অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও মিথ্যা তথ্য প্রচার রোধে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য ‘‘আসল চিনি’’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চালু করেছে সরকার। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি (ডিএসএ) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) এলআইসিটি প্রকল্প যৌথভাবে তিন মাসব্যাপী এ ক্যাম্পেইনে দেশের প্রায় ৭০ লাখ মানুষকে সচেতন করবে।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিসিসি মিলনয়াতন ও অনলাইনে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এ সময় তিনি বলেন, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য এবং গুজবের ভিড়ে অনেক সময় আসল-নকল চেনা দায়। এ কারণে দেশে সামাজিক শান্তি বিনষ্ট ও সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। এমনকি প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটেছে। অথচ সামান্য বিবেক-বুদ্ধি খাটিয়েই কোনটি সত্য, কোনটি মিথ্যা এবং কোনটি গুজব তা আমরা সহজেই চিনতে পারি। এ ধরনের গুজব রটানো ও অপপ্রচার বন্ধে আজ থেকে শুরু হচ্ছে আইসিটি বিভাগের আসল চিনি ক্যাম্পেইন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ‘‘বিল্ডিং ডিজিটাল লিটারেট ন্যাশন’’ শীর্ষক একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, ‘‘দেশে সাক্ষরতার হার ৭৪.৭%-এ উন্নীত হলেও ডিজিটাল লিটারেসির অভাব রয়েছে। ডিজিটাল লিটারেসি ছাড়া মিথ্যা তথ্য প্রচার ও গুজব রোধ করা যাবে না।’’
তিনি সাড়ে চার কোটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী যাদের ৯০% যুবক তাদের মিথ্যা তথ্য প্রচার ও গুজব রোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ক্যাম্পেইন উপলক্ষে ‘‘দুর্বার’’ (www.durbar21.org) শীর্ষক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এ প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নিবন্ধনের মাধ্যমে সারাদেশে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার আওতাধীন ওয়ার্ড, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে দুজন করে অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দেওয়া হবে যারা গুজবের ভয়াবহতা এবং কীভাবে সত্য-মিথ্যা ও গুজব চেনা যায় সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করবে। যারা এই প্লাটফর্মের কনটেন্ট পড়তে চান তারাও দুর্বার- এ নিবন্ধন করে পড়তে পারবেন।
গুজব ও মিথ্যা তথ্যের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, দেশের তরুণ সমাজই পারে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করেই আসল চিনি ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে যাতে দেশের তরুণ সমাজ তাদের মেধা, বুদ্ধি খাটিয়ে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটনা ও মিথ্যা প্রচার বন্ধ করতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী গুজবের শিকার হয়ে ২০১৯ সালে নিহত তসলিমা বেগম রেনুর দুই মেয়ে তুবা ও মাহিরকে দুটি ল্যাপটপ উপহার দেন। পরে তিনি ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
ডিএসএ মহাপরিচালক ও এলআইসিটি প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, এলআইসিটি প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার সামি আহমেদ, ইউনিসেফের কমিউনিকেশন ম্যানেজার শাকিল ফয়জুল্লাহ, উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফ হাসান অপু ও গুজবের শিকার হয়ে মারা যাওয়া তসলিমা বেগম রেনুর মামা নাসির উদ্দিন টিটো বক্তব্য দেন।
Leave a Reply