৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।মঙ্গলবার

শাজাহানপুরের আমরুল ইউনিয়ন আর্সেনিক ঝুঁকিতে।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

নাজিরুল ইসলাম, শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের প্রায় চার হাজার পরিবার আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে। আর্সেনিক থেকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন গ্রামবাসীরা। এতে তাদের পরিবারের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

 

আর্সেনিক দূষিত পানি পান করায় সম্প্রতি এ ইউনিয়নের ১৫ জনের শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিয়েছে। গত আট বছরের আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত হয়ে এ ইউনিয়নের পাঁচজন মারা গেছেন।

 

মৃত পাঁচজন হলেন, আব্দুর রশিদ ও তার স্ত্রী কামরুন নাহার, আব্দুল কুদ্দুস ও তার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম। আরেকজন হলেন আফছার আলী। মৃতরা সবাই ইউনিয়ের নগর আমরুলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

 

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আমরুল ইউনিয়নে ক্ষতিকর মাত্রায় আর্সেনিক শনাক্ত করা হয়েছে। ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যে ১৩টিতেই আর্সেনিকের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। মারাত্মক আর্সেনিক প্রবল এলাকা হওয়ায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে আমরুল ইউনিয়নে ১০টি গভীর নলকূপ (সাব-মারসিবল পাম্প) বসানো হয়। এর মাধ্যমে ৪০০ পরিবারকে আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নে চার হাজার পরিবার আর্সেনিক ঝুঁকিতে থাকলেও শুধু ৪০০ পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়। তাও গত বছর নলকূপগুলো বসানো হয়। এরমধ্যে আমরুলের হুদার মোড় এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে ছয়টি ট্যাপ বসানো হয়েছিল। কিন্তু এই ট্যাপগুলো থেকে দুর্গন্ধযুক্ত ও ময়লা পানি আসে। এ কারণে ওই গ্রামের ২০টি পরিবার বিশুদ্ধ পানি সংকটে রয়েছেন।

 

আমরুল ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামা অটল বলেন, ইউনিয়নে প্রায় চার হাজার পরিবার আর্সেনিকের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

 

ইউনিয়নের নগর আমরুলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় আট বছর আগে আর্সেনিক আক্রান্ত হয়ে গ্রামে পাঁচজন মারা যান। ওই সময় সরকারিভাবে একটি টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল। সেই টিউবওয়েলের পানি পান করে আমরা অনেকটা সুস্থ আছি। এরপরেও অনেকের শরীরে আর্সেনিকের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে এটার সমাধান চাই।’

 

আমরুল নগর হুদার এলাকার পুটু মোল্লা নামে এক বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তার শরীরে আর্সেনিক উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার শরীরে আর্সেনিক উপসর্গ দেখা দিয়েছে। হাতে ও বুকে দাগ পড়েছে। আমার স্ত্রীর শরীরেও আর্সেনিক উপসর্গ রয়েছে। সবাই আতঙ্কে রয়েছি। আমরা বাঁচতে চাই।’

 

গ্রামের কুলসুল বেগম বলেন, আমার শরীরের ভিতর জ্বালা করে। হাতের তালু ও পায়ের তলায় দাগ হচ্ছে। কোনো ওষুধেই ভালো হচ্ছে না।’এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোতারব হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে লিভার সিরোসিস, কিডনির সমস্যা ও চর্ম রোগ ছাড়াও মৃত্যুও হতে পারে। যাদের উপসর্গ দেখা দিয়েছে তাদেরকে রোগ থেকে বাঁচতে হলে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে, ভিটামিন এ, ই, সি যুক্ত পুষ্টিকর খাবার বেশি খেতে হবে।

 

জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক সোহরাব হোসেন ছান্নু বলেন, আর্সেনিক কবলিত এলাকা চিহ্নিত করে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমের মাধ্যমে উপজেলাবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।