১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।শনিবার

চাঁদপুরে ভরা মৌসুমেও পদ্মা-মেঘনায় জেলেরা দেখা পাচ্ছে না ইলিশের। 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ রিফাত পাটোয়ারী চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

 

 

 

ইলিশের সংকট প্রভাব ফেলেছে দেশের অন্যতম বড় ইলিশের বাজার চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছ ঘাটেও। ভরা মৌসুমেও জেলেরা দেখা পাচ্ছে না ইলিশের। তবে আগস্টের শুরু থেকে সাগর ও উপকূলের জেলাগুলোতে ইলিশ পাওয়া শুরু করেছে জেলেরা।

 

তাই অচিরেই চাঁদপুরের জেলেরাও পর্যাপ্ত ইলিশ পাবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট চাঁদপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক।

 

১৭ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে বড়স্টেশন মাছ ঘাটে দেখা যায়, ক্রেতা বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। তবে চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনার ইলিশের আমদানি অনেক কম। নামার ইলিশ (হাতিয়া-সন্দ্বীপ) এর ইলিশে ভরপুর চাঁদপুর মাছঘাট। তবে ইলিশের শহর চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার কাঙ্ক্ষিত ইলিশ নেই ঘাটে। মাছ ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা লগ্নি করে এখন ফতুর হওয়ার পথে।

 

বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে ৫ থেকে ৬ হাজার মণ ইলিশ আহরণ করলেও, বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র ৫শ’ থকে ৬শ’ মণে। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় ইলিশের দাম বেশ চড়া।

 

বর্তমানে ১ থেকে ১ কেজি ৪শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকায়। গত বছর যা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে। ৭শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম কেজি প্রতি ১হাজার টাকায় বিক্রি হলেও গত বছর সাড়ে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকায় ও ৪শ’ থেকে ৬শ’ গ্রাম ওজনের মাছ কেজি প্রতি ৭শ’ থেকে সাড়ে ৭শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কেজি দরে।

 

বর্তমানে নামার ইলিশ ১ কেজির উপরের ওজনের ৯ শ’ থেকে ১১ শ’ টাকা, ৭শ থেকে ৯শ গ্রাম ওজনের ৭ শ থেকে ৯শ টাকা ও ৪শ’ থেকে ৬শ’ গ্রাম ওজনের মাছ কেজি প্রতি ৫শ থেকে সাড়ে ৬শ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। তবে নামার ইলিশ দামে একটু কম হওয়ায় চাঁদপুরের ইলিশ মনে করেই নিয়ে যাচ্ছেন।

 

জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সফল না হওয়া, নদী দূষণ, নাব্যতা সংকট, অপরিকল্পিত ড্রেজিং, নদীর তলদেশে থাকা ডুবো চর ও ইলিশের গতি পথ বদলের কারণে স্থানীয় পদ্মা-মেঘনায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।

 

চাঁদপুর জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার জানান, কয়েক বছর আগেও পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেরা প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পেত। কিন্তু দিন দিন এ চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। আগের মৌসুমে স্থানীয় নদীতে জেলেরা প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১২শ’ মণ ইলিশ আহরণ করলেও বর্তমানে ২০-৩০ মণও হয় না। নদীতে ইলিশ না পাওয়ায় জেলেদের অনেক কষ্টে দিন কাটছে।

 

তিনি আরো জানান, সাগর ও মোহনা অঞ্চলের ৫ থেকে ৬শ’ মণ মাছ এখন ঘাটে আসছে। এগুলোই ঢাকা, সিলেট, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, নাটোর, উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে।

 

চাঁদপুর জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবে বরাত বলেন, মূলত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু এ বছর আগস্ট মাসের অর্ধেক সময় শেষ হয়ে গেলেও বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়েনি। ফলে বাজারে ইলিশের দামও বেশি।

 

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট চাঁদপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড.আনিছুর রহমান জানান, পদ্মা-মেঘনা পানি দূষণের পাশাপাশি নদীতে ছোট-বড় অসংখ্য ডুবো চর থাকায় ইলিশ চলাচলের পথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও ইলিশ নদীতে কম আসছে। এখন নামার যে ইলিশ আসছে তাতে বোঝা যায় সরকারি বিভিন্ন অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের ভরা মৌসুম। ইলশাগুঁড়ি বৃষ্টি, নদীর পানি ঘোলা ও স্রোত বৃদ্ধি পেলেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ স্থানীয় জেলেদের জালে ধরা পড়বে।

 

তিনি আরো জানান, গত বছর দেশে ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরিত হয়েছে। এ বছর সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছি।

 

তবে আগস্টের শুরু থেকে সাগর ও উপকূলের জেলাগুলোতে ইলিশ পাওয়া শুরু করেছে জেলেরা। অচিরেই চাঁদপুরের জেলেরাও পর্যাপ্ত ইলিশ পাবেন।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।