১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

অগ্নিপরীক্ষার মুখে অভিনন্দন বর্তমান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আন্তর্জাতিক ডেক্স:৫৮ ঘণ্টা পর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান দেশে ফিরলেন। কিন্তু এবার কী? পাকিস্তানে বন্দি ভারতীয় পাইলট মুক্তি পেয়েছেন। অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সসম্মানে ফিরে এসেছেন স্বদেশে। তাঁকে ঘিরে গোটা দেশে রীতিমতো উৎসবের আবহ। কিন্তু মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তনের পর তাঁর জন্য ঠিক কী পরিস্থিতি অপেক্ষা করে রয়েছে? পাকিস্তান থেকে ভারতে পা রাখার পরই কি সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দন বর্তমান? ফিরতে পারবেন তাঁর খুব চেনা সেই ছকে বাঁধা সেনানী-জীবনে? উত্তর ‘না’। আরও স্পষ্ট করে বললে, এখনই ‘না’।

পাক সেনার হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে সবেমাত্র দেশে ফিরেছেন অভিনন্দন। নিয়ম অনুযায়ী তাই, আগামী কিছু দিন দফায় দফায় জেরার মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাঁকে। হবে বেশ কিছু ধরনের জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও। সব মিলিয়ে যাকে অগ্নিপরীক্ষাও বলা যায়! কিন্তু সেগুলো ঠিক কী? বায়ুসেনা আধিকারিকদের ইঙ্গিত-প্রথমত, ওয়াঘা সীমান্ত থেকেই সরাসরি বাড়িমুখো হতে পারবেন না অভিনন্দন। উলটে সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে বায়ুসেনার গোয়েন্দাদের কাছে।
দ্বিতীয়ত, অভিনন্দনের ডাক্তারি পরীক্ষা হবে। তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ কি না, দেখা হবে তা-ও।

তৃতীয়ত, বন্দিদের শরীরে অনেক সময় ‘মাইক্রোচিপ’ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে এক মুলুকের গোপন তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে বিরোধী পক্ষ। এই ধরনের কোনও চিপ অভিনন্দনের শরীরে বসানো হয়েছে কি না, ‘বডিস্ক্যান’ করে দেখা হবে তা।

চতুর্থত, এর পর এই বীর পাইলটকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে মনোবিদের কাছে। পাকিস্তানের সেনার হাতে বন্দি থাকাকালীন, তাঁর উপর কোনওরকম অত্যাচার করা হয়েছে কি না, বা সেখানে তাঁর কী কী অভিজ্ঞতা হয়েছে-সব রকম তথ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানার চেষ্টা করা হবে।

পঞ্চমত, অভিনন্দনকে বিশদ জেরা করতে ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর আধিকারিকদের ডেকে আনা হতে পারে। তবে আপাতত এটি সম্ভাবনার স্তরেই থাকছে। কারণ, সচরাচর আইবি এবং র’এর হাতে বায়ুসেনার পাইলটদের তদন্তভার ন্যস্ত করা হয় না।

ষষ্ঠত, আকাশসীমা পেরিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে অবতরণ করার পর থেকে যতটুকু সময় এই ভারতীয় পাইলট সেখানে কাটিয়েছেন, তার প্রতি মুহূর্তের বর্ণনা তাঁকে দিতে হবে গোয়েন্দাদের। বন্দি থাকা অবস্থায় পাক সেনা অফিসাররা তাঁর কাছে কী কী জানতে চেয়েছেন, বলতে হবে তা-ও।

সপ্তমত, বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অভিনন্দন যা যা করেছেন, গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবেন গোয়েন্দারা।
অষ্টমত, যে মিগ বিমানে তিনি ছিলেন, তাকে নিশানা করতে পাক সেনা কী অস্ত্র ব্যবহার করেছিল, চেষ্টা করা হবে তা জানারও। অভিনন্দন পাক সেনার হেফাজতে থাকাকালীন কী কী জরুরি নথি নষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিলেন আর কী কী পারেননি, তারও তালিকা তৈরি করা হবে। এতেই শেষ নয়। আইএএফের এই নির্ভীক পাইলটকে যেতে হবে গোয়েন্দাদের ‘ডিব্রিফিং’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েও। এর অর্থ, যেহেতু অভিনন্দন বন্দি ছিলেন প্রতিবেশী দেশের সেনাবাহিনীর হাতে, তাই তাঁকে সেখানে আপস করার কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কি না কিংবা তাঁকে ব্যবহার করে কোনও চক্রান্ত করা হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে গোয়েন্দারা সবরকম প্রচেষ্টা চালাবেন। একেই ‘ডিব্রিফিং’ বলে।

কিন্তু যদি অভিনন্দন এই সব পরীক্ষায় সফল না হন? যদি গোয়েন্দাদের জেরা এবং ডাক্তারি পরীক্ষায় নিজেকে মানসিক তথা শারীরিকভাবে ‘ফিট’ প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে সম্ভবত আর কখনওই যুদ্ধবিমানে সওয়ার হতে পারবেন না এই বীর পাইলট। বিকল্প পথে হেঁটে তখন অভিনন্দনকে ‘ডেস্ক’-এর কাজে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁকে অসম্মান করা হবে না। করা হবে না কোনও রকম বৈষম্যমূলক আচরণও।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।