাহিনুর ইসলামের বড় ভাই আব্দুল মান্নান ও সাটুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পিন্টু।
উল্লেখ্য, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মলশী গ্রামের মৃত শুকুর আলীর পুত্র ধামরাইয়ের রাজাপুর আনোয়ারা খান গালর্স কলেজের শিক্ষক মো: শাহিনুর ইসলাম গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে মলশী গ্রামের মফেস পীর সাহেবের বাড়িতে ওরসের সিন্নী খাওয়ার পর বাড়ি যাওয়ার পথে একই গ্রামের আব্দুস সামাদের পুত্র মো: সাদ্দাম (২৮), মজনু, মুুক্তা, জুলহাস, বাদশা, রাসেলসহ আরো কয়েকজন রাস্তায় গতিরোধ করে ছুরি দিয়ে কলেজ শিক্ষক শাহিনুরের পেটে ও বুকে বেশ কয়েকটি আঘাত করে ও গলা জবাই করার চেষ্টা করে। ছুরি আঘাতে শাহিনুর রাস্তার পাশে পানির ডোবায় পরে গিয়ে চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সাদ্দাম পালিয়ে গিয়ে তাদের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
পরে এলাকাবাসী রক্তাক্ত জখম অবস্থায় শাহিনুরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা বেগতি দেখে কর্মরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে।
ঘটনার রাতে এ ঘটনায় শতাধিক গ্রামবাসী সাদ্দামের বাড়ি ঘেরাও করে। অবস্থার গতিবেগ দেখে সাদ্দামের পরিবার ৯৯৯ এ ফোন করে ডাকাত আক্রমন করেছে বলে পুলিশের সহযোগীতা চায়। সাটুরিয়া থানার পুলিশ সে সময় সাদ্দামের বাড়িতে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলেও সাদ্দাম ঘরের ভিতর থাকার পরেও দরজা না খুলায় তাকে আটক করতে পারে নি।
সে সময় স্থানীয়রা জানায়, অভিযুক্ত সাদ্দামের সাথে স্থানীয় এক গৃহবধুর বেশ কয়েক মাস যাবৎ পরকীয়া প্রেমের সম্পক চলছে। এ সম্পকের বাধা মনে করে কলেজ শিক্ষক শাহিনুরের উপর এর আগেও একবার হামলা করেছিল সাদ্দাম। ঘটনার দিন রাতেও তারই সূত্রধরে শাহিনুরকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালায়।
এ হামলার ঘটনার পর শাহিনুর ইসলামের বড় ভাই আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে সাদ্দামসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে সাটুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে অভিযুক্ত মূল আসামি সাদ্দাম হোসেন ও বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও অভিযুক্ত ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত দুই আসামীর জামিন মঞ্জুর করেছে।
গত বৃহস্প্রতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক মাস ১০ দিন
পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলেজ শিক্ষক শাহিনুর ইসলামের মৃত্যু হয়।
Leave a Reply