[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

সিলেটে টাকার বিনিময়ে টিকার সনদ!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 

এম এ রশীদ সিলেট থেকেঃঃ

 

সিলেটে করোনা টিকার সনদ (সার্টিফিকেট) নিয়ে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। টিকা না নিয়েই টিকার সনদ বিক্রির ঘটনায় রাহাত হোসেন নামের সিলেট সিটি কর্পোরেশনের(সিসিক) এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তবে গ্রেপ্তার রাহাতের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি সিসিক। পরে তাকে এসএমপি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলা হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। যদিও পরে রাহাত জামিনে মুক্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় রাহাত হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সিসিক।

সিসিক সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই টাকা দিয়ে টিকা না নিয়েই সনদ প্রাপ্তির অভিযোগ আসছিল সিলেট সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। এক্ষেত্রে প্রবাসীদের টার্গেট করা হচ্ছিল বেশি। একেকটি সনদের জন্য তিন-চার হাজার টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

এ সব অভিযোগের পর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা নড়ে চড়ে বসেন। তারা জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করছিলেন। সম্প্রতি এমন ঘটনার সঙ্গে রাহাত হোসেনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য পান তারা। রাহাতের সঙ্গে সিসিকের বাইরের আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার বিষয়েও তথ্য আসে সিসিক কর্মকর্তাদের কাছে। এদিকে এ সব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২ অক্টোবর রাহাত হোসেনকে পুলিশে দেয় সিসিক।

গ্রেপ্তার রাহাত হোসেন মাস্টার রোলে নিয়োগের মাধ্যমে সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করছিলেন। চলতি বছরে সিসিকে তার চাকরি হয়। তার কাছে টিকার সার্ভারের আইডি ও পাসওয়ার্ডও ছিল। এদিকে করোনা টিকার সনদ বিক্রির অভিযোগে রাহাত হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ।

তবে মহানগর পুলিশ সূত্রে জানিয়েছে, আটকের পর রাহাতের ভিত্তিতে লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি সিসিক। পরে তাকে এসএমপি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলা হাজতে প্রেরণ করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। তবে গ্রেপ্তারের দুই দিনের মাথায় রাহাত জামিনে মুক্ত হয়ে যায় বলে জানিয়েছে সিসিক ও পুলিশের একটি সূত্র।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা টিকার সনদ বিক্রি নিয়ে রাহাতের কিছু ভয়েস রেকর্ড আমরা পাই। যেখানে টাকা-পয়সার লেনদের কথাবার্তা ছিল। তবে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছে। পরে আমরা তাকে পুলিশে দেই।’

লিখিত অভিযোগ দিলেন না কেন জানতে চাইলে সিসিকের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাছে যে অভিযোগগুলো এসেছে তার শতভাগ প্রমাণ আমাদের কাছে ছিল না। যার কারণে আমরা লিখিত অভিযোগ দেইনি। তবে মেয়র পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে তদন্তের অনুরোধ করেছেন। এছাড়া আমাদের কাছেও যদি কোনো প্রমাণ চলে আসে তখন আমরাও লিখিত অভিযোগ দিব।’

তিনি আরও বলেন, ‘টিকা নিয়ে কোনো বাণিজ্য সিসিকে হবে না। এ বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে চলছি। রাহাতের সঙ্গে সিসিকের আরও কেউ জড়িত আছে কি না এ বিষয়েও আমাদের কাজ চলছে। এছাড়া পুলিশ যদি কোনো তথ্য পায় সেক্ষেত্রে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নিব।’

আর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের বলেন, ‘চলতি মাসের ২ তারিখে করোনা টিকার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে সিসিক একজনকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার পর সিসিক কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। পরে তাকে এসএমপি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়।’

এর আগে গত আগস্টে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের করোনাভাইরাসের টিকার সার্ভার হ্যাক করে শতাধিক মানুষকে মডার্নার প্রথম ডোজ টিকা নিতে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ (বার্তা) পাঠানো হয়। এমন ম্যাসেজে বিড়ম্বনায় পড়েন টিকা প্রত্যাশী শতাধিক মানুষ। এ ঘটনায় সিসিকের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *