২৫শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।শুক্রবার

বেনাপোল চেকপোষ্টে পাসপোর্টযাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃসাগর হোসেন,বেনাপোল(যশোর) প্রতিনিধিঃদেশের গুরুত্ব পুর্ণ এবং ব্যাস্ততম এলাকা বেনাপোল স্থল বন্দর। এই বন্দর হয়ে প্রতিদিন দেশী বিদেশী হাজার হাজার পর্যটক ভারত Ñ বাংলাদেশ যাতায়াত করে। বেনাপোল শহরটা ভারত সীমান্ত ঘেষা হওয়ায় এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসেও পর্যটক। কিন্তু দুর্ভগ্য বশত এখানকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন তেমন হয়নি। উন্নয়নের মধ্যে হয়েছে পাসপোর্টযাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ। প্রতিদিন দুর দুরান্ত থেকে রাত জেগে আসা পাসপোর্টযাত্রীরা প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতার কাজের অপেক্ষায় থাকে। এতে বেশী দুর্ভোগে পড়ে অসুস্থ রোগি, শিশু ও বয়স্ক যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস অফিস থেকে দুই কিলোমিটার চলে গেছে যাত্রীদের লাইন। অনেকে প্রকৃতির ডাকে আশে পাশে লাইন ছেড়ে বাথরুমে ও যেতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। বেনাপোল চেকপোষ্টে এলাকায় এর আগে কখনো এমন দুর্ভোগ দেখা যায়নি। যাত্রীদের যাতায়াত ও তখন কম ছিল এমনটিও নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইমিগ্রেশনে ডেস্কের সংখ্যা বৃদ্ধি করলে ও কাজ চলছে ধীর গাতিতে। এর আগে এখানকার চেয়ে যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশী গেলেও লাইনে দাঁড়িয়ে এ ভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা।

খুলনার উর্মিলা বসু বলেন, অনেকবার ভারত যাতায়াত করেছি। কিন্তু গত ছয়মাসে বেনাপোল এর অবস্থা পাল্টে গেছে। একদিকে মানুষের সুবিধার কথা বলে ৪২ টাকা ট্যাক্স নি্েচ্ছ অতিরিক্ত। অপদিকে মানুষকে দির্ঘ লাইনে ঘন্টার ঘন্টা দাঁড় করিয়ে কস্ট দিচ্ছে। একই জায়গা থেকে আসা শামিম আহম্মেদ বলেন, আমাদের ওপার ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে সরকারী কোন ট্যাক্স নাই তারপরও তাদের ওখানে সুযোগ সুবিধাও অনেক ভালো। তারা রোদ বৃষ্টিতে যাতে কষ্ট না পায় তার জন্য সেখানে বড় ছাউনির ব্যবস্থা করেছে। যেখানে কয়েক হাজার লোক দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। অপরদিকে আমাদের নিকট থেকে কাস্টমস ট্রাক্স ও পোর্ট ট্যাক্স ভারত যাতায়াত বাবদ ৫৪৫ টাকা নিয়ে রৌদ্রে দাঁড় করিয়ে রাখছে কাস্টমস ইমিগ্রেশন ও বেনাপোল স্থল বন্দর। রিতমত আমাদের সাথে সরকার বিমাতা সুলভ আচারন করছে। জনগনের টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে আবার সেই জনগনকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলছে ; আমরা কোন রাষ্ট্রে বসবাস করছি দেশে সরকার আছে কি নেই তা বোঝার কোন উপায় নাই।

স্থানীয়রা বলেন প্রতিদিন এ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের কষ্ট উপভোগ করতে হয়। এখানে নেই কোন শৃঙ্খলা নেই যাত্রীদের জন্য কোন বসার সুÑ ব্যবস্থা। অথচ স্থল বন্দর সুকৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে যাত্রীদের নিকট থেকে ৪৫ টাকা। এরপর ও যাত্রীদের রেহাই নাই। এরা ভারত থেকে ফিরে আসার সময় কিছু কেনা কাটা নিয়ে আসলেও তাও বার বার খুলতে হয় বিভিন্ন সরকারী সংস্থার লোকদের নিকট। যশোরের আরজিনা বেগম জানান, আমরা ভারত থেকে আসার সময় কাস্টমস আমাদের ব্যাগ দেখে ছেড়ে দিয়েছে। আবার সেই একই ব্যাগ কাস্টমস থেকে বের হয়ে শুল্ক গোয়েন্দা নামে সিভিল পোশাকে দাড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিদের খুলে দেখাতে হয়েছে। এরপর সেখান থেকে এসে বাহিরে বিজিবি কে দেখানোর পর তারা কোন সিদ্ধান্ত দিতে না পেরে আবার বিজিবি ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে আবার ব্যাগ খোলা লেবার নিয়ে অপেক্ষা করায় লেবার বিল বেশী দেওয়া এগুলো কি হয়রানি নয়। এ ভাবে আমাদের বিভিন্ন সরকারী বাহিনীর কাছে হয়রানি আশা করি না। যদি অসুবিধা হয় তাহলে এসব সরকারী লোক এক জায়গায় বসে আমাদের ল্যাগেজ তল্লাশি করতে পারে। অযথা বার বার ব্যাগ খুলে নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হয়ে আমরা ভারত থেকে এসে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। এছাড়া শুধু বেনাপোল চেকপোষ্টে ৪ জায়গায় ল্যাগেজ খোলা নয় পথে আমড়াখালী ও মাঝে মধ্যে নতুনহাট নামক স্থানেও ল্যগেজ খোলা হয়।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন খান বলেন. সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন ও সরকারী ছুটি একদিন থাকায় যাত্রী সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে ইমিগ্রেশনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। যাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিটি ডেস্কের অফিসার তাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আবার এর ভিতর পলাতক, বা কোন ব্যাক্তির বিদেশ গমনে নিশেধাজ্ঞা আছে কিনা সেগুলোও যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিকাল ৪ টার সময় ও দির্ঘ লাইন লক্ষ করা গেছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।