১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।২৯শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।শুক্রবার

মিশিগানে দূর্গাপুজা: দেবীর বিদায়লগ্নে সিঁদুর খেলায় মেতেছেন রমনীরা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সোনাই ডেক্স : দশভূজা দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর বেজে উঠেছে বিজয়া দশমীতে। গতকাল সোমবার প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।পাঁচ দিনের আনন্দ শেষে অশ্রুসজল নয়নে ভক্তরা বিদায় দেন মা দুর্গাকে। ‘বাবার বাড়ি বেড়ানো’ শেষে ‘ আনন্দময়ী’ দেবী ফিরে গেলেন ‘ কৈলাসের দেবালয়ে’। প্রবাসের জীবন কর্মময় ও রুটিন মাফিক। উৎসব প্রিয় জাতি বাঙ্গালি। এই কটা দিন সব হিসাব ওল্টা-পাল্টা করে মেতে ওঠেছিল পূজার আনন্দে। এই কটা দিনের বেহিসাবি জীবন থেকে পুনরায় রোজকার ছন্দে ফিরেছে সবাই।

বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এবার গত ২৮ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবীপক্ষ। এরপর একে একে ষষ্ঠী থেকে দশমী। সবগুলো তিথিতেই মিশিগানের পূজামণ্ডপগুলো ছিলো পূজারীদের বিনম্র প্রার্থণা আর নানান আনুষ্ঠানিকতায় পরিপূর্ণ। পাঁচদিনের মহাকর্মযজ্ঞের পর আজ ধরণীর জন্য দেবী রেখে গেলেন আশির্বাদ আর শিক্ষা। এ শিক্ষা সুন্দর, পরিপাটি-গোছানো মানবজনমের।

এদিকে গতকাল বিকেল থেকেই ভক্তরা ডেট্রয়েট দুর্গা টেম্পল বিজয়ার শান্তির জল ও প্রশস্তি বন্ধনের জন্য আসতে শুরু করেন। সন্ধ্যার পর মন্দির প্রাঙ্গন হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য। যেন কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই। মানুষ প্রাণের টানে কিংবা কিছু পাওয়ার আশায়-ই এ টেম্পলে এসে থাকে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

সন্ধ্যায় দশমী বিহিত পূজা শেষে শুরু হয় আরতি। আরতির পর বিবাহিত নারীরা সিঁদুর, পান, ফল ও মিষ্টি নিয়ে ‘দুর্গা-মা’কে সিঁদুর ছোঁয়ানো পর তারার একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর দেন। সিঁথিতে সিঁদুর মাখানোর পর আঙুলে লেগে থাকা বাকি সিঁদুর তারা একে অপরের মুখে মাখেন। এটি-ই হলো সিঁদুর খেলা। নারীরা তাদের ও পরিবারের কল্যাণে এ ধর্মীয় আচার পালন করেন প্রতি বছরের দুর্গোৎসবে। সিঁদুর খেলার প্রাথমিক ইতিহাস অজানা। তবে ধারণা করা হয়, সিঁদুর শুভক্ষণের এই আচার অনুষ্ঠান আনুমানিক ৪শ বছর আগে শুরু হয়েছিল।

এরপরই শুরু হয় বিজয়ার শান্তির জল ও প্রশস্তি বন্ধনের আনুষ্ঠানিকতা। এ সময় মুখে গায়ে রঙ্গ মাখা ভক্তরা কিছুক্ষণ পরপরই উচ্চকন্ঠে ধ্বনি তুলেন ‘বল দুর্গা মা কি জয় ’। সেই সঙ্গে সকলেই শেষবারের মতো প্রণাম করেছেন মাকে। শান্তির জল গ্রহণ ও প্রশস্তি বন্ধন শেষে নারী পুরুষ সকলেই একে অপরকে আলিঙ্গনও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে টেম্পলের পক্ষ থেকে আগত ভক্তবৃন্দকে বিজয়ার মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে। বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়ে প্রবাসী ঘরে ঘরেও উৎসব শেষে চিরন্তন মনখারাপের সুর।

সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন কন্যারূপে ধরায় আসেন দুর্গা। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে তিনি কৈলাস পাড়ি দেন। এদিন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। আর এই দিনটি বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। পুরাণে মহিষাসুর বধ সংক্রান্ত কাহিনীতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯দিন, ৯ রাত যুদ্ধ করার পরে ১০ম দিনে তার বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেন দেবী। আর এই দিনটি ছিল শুক্ল পক্ষের দশমী। বিজয়া দশমী সেই বিজয়কেই চিহ্নিত করে। শাস্ত্র মতে, এবার দেবীর আগমন ও প্রস্থান তেমন কোন শুভবার্তা বয়ে আনেনি। সব অসুরের বিনাশ আর অনিয়ম-জঞ্জালকে সরাতে দেবী দুর্গা এসেছিলেন ঘোড়ায় চড়ে। অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে সোমবার (৭ অক্টোবর) ফের ঘোড়ায় চড়েই মর্ত্য থেকে স্বর্গে ফিরে গেলেন দেবী।

এদিকে ৭ অক্টোবর সোমবার ছিল সপ্তাহের শুরু, ওয়ার্কিং ডে। আর বিজয়া দশমী দিনটিও পড়েছে এদিন। এ কারণে অনেকের পক্ষেই বিজয়া দশমী ও শান্তি প্রশস্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ সম্ভব হয়নি। টেম্পল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুপস্থিত এসব ভক্তবৃন্দ আগামী ১২ অক্টোবর শনিবার রাত ৭ টার পর বিজয়ার শান্তির জল ও প্রশস্তি বন্ধন গ্রহণ করতে পারবেন।
একই ভাবে সোমবার ওয়ার্কিং ডে এর কারণে মিশিগান কালীবাড়ীর শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমী আগামী ১৩ অক্টোবর রোববার পালন করা হবে। এদিন সন্ধ্যায় বিজয়ার শান্তির জল ও প্রশস্তি বন্ধন দেয়া হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।