নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

শাহাবুদ্দিন মোড়ল ঝিকরগাছা যশোর :
যশোরের জেলা পরিষদের আপত্তির করণে আটঁকে গেল ঝিকরগাছা পৌরসভার দু’টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। বর্তমানে পৌরসভার দু’টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। পৌরসভা এলাকার উন্নয়নে সেকন্ড সিটি রিজিওন ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট এর আওতায় পৌর সদরের কাটাখালের উপর ৩৬ মিটারের আরসিসি গার্ডার ব্রিজ ও খালের দু’পাশে ৫শ মিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ভূমি সংরক্ষণ এবং সৌন্দর্য্য বর্ধন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট জায়গা নিজেদের দাবি করে সেখানকার কাজ বন্ধ রাখার জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন জেলা পরিষদ। সম্প্রতি ১৪ ফেব্রুয়ারী ১(২০১১)-৮৬ নং স্মারকে জেলা পরিষদ পৌরসভা সদরের কৃষ্ণনগর মৌজায় কাটাখালের সৌন্দর্য্যবর্ধন ও উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রেখে যৌথভাবে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন খালের উভয় পার্শ্বে সীমানা নির্ধারণ পূর্বক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, জীবিত ও মূল্যবান গাছ চিহ্নিত করণ, বিধি মোতাবেক নাম্বারিং করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। এই চিঠির ফলে উল্লেখিত দু’টি উন্নয়ন প্রকল্প এর কাজ আটঁকে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুনছিলাম পৌরসভার দু’টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছে এবং কিছুদিন কাজ করতেও দেখেছিলাম কিন্তু হঠাৎ দেখছি কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যদি বৃষ্টি শুরু হয় তবে পানির চাপে খালের দু’ধার ভেঙ্গে, আমাদের বাড়ি-ঘর স্রোতে ভেসে যাবে। কারণ আগে গাছের শেকড়ে মাটি আকঁড়ে ছিল এখনতো আর গাছ নেই। আমরা চাই এই কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করা হোক।
পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল জানান, জেলা পরিষদ দাবি করছে এটা তাদের সম্পতি কিন্তু আমাদের জানা মতে ওটা ওয়াপদাহের বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের। কাটাখালের পশ্চিম পাশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠির দূর্ভোগ লাঘব, ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াতের পথ সুগম করা, কৃষকের উৎপাদিত পন্যের পরিবহনের সুবিধার্থে জনগনের জনদাবী পুরোনের লক্ষ্যে আমারা একটি ব্রিজ নির্মান ও খালের দু’পাশের ভাঙ্গন বন্ধ করে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মান, বৃক্ষ রোপন সহ সমন্বিত প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি শেষ হলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঐ এলাকার জনগনের জীবনমান উন্নত সহ দীর্ঘদিনের সরকারি জমি অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে রক্ষা পাবে। মানুষ ওই এলাকায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে রিক্রিয়েশনের জন্য বেরোতে পারবে। যেহেতু জেলা পরিষদ ঐ জায়গার মালিকানা দাবী করে কাজ বন্ধ রাখতে চিঠি দিয়েছে তাই আমরা সাময়িক ভাবে কাজ বন্ধ রেখেছি। সেই সাথে আমরা জেলা পরিষদকে সকল বিষয় অবহিত করে অনাপত্তি পত্র চেয়ে চিঠি প্রদান করেছি। আশা করি খুব শীঘ্রই আমরা এই অনাপত্তি পত্র হাতে পেয়ে যাবো এবং পুনঃরায় উন্নয়ন প্রকল্প দু’টির কাজ শুরু করতে পারবো।
যশোর জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার আল আমিন জানান, সিএস, এসএ ও আরএস রেকর্ড অনুযায়ি খালের বর্তমান জমির মালিক জেলা পরিষদ, যশোর। ঝিকরগাছা পৌরসভা আমাদের কিছু না জানিয়ে সেখানে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে, তাই আমরা সেখানে কাজ বন্ধ রাখতে চিঠি দিয়েছি। এখন পৌরসভা আবার আমাদের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। এছাড়াও জেলা পরিষদ বিগত একশ বছরে খালের কি কি উন্নয়ন করেছে সেটা জানতে চাইলে তখন তিনি জানান, কোনো উন্নয়ন কাজ করা হয়নি। ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা এর উত্তরে চেয়ারম্যান মহোদয় বলতে পারবেন বলে জানান।
Leave a Reply