৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।মঙ্গলবার

লালমনিরহাটে কান্না থামছে না তিস্তা পাড়ের মানুষের!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ মাসুদ রানা রাশেদঃ

 

সময় যেয়ে অসময়ে হঠাৎ বন্যায় লালমনিরহাট জেলার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ায় খাদ্য সংকটের শঙ্কায় কৃষক পরিবারগুলো। দুই দিনে বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২০ অক্টোবর) দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপে ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেশকিছু স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ছিড়ে গেছে। কাঁচা-পাকা সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে তিস্তাপাড়ে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বন্যার পানির চাপে কালীগঞ্জের কাকিনা- রংপুর সড়ক ধসে গিয়ে গংগাচওড়া শেখ হাসিনা সেতু পার হয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মহিষখোচা অংশে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। ভেসে গেছে বেশকিছু বাড়ি ঘর, হাজার হাজার পুকুরের মাছ। বুধবার বন্যা সৃষ্টি হলেও পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা পরে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার অনেক নিচে নেমে আসে পানি। কম সময় স্থায়ী হলেও অসময়ে হঠাৎ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষিতে। হাজার হাজার হেক্টর জমির উঠতি ফসল বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে বন্যার ক্ষত ভেসে ওঠে বন্যা কবলিত এলাকায়। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৮৪ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও বাম্পার হয়েছিল। দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে আমন ধান ঘরে তোলা শুরু হতো। এরই মধ্যে বন্যায় ডুবে গেছে ২ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষেত। এছাড়াও ভুট্টা ১৯২ হেক্টর, চিনা বাদাম ৫২ হেক্টর, সদ্য রোপণ করা আলু ৬৪ হেক্টর, মাশকালাই ৫ হেক্টর, মরিচ ৫ হেক্টর, পিঁয়াজ ১৬ হেক্টর ও ৯১ হেক্টর বিভিন্ন জাতের সবজি ক্ষেত বন্যায় ডুবে নষ্ট হয়েছে। সবমিলে গত বন্যায় ৩ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমির ফসল ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। গোবর্ধ্বন চরের চাষি শাহ আলম বলেন, প্রায় লাখ টাকা খরচ করে ৭ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চারা রোপণ করেছিলাম। চারাগুলো বেশ ভালোই হয়েছিল। এরই মধ্যে হঠাৎ বন্যা এসে সব ডুবে পচে নষ্ট হয়েছে। বালুতে চাপা পড়েছে তার স্বপ্ন। মহিষখোচা রজবপাড়া গ্রামের চাষি আশরাফুল আলম বলেন, মাত্র ৫-৭ দিন পরে ২ বিঘা জমির আমন ধান ঘরে তোলা যেত। বন্যা এসে নষ্ট হলো কষ্টে চাষ করা আমন ধান। খরচ তোলা তো দূরের কথা ঋণের টাকা পরিশোধ আর পরিবারের খাদ্য যোগান নিয়ে পড়েছি চরম দুশচিন্তায়। একই গ্রামের আজিজ মিয়া বলেন, ৪ বিঘা জমির আমন ধান কেটে রোদে শুকাতে দিয়েছি। দুই দিন পরে বেঁধে বাড়িতে নেওয়ার কথা। এমন সময় বন্যায় সব ভেসে গেছে। স্বপ্নেও ভাবিনি এমন সময় এতো বড় বন্যা হবে। এখন খাবো কি? সেই চিন্তায় ঘুম আসে না।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, গত বন্যায় ৩ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ডুবে নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মধ্যে ১২ শতাংশে আংশিক ফসল আসতে পারে। সেক্ষেত্রে চাষিদের জমি থেকে কচুরী পানা ও আবর্জনা সড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। সরকারিভাবে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।