১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

সুনামগঞ্জের ছাতকে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ঢাকা থেকে পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীসহ গ্রেফতার ৫।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

সুনামগঞ্জের ছাতকে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়েরি মামলায় প্রধান আসামীসহ ৫ জন‌কে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। গত সোমবার রা‌তে ঢাকা উত্তরা এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব’র এক‌টি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ছাতক পৌর শহরের মন্ডলীভোগ কা‌লিবা‌ড়ির মৃত গো‌পিকা রঞ্জন চৌধুরীর ছে‌লে, পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরী (৪৫), বাগবা‌ড়ির আবদুল কাহার রঞ্জুর ছে‌লে সাদমান মাহমুদ সা‌নি (৩০), কালারুকা ইউনিয়নের মু‌ক্তিগাও গ্রামের উস্তার আলীর ছে‌লে আলাউদ্দিন (৫১), ইসলামপুর ইউনিয়নের নোয়াগাও গ্রামে মৃত ফ‌রিদ আহম‌দের ছে‌লে হাজী বুলবুল আহমদ (৪৬), পৌর শহরের বা‌গবা‌ড়ি গ্রামে মৃত তেরা মিয়া চৌধুরীর ছে‌লে কু‌হিন চৌধুরী (৪১)। গ্রেফতারকৃতদের নৌ-পুলিশ সিলেট জোনের এসপির কাছে হস্তান্তরের পর কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। জানা যায়, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা নিয়ে চেলা ও মরা চেলা নদী বালুমহাল ৫শ`৬০ একর জায়গা নিয়ে অবস্থিত। এ নদীতে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে বালতি, বেলচা দিয়ে বালু উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু ১৪২৮ বাংলা সনের মহাল ইজারাদার মেসার্স ফয়েজ এন্টারপ্রাইজের পরিচালক ফয়েজ আহমদ ইজারার একাধিক শর্তভঙ্গ করে ছাতক, কোম্পানীগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার এলাকার প্রভাবশালী ও অত্যাচারীদের হাতে বালুমহাল সাব-ইজারা দিয়েছে। এ সাব-ইজারাদাররাই বেআইনিভাবে ড্রেজারের পাশাপাশি শ্যালো ও বোমা মেশিন দিয়ে বালুমহালের ৫০-৬০ ফুট নীচ থেকে বালু উত্তোলন করেছে। গভীরতা বেড়ে যাওয়ার কারণে সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করতে না পারায় কর্ম হারিয়েছেন হাজারো শ্রমিক। নদী তীরের ৩ শতাধিক বাড়িঘর ও স্থাপনা এবং কয়েকশ’ একর ফসলি জমি ভাঙ্গন হুমকিতে রয়েছে । অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূত বালু উত্তোলনের কারণে নদী ভাঙ্গন দৌলতপুর গ্রামে একটি মসজিদ ও নাছিমপুর, শারপিননগর, রহিমের পাড়া, সোনাপুর, কাজিরগাও, পুর্ব লুভিয়া, চাইরগাও, রহমতপুরসহ ২০টি গ্রামের রাস্তা ঘাট, ঘরবাড়ি, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ৩ শতাধিক বাড়িঘর নদী ভাঙ্গনে কবলে পড়েছে। ফকির টিলা থেকে সোনালী চেলা রাস্তা ও চারালবাড়ি এবং ক্যাম্পের বাজারে সরকারি রাস্তা ভেঙ্গে যাবার কারণে অর্ধলক্ষাধিক মানুষের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইজারাদারে লোকজন নদীর ইজারাকৃত জায়গা ছাড়াও সৈয়দাবাদ, নিয়ামতপুর, এমদাদনগর, মাষ্টারবাড়িরসহ বন বিভাগের মুর্তা বাগান, ফসলি জমি থেকে শ্যালো ও বোমা মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করেছে। এ কারণে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু ইজারা চুক্তির ১২ নম্বর শর্ত লঙ্ঘন করে রাতভর অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করলেও স্থানীয় প্রশাসন নিরব অবস্থানে রয়েছে বলে একতা বালু উত্তোলন ও সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির দাবি। গত ৪ জুলাই সন্ধ্যায় উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রাম সংলগ্ন চেলা নদীতে অবৈধভাবে শ‌্যালো ও বোমা মেশিন দি‌য়ে বালু ও পাথর উত্তোলনকালে বালু ,পাথর বোঝাই নৌকা ও বোমা মেশিন আটক করে পুলিশ। এতে ক্ষুদ্ধ হ‌য়ে নৌ-পু‌লি‌শের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালায় বালু ও পাথর খেকোরা। হামলায় ৪টি হ্যান্ডকাফ, ১১টি মোবাইল, নগদ ৮০ হাজার টাকা লুটপাট ও মারপিট ক‌রে নৌ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আটককৃত বালু ভর্তি ৪টি বাল্ক‌হেড ৯‌টি বোমা মেশিন জব্ধকৃত এসব মালামালগু‌লো লুটপাট ক‌রে নেয়। এ ঘটনায় নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মঞ্জুর আলমসহ ৮ ব্যক্তি আহত হ‌য়। মঞ্জুর আলম ঢাকার রাজারবাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় নৌ-পুলিশের এস আই হা‌বিবুর রহমান বাদী হ‌য়ে পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে ২৬ জনের নামে থানায় বালু মহাল ও মা‌টি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ সা‌লে ১৫ (১) ধারায় গত ৬ জুলাই এক‌টি মামলা (নং-৩৩/১৯৬) রুজ ক‌রেন। এ ব‌্যাপা‌রে নৌ-পু‌লিশ ছাতক ফাঁড়ির ইনচার্জ র‌কিব আহমদ ঘটনার সত‌্যতা নি‌শ্চিত ক‌রে‌ ব‌লেন, সি‌লেট জোনের নৌ-পুলিশের এসপি শম্পা ইয়ামিন এর সার্বিক সহ‌যো‌গিতায় মামলার প্রধান আসামী‌সহ ৫ জনকে র‍্যাব গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সি‌লেট জোনের নৌ-পুলিশের এসপি শম্পা ইয়াসমিন এ ঘটনার সত‌্যতা নি‌শ্চিত ক‌রে ব‌লেন, মামলার প্রধান আসামীসহ ৫জন‌কে ঢাকা থেকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে পা‌ঠি‌য়ে দেয়া হ‌য়েছে।##

 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।