নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ
খুলনার কয়রায় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের নিয়ে ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটি (সিপিপির)মিটিং করার সময় সিপিপি খুলনার উপ-পরিচালক জনতার হাতে অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় মুচলেকার মাধ্যমে তাকে ঐ স্থান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। তবে স্থানীয়দের দাবী সিপিপির আড়ালে আওয়ামীলীগকে পূণর্বাসনের অভিযোগে উপ-পরিচালকে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয় জনগন।
জানা গেছে, সিপিপির খুলনার উপ-পরিচালক গোলাম কিবরিয়া উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে ছুটির দিন ২৯ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১০ টায় সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের হল রুমে কয়রা ইউনিয়নের সিপিপির সভার আয়োজন করে।ঐ সভায় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা উপস্থিত হন। বিষয়টি জানাজানি হলে ঐ কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামীলীগের আমলে করা ঐ কমিটিতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা যুক্ত আছে এবং অনেকেই এলাকার বাইরে থাকায় স্থানীয় জনগন বিষয়টি পুণর্গঠন করার জন্য বার বার উপ-পরিচালককে বলে আসছে। কিন্তু সে বিষয়ে তিনি কর্নপাত না করে আবারও গোপনে সভার আয়োজন করে। কিন্তু স্থানীয় জনতা সেটা জানতে পেরে উপ পরিচালককে সভা চলাকালে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ঘটনা স্থলে হাজির হয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা ও সাংবাদিকদের উপস্থিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে সেখানে তিনি তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং লিখিত মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান। এছাড়াও সিপিপির কমিটি পূণর্গঠন না করা পর্যন্ত সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উপস্থিত অনেকেই অভিযোগ করেছে, উপপরিচালক গোলাম কিবরিয়া এর আগে কোন সভা না করেও ৩ টি সভা দেখিয়ে ৩ লাখ টাকা উঠিয়ে আত্মসাত করেছেন। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী সরকারের আমলে একতরফা ভাবে কয়রায় সিপিপির কমিটি গঠন করা হয়। দির্ঘদিন কমিটি পুণর্গঠন না করে সম্প্রতি ঐ কমিটির অনুকূলে সেফটি সামগ্রী, বাই সাইকেল সহ অনন্য সামগ্রী বিতরণ করায় কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। সেই থেকে এই বিষয়টি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এই অবস্থায় কাউকে কিছু না জানিয়ে অনেকটা চুপিসারে উপ-পরিচালক খামখেয়ালীপনা ভাবে ছুটির দিনে অতিগোপনে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে সভা করায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল বাকী জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে না জানিয়ে ছুটির দিনে তিনি তার ইচ্ছা মাফিক সভা করা অবস্থায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও জনগন তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে থানা অফিসার ইনচার্জসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। সিপিপির খুলনার উপ-পরিচালক গোলাম কিবরিয়ার সাথে কথা হলে তিনি তার ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে কোন সভা না করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎের বিষয়টির ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাইনি। সিপিপির পরিচালক (প্রশাসন) নাজমুল আবেদীন বলেন, কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এঘটনায় তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কয়রা, খুলনা প্রতিনিধি
Leave a Reply