১লা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।রবিবার

বিজয় দিবসে ইছহাক একাডেমী ও মোজাহের উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সোনাই ডেক্স: সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলার রামপুর গ্রামস্থ অলংকারী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মোজাহিদের পরিচালিত ‘ইছহাক একাডেমী’ও হবিগঞ্জ জেলার নবগঠিত শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ১১নং ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নে মোজাহের উচ্চ বিদ্যালয়। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের বদলে গ্রহন করা হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা।

সরেজমিনে একাডেমীতে যাওয়ার পর দেখা যায়, বিজয় দিবসের নানান আয়োজনের মাধ্যমে যখন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক ও অভিভাবকরা বিজয় দিবসের উৎসব পালনে ব্যস্থ। এর ঠিক উল্টো অবস্থানে রয়েছেন ইছহাক একাডেমীর পরিচালক ও শিক্ষকরা। তারা বিজয় দিবসে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে বরং প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় ‘আইসিটি’ বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। আবার একটি শ্রেণী কক্ষে চলছে কোচিং ক্লাস।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও শিক্ষকরা যদি বিজয় দিবসের দিন অনুষ্ঠান পালনের বদলে পরীক্ষা নেন তাতে আমাদের কি করার আছে। আমরা বাধ্য হয়েই পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছি। পরীক্ষায় অংশ না নিলে তো আমরা ফেল করব। আর কে জীবনের একটি বছর নষ্ট করতে যায়।

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের বদলে ওই দিনই পরীক্ষা গ্রহনের ব্যাপারে অভিভাবক আখতার হোসেন হোসেন বলেন, বিষয়টি খুব খারাপ লাগছে। তবে অতীতে এমনটি হয়নি। এবার কেনো এমন হল জানিনা।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস আলী বলেন, ভুল হয়ে গেছে। আমাদের এটা করা ঠিক হয় নি। আর এমনটি হবে না।

ইছহাক একাডেমীর পরিচালক ও অলংকারী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মোজাহিদ বলেন, পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী আজ (১৬ ডিসেম্বর) কোন পরীক্ষা নেই। এটি আগামীকাল (১৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে একটি দ্বন্দ চলমান আছে। আর ওই দ্বন্দের জের ধরে প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার জন্যই শিক্ষকরাই বিজয় দিবসের দিন পরীক্ষা নিয়েছেন। আজকের পরীক্ষার ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দেব বলেন, বিজয় দিবসের দিন পাঠদান কোন অবস্থায় গ্রহনযোগ্য নয়। তাই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

এদিকে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ১১নং ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নে স্থাপিত মোজাহের উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে এ সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ছড়িয়ে পড়লে ষষ্ঠ শ্রেণির আইসিটি ও সপ্তম শ্রেণির চারু ও কারু কলার পরীক্ষা স্থগিত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

বিজয় দিবসে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ প্রকাশের ফলে সাথে সাথে পরীক্ষা স্থগিত করা হলেও নবম শ্রেণির চিত্রাঙ্কন ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, যদিও বিজয় দিবসে কোনো পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম নেই, তবে আমরা ১৫ মিনিটের জন্য নবম শ্রেণির ব্যবহারিক পরীক্ষা নিয়েছি।

ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী বলেন, আমরা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বাড়ি থেকে এসেছি। কিন্তু হঠাৎ করে স্যার বলছেন আজ পরীক্ষা হবে না। বিজয় দিবস তাই বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা কোনো পরীক্ষা নেইনি। তবে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা হয়েছে। এরপর বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

অন্যদিকে নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, তারা ব্যবহারিক পরীক্ষা দিয়েছেন। বিজয় দিবসে প্রতিযোগিতার জন্য তারা কোন চিত্রাঙ্কন করেননি।

এর আগে সকালে সরেজমিনে স্কুল পরিদর্শনে গেলে শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক রিয়াজ উদ্দীন বাবর ওরফে বাদল স্যারের নির্দেশে বন্ধের দিনেও পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।

ছাত্র-ছাত্রীরা তখন জানান, ”আজ জাতীয়ভাবে বন্ধ। সারাদেশে বিজয় দিবস পালন করা হচ্ছে। যুদ্ধে শহীদদের সম্মান জানানোর দিন। কিন্তু আমরা স্যারের নির্দেশে পরীক্ষা দিচ্ছি। স্যার বলেছেন, দুপুরের পর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান হবে। তাছাড়া ৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে। যারা চলে গেছে তাদের স্মরণ করে লাভ কি। রাজনৈতিক এবং সরকারের আদেশ মানতে নামে মাত্র একটা অনুষ্ঠান করবো বাদ জোহরের নামাজের পর।”

১১নং ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ আদিল জজ মিয়া বলেন, বিজয়ের দিন সারা দেশে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। এ দিনে কোন পরীক্ষা আছে কি না আমার জানা নেই।

এ প্রসঙ্গে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম রাব্বানী ধানু জানান, পরীক্ষার বিষয়টি আমি জানি না। আজ বিজয় দিবস। তারা কীভাবে পরীক্ষা নিচ্ছে বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।