মো নাহিদ হাসান ,নিজস্ব প্রতিবেদন।
সন্ধ্যায় লিখতে বসলাম, লিখতে গেলে কতকিছুই না মনে পরে, লিখতে তো কত কিছুই না ইচ্ছে করে কিন্তু সবকিছুই কি আর লেখা যায়! জীবন এমনি এক বৈচিত্রময় গল্প যেখানে কখনো ছন্দের মিল থাকে আবার কখনো থাকে না। যা লিখতে চাইলে কলমের কালি শেষ হয়ে যাবে তবুও জীবনের গল্পটা লিখে শেষ করা হবে না, সে তো ফুরিয়ে যাবারও নয়।
সময় ছুটে চলে আপন গতিতে। ঝর্ণা যেমন চলার পথে কোথাও বাঁধা পেয়ে তৈরী করে সরোবর আবার কোথাও গহীন অরণ্যে সৃষ্টি করে গভীর ক্ষাদ। তেমনি মানুষও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলার পথে জেনে না জেনে, বুঝে না বুঝে তৈরী করে কত না গৌরবময় সৃষ্টি আবার কখনো কখনো কুৎসিত কদাকার বীভৎস রূপ।
মানুষের জীবন বিভিন্ন অধ্যায়ে বিভক্ত। কোন অধ্যায় হয় সুখকর আবার কোনো কোনো অধ্যায় হতে পারে অসহনীয় নিরবধি দুঃখে রচিত। রচিত বলার কারণ, নিয়তিতে আমাদের হাত নেই (হয়তো বা আছে আমি নিশ্চিত নই)। কোনো অধ্যায় আবার এই দুই সুখ-দুঃখের অনুভূতির সংমিশ্রণে অনেক সময় ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। একজন মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো অন্যদের জন্য আনন্দ অথবা দুঃখের দৃশ্য বয়ে নিয়ে আসে। অন্যের দুঃখে আমরা দুঃখিত হই আবার অন্যের আনন্দে আমরা আনন্দিতও হই।
জীবনে সবকিছুই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, গান, কবিতা, স্মৃতি সবই। জীবন কখনো সুখের কখনো দুঃখের হতেই পারে তাই বলে থেমে থাকা! না! কখনোই না।
একমাত্র মানুষ নামক প্রাণীই অন্যের সুখ দুঃখ ভাগ বণ্টন করতে পারে। আর কোনো প্রাণী করতে পারে না। অনেক সময় জীবনের ঘটে যাওয়া দৃশ্যগুলো চোখের সামনে বাস্তবের মতো ভেসে ওঠে। আমরা শিহরিত হই অন্যজনের অভিজ্ঞতা শুনে। আবার কখনো এ রকম মনে হয় যে, বক্তা যত তাড়াতাড়ি গল্প বলা শেষ করবেন ততই ভালো; যেন হাফ ছেড়ে বাঁচি। জীবনের গল্পগুলো যেমন হয় রোমাঞ্চকর, তেমনি হয় রোমহর্ষক।
কিছু ভালবাসা, কিছু স্মৃতি আর কিছু কষ্ট যা মানুষের সবসময় মনে থাকবে। ভালবাসা এমন একটা অনুভূতি যেটা কারো সাথে সারাজীবন থেকেও আসে না। আবার কারো সাথে হয়তো কিছু মুহুর্তই যথেষ্ট যা কখনো জোর করে হয় না।
কিন্তু সবছেয়ে বড় কথা হল ‘সম্মান’ যেটা সবকিছুতেই আবশ্যক। জীবনের কিছু ঘটনা থাকে যা শেয়ার করলে অনেকেই শুনে কিন্তুু নিজের মত করে বুঝতে চায় না। মানুষের জীবনে অনুশোচনা করার মত অনেক ঘটনাই থাকে যা নিজেকে তিলে তিলে পুড়িয়ে মারে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর উল্টোটাও ঘটতে পারে অনুশোচনার দহনে পুড়ে খাটি সোনা হয়ে উঠতে পারে। আসলে সবটুকুই নির্ভর করে ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গির উপর। “আমি মনে করি একটি ব্যাক্তি ভুল করলে তার প্রতি সমাজের রূঢ় আঙুল না উঠিয়ে ভুলটা শুধরে দেয়া যদি তাও সম্ভব না হয় অন্তত ভুলটা ধরিয়ে দেয়া কিংবা তাকে অনুশচনার সুযোগ দেয়া।” যে অপমান সইতে পারে সেই তো জীবনের বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে বহুদূর যেতে পারে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না জীবনে কেউ কখনো হারে না, হয় তো জিতে নয় তো শিখে।
অতীত কোন ঘটনা অনুশোচনাকে কেন্দ্র করে জীবনকে থামিয়ে দেয়া কোন বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কেননা অতীতকে যে পরিবর্তন করা যায় না তা ধ্রুব সত্য। তাই অতীতকে অনুশোচনার মাধ্যমে বর্তমানকে শুধরে ভবিষ্যৎ কে আলোকময় করার চেষ্টা করা উচিৎ। জীবনে নিজের নেয়া কোন সিদ্ধান্তকেই ছোট করে দেখা ঠিক না, কেননা আপনার জীবন আপনার দুনিয়া। অন্যের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার চেয়ে নিজের সিদ্ধান্তে বার বার হোছট খাওয়াটা অনেক ভালো। নিজের পৃথিবী, নিজের ইচ্ছা, নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখে চলতে হবে তবেই একজন মানুষ সফল হবে। সামনে অবারিত সম্ভাবনার হাতছানি, এইতো সময় এগিয়ে যাওয়ার সুন্দর-সুখী জীবনের পানে।
-লেখক,
সাকিব জাহান (মিশু)
শিক্ষার্থী, লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।
বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
Leave a Reply