করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শাটডাউন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া চলমান কঠোর বিধিনিষেধ বুধবার থেকে ধাপে ধাপে শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘গত দিন সভায় যেটি আলোচনা হয়েছে, সেখানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী সভাপতিত্ব করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত ছিল ১০ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা। ১১ তারিখ থেকে ধাপে ধাপে শিথিল করার সিদ্ধান্ত। যদিও শনাক্তের হার কমছে, কিন্তু মৃত্যুর হার দুই শর ওপরে আছে।
‘সে বিষয় অবশ্যই আমাদের নজর রাখতে হচ্ছে। আগামীতে কী পর্যায়ে শিথিল করব, সেটি নিয়ে আজকে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পাব। সেটি আজ বা কাল জানাতে পারব।’
বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে দীর্ঘদিন পর ঘুরবে গাড়ির চাকা, খুলবে দোকানপাট, অফিস-আদালত।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আজকে (রোববার) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর আজ বা কাল সকালে হয়তো প্রজ্ঞাপন দিতে পারব। কতটুকু শিথিল তা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর জানতে পারব।
‘আমাদের পরামর্শ ধাপে ধাপে। কোনটি কখন খোলা হবে কতটুকু পরিসরে খোলা হবে, সেটি দেখতে হবে, তবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি যাতে প্রতিপালন হয়, সেদিকে কঠোর ব্যবস্থা থাকবে।’
স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু দোকানপাট খুলতে হবে, সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেদিকে আমাদের জোর থাকবে। গতকাল থেকে গণটিকা চালু করেছি। এটি ১২ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে। আমরা চাইব সবাই যেন মাস্ক পরে।
‘আমরা টিকা কার্যক্রমের মধ্যে যারা দোকানদার, যাদের বাইরে যেতে হয়, ইমাম, মুয়াজ্জিন, ড্রাইভার, হেলপারদের প্রায়োরিটি দিয়েছি। যাদের বাইরে আসতে হয়, মানুষের সাথে মিশতে হয়, তাদের প্রায়োরিটি দিচ্ছি। ধাপে ধাপে আস্তে আস্তে সীমিত পরিসরে শিথিল করার চিন্তা আছে।’
তিনি বলেন, ‘গণটিকা কার্যক্রমে প্রতি ইউনিয়নে ৬০০ জনকে টিকা দিয়েছি। যারা সবজি ব্যবসায়ী, রিকশাচালকসহ যাদের বাইরে আসতে হয়, বিভিন্ন কারণে যেসব মানুষের সংস্পর্শে আসতে হয়, তাদের বেছে নিয়েছি।
‘সেখানে বয়স্ক ও মুক্তিযোদ্ধা আছে। আমাদের যেহেতু জীবিকাও নিশ্চিত করতে হবে, তাই আমরা বলেছি তারা যাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা নিতে পারেন।’
মাস্ক না পরাকে শাস্তির আওতায় আনতে অধ্যাদেশ জারির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত সভায় এটি আলোচনা হয়েছে। আমরা নিশ্চয়ই এ বিষয়ে আগামীতে কোনো নির্দেশনা পাব। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করে পাড়ামহল্লার করোনা প্রতিরোধ কমিটিগুলোকে আরও কার্যকর করে মানুষ যেন মাস্ক পরে, জনসমাগম এড়িয়ে যায়, সেটি দেখতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন কমিটি এটি নিয়ে কাজ করছে। আগামীতে মাস্ক পরা নিশ্চিতে তারা কাজ করবেন।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরে চলা কঠোর বিধিনিষেধ শেষ হবে ১০ আগস্ট, মঙ্গলবার।
ঈদের আগে থেকেই চলছে এ বিধিনিষেধ। মাঝে ঈদের জন্য ৮ দিন শিথিল করে বিধিনিষেধ শুরু হয় ২৩ জুলাই থেকে। এটি চলার কথা ছিল ৫ আগস্ট পর্যন্ত। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় তা আরও ৫ দিন বাড়ানো হয়।
Leave a Reply