১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।মঙ্গলবার

তিন দিবসকে সামেনে রেখে ৭০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির প্রস্তুত ফুলের রাজধানী গদখালীতে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ সাগর হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে মহাব্যস্ত সময় পার করছে ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালির ফুল চাষিরা। ফুলের ক্ষেত থেকে সময়মত পর্যাপ্ত ফুল পেতে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এ তিন দিবসে ৭০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এ এলাকার ফুলচাষিরা দিন রাত ফুল ও ফুলগাছের পরিচর্যা করছেন। যা আগে বছরে লক্ষ মাত্রা ছিল ৩৫ কেটি টাকা। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে গদখালির চাষিরা বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ফুল বাজারে সরবরাহ করতে শুরু করেছে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পয়লা বসন্ত, পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ দু’টি দিবসে প্রিয়জনের মন রাঙাতে মুখিয়ে আছেন দেশের তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী মানুষ। প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে ফুলই শ্রেষ্ঠ। মানুষের মনের খোরাক মেটাতে গদখালীতে চাষিরা এখন দিনরাত পরিশ্রম করছেন। ফুল দেরিতে ফোটাতে গোলাপের কুঁড়িতে পরিয়ে রাখছেন ‘ক্যাপ’। ফলে বসন্ত দিবস, ভালোবাসা দিবস আর ২১ ফেব্রুয়ারিতে ফুল বাজারে দেওয়া নিশ্চিত হবে। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গোলাপ, গাঁধা, রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাসসহ নানা রঙের ফুল। চোখ ধাঁধানো এই সৌন্দর্য কেবল মানুসের হৃদয়ে অনাবিল প্রশান্তিই আনে না, ফুল চাষ সমৃদ্ধিও এনেছে অনেকের জীবনে। ফুলেল স্নিগ্ধতায় এখন ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। তার অন্তত ৭০ শতাংশই যশোরে উৎপাদিত ফুল। তবে এবারের ভালোবাসা দিবসে ফুলের যেমন উৎপাদন বেশি। তেমনি চাহিদা অন্য যেকোনো বারের তুলনায় বেশি। তাই শহর-নগরের ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী ফুলের অর্ডার নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ক্ষুদ্র পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান, সামনে ভ্যালেনটাইনে ডে’তে ফুল বিক্রি বেশি হবে। বাজারে জারবেরা, গোলাপ, রজনীগন্ধা ফুলের চাহিদা বেশি। কৃষকরাও দাম ভালো পাবে। ফুলের রাজধানী গদখালী। কেউ কেউ ফুলের রাজধানী গদখালীকে ফুলের গ্রামও বলে থাকে। যশোর জেলার ঐতিহাসিক গদখালীর বিস্তৃর্ণ এলাকা পানিসারা, হাড়িয়া, পটুয়াপাড়া, টাওড়া, মাটিকোমরা, বাইসা, কাউরিয়াসহ অসংখ্য গ্রামের মাঠ জুড়ে শুধু ফুলের বাগান। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, গ্যানেডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ অসংখ্য দেশী বিদেশি ফুলের সমারোহ। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে ১৯৮২ সালে বাণিজ্যিক ভাবে ফুলের চাষ শুরু হয় । রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আনুমানিক ৫২টি জেলায় সরবরাহ করা হয় গদখালীর এই বিভিন্ন জাতের ফুল। ফুলের রাজধানী, ফুলের রাজ্য বা ফুলের গ্রাম এই গদখালীতে প্রায় ৬ হাজার ফুল চাষী ঝিকরগাছা ও এর আশে পাশের এলাকা জুড়ে ১৫শ থেকে ১৬শ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ করছে। ফুল চাষে বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হওয়ায় আরো অনেক চাষি এ পেশায় ঝুঁকছেন। ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস বলেন, বিদায়ী ২০১৮ সালে শুধু গদখালি থেকে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়। এবছর তা ডবল অতিক্রম করবে বলে আশা করছি। ফুল চাষকে লাভজনক করে তুলতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নানা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, বর্তমান আন্তর্জাতিক মানের ফুল হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে গদখালীতে উৎপাদিত গ্লাডিওলাস, জারবেরা ও রজনীগন্ধা। তিনি বলেন, ভারত, সৌদি আরব, মালায়েশিয়া, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের থেকে বাংলাদেশের গদখালীতে উৎপাদিত ফুল অনেকাংশে উন্নত। ফুল রফতানির জন্য সবথেকে বেশি সমস্যা পরিবহন ব্যবস্থা। বিভিন্ন ট্রাক, বাসের ছাদে ও আলম সাধুতে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ফুল পাঠানোতে অনেক ফুল নষ্ট হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কিছু কিছু সময় লোকসানের মুখে পড়তে হয়। ফুল রফতানি বাড়াতে ভভিষ্যতে পরিবহন ব্যবস্থা সুন্দর হলে আগামীতে ফুল উৎপাদনে আরো সফলতা পাওয়া যাবে এবং তা থেকে প্রতি বছর গদখালীর ফুল চাষীরা হবে লাভবান ও সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।