[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর হারিকেন ও কুপি বাতি বিলুপ্ত ।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি ঃ
গ্রাম বাংলার জীবনে রাতের অন্ধকার দূর করতে একটা সময় দেশের ৬৮ হাজার গ্রামের মানুষের ভরসা ছিল হারিকেন বা কুপি বাতি। পরিচালনার দায়িত্বে থাকা উচ্চ পর্যায়ে খোঁজ করলে লক্ষ্য করা যাবে অনেকেই লেখাপড়া করেছেন হারিকেনের মৃদ্যু আলোতে ।গৃহস্থলী এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনের ব্যাপক চাহিদা ছিল। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা ঘুরে সত্তর উর্ধো মুরুব্বীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন,”আগে প্রতিটি ঘরে দু তিনটি হারিকেন ছিল।সন্ধ্যা হলে হারিকেন ছাড়া কল্পনা করা যেত না।রাতে বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য একমাএ অবলম্বন ছিল হারিকেন,রাতে অন্ধকারে পথ চলায়ও ব্যবহৃত হত হারিকেন।
এখন সেই হারিকেনের ঠাঁই হয়েছে জাদুঘরে।হারিকেনের স্থান দখল করেছে বৈদ্যুতিক বাতি।বৈদ্যুতিক ও চায়না বাতির কারনে উপজেলায় হারিকেন ব্যবহার অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।সেই আলোর প্রদীপ হারিকেন এখন গ্রাম থেকেও হারিয়ে গেছে।হারিকেন জ্বালিয়ে বাড়ির উঠানে বা বারান্দায় পড়াশোনা করতো শিক্ষার্থীরা।হারিকেনের জ্বালানী কেরোসিন আনার জন্য গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে থাকতো কাঁচের বোতল।সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হত।হাটের দিনে বা বাজারের দিনে সেই রশি ঝুলানো বোতল হাতে নিয়ে হাটে যেত।সেই দৃশ্য বেশি দিন আগের নয়।পল্লী বিদ্যুতায়নের যুগে এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না।প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য হারিকেন এখন শুধু স্মৃতি।গ্রামের অমাবস্যার রাতে মিটি মিটি আলো জ্বালিযে মানুষের পথ চলার স্মৃতি এখনো তাড়া করে।বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম আমলের সিনেমা গুলোর দিকে এক নজর তাকালেই তার কিছু নমুনা পাওয়া যায়।যেখানে সিনেমার নায়িকা তার ভালোবাসার মানুষটিকে খোঁজার জন্য হারিকেন নিয়ে বের হতো।বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ”ডাক হরকরা ”গল্পের নায়ক তার এক হাতে হারিকেন অন্য হাতে বল্লম নিয়ে রাতের আধারে ছুটে চলে তার কর্ম পালনে।
দিনে দিনে প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে যার কারনে হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন বিদ্যুতের বাতির দিকে ঝুঁকছে।তাপ বিদ্যুৎ,সৌর বিদ্যুৎ,জল বিদ্যুৎসহ জ্বালানী খাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিলুপ্তির পথে।এ ছাড়া প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংরক্ষন করার পদ্ধতি থাকায় টর্চ লাইট,চার্জ লাইট,সৌর বিদ্যুৎসহ বেশ কিছু আলোর যোগান থাকায় এখন আর ঝুঁকছে না হারিকেনের দিকে।
প্রবীনরা মনে করেন,হারিকেন যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ,এক সময় হয়তো হারিকেন দেখতে জাদুঘরে যেতে হতে হবে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবেও না হারিকেন কি ও হারিকেনের ইতিহাস।চায়না,জাপানসহ বিশ্বের উন্নত দেশ গুলো খুব দ্রুত চার্জ সংরক্ষনকারী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।এক সময় হয়তো চিরতরে বিলুপ্ত হবে হারিকেন।তাই হারিকেন নিয়ে ছন্দের সুরে বলা যায় ”যখন তোমার কেউ ছিল না তখন ছিলাম আমি,এখন তোমার সব হয়েছে পর হয়েছি আমি

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *