১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

দোষীদের শাস্তি দাবিঃ অসহায় খালেদার জীবন সমর্পণ নির্মাণাধীন রেল লাইনে=

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দোষীদের শাস্তি দাবিঃ
অসহায় খালেদার জীবন সমর্পণ নির্মাণাধীন রেল লাইনে
♦জসিম মাহমুদ♦
এবার আলোচনায় রামুর রেল লাইন। যা কাল হয়ে দাঁড়াল খালেদার পরিবারে। রেল লাইনের ক্ষতি পূরণের টাকা না পাওয়ার আগেই বসত বাড়ি উচ্ছেদের চেষ্টাকালে ব্রেইন স্ট্রোক করে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক গৃহবধু। নিহত খালেদা বেগম (৫২)কক্সবাজার জেলার রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের সাতঘরিয়াপাড়া এলাকার আজিজ মিয়ার স্ত্রী।

গত মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রাণ হারান তিনি। খবর পেয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান, ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম ও রামু থানার উপ-পরিদর্শক ছানা উল্লাহ ঘটনাস্থলে যান। এসময় ইউএনও নিহত খালেদা বেগমের পরিবারকে মৃতদেহ দাফনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।

নিহত খালেদা বেগমের বড় ভাই নুরুল আলম জানিয়েছেন, রেল লাইনের অধিগ্রহনকৃত জমিতে তার ছোট বোন খালেদা বেগমের পৈত্রিক বাড়ি-ভিটে ছিলো। কিন্তু মামলাবাজ ও ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত ইটভাটা মালিক মোজাফ্ফর আহমদ বোনের অসহায়ত্বের সুযোগে ভিটে-জমিটি গ্রাস করার উদ্দেশ্যে উল্টো হয়রানিমূলক মামলা করেন। যার কারনে রেল লাইনের কাজ শুরু হলেও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছিলেন না খালেদা বেগম। নুরুল আলম আরো জানান, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৯ শতক জমিতে ২০ বছর ধরে বসত বাড়ি তৈরী করে স্ব-পরিবারে বসবাস করে আসছিলেন স্বামী পরিত্যাক্তা খালেদা বেগম। মৌখিক দানপত্র করার ভূয়া তথ্য দিয়ে একটি মামলা করে ২০১৩ সালে বিজ্ঞ আদালত থেকে ডিক্রি নিয়ে জমিটি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন বিতর্কিত ইটভাটা মালিক মোজাফ্ফর আহমদ। পরে মামলার বিষয়টি জানাজানি হলে দিশেহারা খালেদা বেগম ওই মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। যা এখনো বিচারাধিন রয়েছে। পরে জমিটি রেল লাইনে অধিগ্রহনকরা হলেও এ কারনে ক্ষতিপূরণও পাচ্ছিলেন না তিনি। কিন্তু রেলের ঠিকাদার ও কাজে নিয়োজিত লোকজন খালেদা বেগমকে বাড়ি ভেঙ্গে দিয়ে জমি দখলমুক্ত করার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছিলেন।

সম্প্রতি রেল লাইনের কাজ চলাকালে খালেদা বেগমের গাছ কেটে সাবাড় করা হয়। এ দৃশ্য দেখে আহাজারি করার সময় ব্রেইন স্ট্রোক করেন তিনি। বোনের মৃত্যুতে তাঁর ৪ ছেলে, ২ মেয়ে অসহায় হয়ে পড়লো। খালেদা বেগমের বড় ছেলে হারুন জানান, মায়ের মৃত্যুর জন্য ভূমিদস্য মোজাফ্ফর আহমদই দায়ি। কারনে তিনি মামলা দিয়ে হয়রানি না করলে এতদিনে আমরা রেলের ক্ষতিপূরণ পেয়ে অন্যত্র জমি কিনে বসবাস করতে পারতাম। তিনি এ ভূমিদস্যুর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন এবং অবিলম্বে জমির ক্ষতিপুরণ পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান জানিয়েছেন, জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ সহসা নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

এছাড়া নিহত খালেদা বেগমের পরিবারকে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, ঘটনাটি খুবই দূঃখজনক। প্রভাবশালী কর্তৃক দরিদ্র খালেদা বেগম নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। রেলের কাজ শুরু হলেও তার বাড়ি-ভিটে উচ্ছেদ শুরু হয়েছে, তাই তিনি ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথায় যাবেন তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। যে কারনে স্ট্রোক করে প্রাণ হারিয়েছেন। এখন জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।