১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।সোমবার

ভাঙছে নদী, বিলীন হচ্ছে জনপদ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সম্পাদকীয় ॥

চোখের সামনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি। বাজার, স্কুল, হাসপাতাল, পাকা সড়ক গিলে খাচ্ছে নদী। মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে। দুই দিন আগের সম্পন্ন গৃহস্থ হঠাৎ করেই বাস্তুহারা। শরীয়তপুরের নড়িয়া, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, রংপুরের কাউনিয়া, টাঙ্গাইলের ফতেপুর, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন আজ নদীভাঙনে বিপর্যস্ত। কুষ্টিয়ায় ২০০ কোটি টাকার বাঁধে ধস দেখা দেওয়ায় হুমকির মুখে শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িসহ দুটি ইউনিয়ন।

তথ্য সুত্রে জনা যায়, গত দেড় মাসে পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় অন্তত সাড়ে তিন হাজার পরিবার বাড়িঘর ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। মাত্র দুই দিনেই বিলীন হয়েছে মূলফৎগঞ্জ বাজারের তিন শতাধিক দোকানপাট; ঝুঁকিতে পড়েছে আরো ৯ শতাধিক। নড়িয়ার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে এই আশঙ্কায় মালপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ লাইন সরিয়ে নেওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে বাজার ও হাসপাতালসহ আশপাশের বিদ্যুৎসংযোগ।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য মতে, সাড়ে তিন হাজার পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হওয়ার তথ্য লিপিবদ্ধ হয়েছে। এর বাইরে আরো কয়েকটি এলাকা নদীতে বিলীন হওয়ার তথ্য রয়েছে। ওই এলাকায় পদ্মাতীরের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে। অন্যদিকে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়ন। গত তিন-চার দিনের অব্যাহত ভাঙনে এ ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি এখন নদীতে। জমি ও বসতভিটা হারিয়ে পদ্মাপারের শত শত পরিবার এখন নিঃস্ব। ফসলসহ জমি নদীতে বিলীন হওয়ায় কৃষকরা দিশাহারা। কয়েক দিনে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

বিভিন্ন সুত্রে প্রকাশ, পদ্মা সরতে সরতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার দিকে এগোতে থাকায় কয়েক বছর ধরে এলাকাবাসী সরকারের কাছে আবেদন-নিবেদনসহ মিছিল-বিক্ষোভ করে আসছিল। অবশেষে এ বছরের জানুয়ারিতে হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাসও হয়। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই এলাকাবাসীকে এই দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হলো।

নদী আগ্রাসী হলে জনপদ বিপর্যস্ত হবেই। নদী রক্ষণাবেক্ষণে দূরদর্শী পদক্ষেপ না নিলে এমন অবস্থা চলতেই থাকবে। আমাদের নদীগুলোতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং দরকার; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই। নদীশাসনের ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পাশাপাশি এখন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নদীভাঙনে সর্বস্বান্ত মানুষের পুনর্বাসনে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করবে না।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।