[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

লুৎফুর রহমান রাকিব চৌধুরী।কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি।

 

ঠিকানাবিহীন মানুষ।মানে তাদের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা নেই। নেই জীবিকা অর্জনের জন্য সভ‍্য মানুষের রীতি। তারা যেন নিরন্তর ছুটে চলা এক জীবনের পথিক যাযাবর।

বৈচিত্র্যময়তো যাযাবরদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাদের জীবনযাত্রা নিয়ে সাধারন মানুষের বহুকাল আগে থেকেই প্রচন্ড আগ্রহ রয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে,যাযাবরদের কোনো বাড়ি নেই। তারা তাঁবুতে,পাহাড়ের গতে গাছের কোটের কোনোভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নয়। বৃষ্টির পানি বা রোদে এড়ানোই মুখ‍্য।এসব বাড়িতে সৌন্দর্যের কোনো বালাই নেই। তারা নিজেদের সংস্কৃতি মেনে পোশাক পরে। যেহেতু কাপড় সহ জলভ‍্য নয় তাই তাদের গায়ে পোশাক থাকে কম।

তবে অনেক যাযাবরের মাঝে লম্বা,কোর্তা পরিধীনের প্রচলন রয়েছে। শীতপ্রধান এলাকার পশুর চামড়া। গাছের বাকল দিয়ে পোশাক বানায় তারা। যাযাবরদের ভেতরে ভাষার বৈচিত্র্য যে কাউকে বিস্নিত করবে। সত‍্যিই এক কৌতূহলের জীবন যাযাবরদের।

 

 

ঠিকানাবিহীন মানুষ। 

কল্পনা খন্দকার

 

বন্ধু মহলে আমার বেশ খ্যাতি ছিলো

সবার ভালো বন্ধু হিসেবে,

আমাদের পাড়ায় আমার

নামডাক ছিলো

লক্ষ্মী আর আত্মবিশ্বাসী মেয়ে বলে।

এই চঞ্চল চপলা মেয়েটি সবার মন

জয় করেছিলো তার সততা দিয়ে।

আমার ব্যক্তিত্বও নাকি মানুষের

মন ছুঁয়ে ছিল।

চাঁদনী রাত আমায় ঘর ছাড়া করতো,

আর ভীষণ কালো মেঘলা আকাশ

আমায় কেমন যেন ব্যাকুল করে তুলতো!

বৃষ্টি ভালবাসতাম বলে সবাই বলতো

আমি নাকি বেশ রোমান্টিক,

ঠিক যেমনটা অনেক ছেলের পছন্দ!

আমি ছোটবেলা থেকেই বেশ দূরন্ত

স্থিরতা শান্ত ভাব আমার চরিত্রে নেই।

আমার ডাগর চোখ আর সুন্দর চুল

অনেককেই নাকি মুগ্ধ করেছে।

এতো কিছু ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে

আমার গায়ের কালো রংটা।

গায়ের রংটা কালো বলেই হয়তো

প্রেম ভালবাসা নামক দুর্লভ বস্তুর

সাক্ষাৎ ঘটেনি আজো কপালে।

কেবল মাত্র কালো রঙের জন্য

বিয়ে ভেঙে গেছে অনেক বার।

একদিন কোন এক সামাজিক মাধ্যমে

একজনের সাথে

পরিচয় ঘটে বিয়ের ব্যাপারে,

কথা প্রসঙ্গে জানতে চাইলেন

এতো দিনে বিয়ে করিনি কেন!

বললাম, আমি কালো বলে অনেকবার

বিয়ে ভেঙে গেছে।

উনি আমার ভালোলাগা গুলো

জানতে চাইলেন,

বৃষ্টি, চাঁদ ভালবাসি শুনে বললেন

বেশ রোমান্টিক তো!

জানেন আমি ঠিক আপনারই মতো

রোমান্টিক কাউকে খুঁজছি।

বললাম আমার সবচেয়ে বড় দোষ

আমি কালো,

এর জন্য খানিকটা বয়সও হয়েছে

বিয়ে হয়নি।

উনি বললেন আমি একটু বয়সী

ম্যাচিউর কাউকেই খুঁজছি।

ক’দিন বেশ কথা হলো আমাদের।

বৃষ্টি দেখলে তাকে মিস করি কিনা

আরো কতো কি!

হুট করে একদিন বললেন আমি কি

তোমাকে দেখতে পারি!

আমি একটা শাড়ি পরা সাদামাটা

ছবি পাঠালাম।

আমার ছবি দেখার পর থেকে

ওনার কাজের চাপ বেড়ে গেলো,

আমার সাথে কথা বলার সময়

তার হাতে নেই বললেই চলে।

তারপর একদিন বলেই ফেললো

আমি ছাড়াও তুমি অনেকের সাথে

কথা বলো,

আমি ভালো মেয়ে চাই।

আমি তাকে আগেই বলেছিলাম

আমি রাত জাগতে ভালবাসি,

আমার অনেক বন্ধু আছে কিন্তু

রাত জেগে কারো সাথে কথা বলিনা।

আমার ছবিটা দেখার আগে পর্যন্ত

আমার সবই তার ভালো লেগেছিল।

বুঝলাম এখানেও আমার কালো রংটা

আমার আত্মবিশ্বাস, রোমান্টিকতা,

আমার ম্যাচিউরিটি

সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে!

“গায়ের রঙের গুণাবলি “

লেখকঃ

সুমাইয়া আক্তার শিখা।

 

 

বনভূমি পুড়ে,জীবানুরা উড়ে, ভূ-কম্পন চলে,বরফ গলে,

ওজন স্তর ফেটে-বিপর্যয় হাঁটে, রাসায়নিক বিষক্রিয়ার রসে-ভূ-ত্বক ধ্বসে অথচ মানুষ তখনও হিসাব কষে, হিসাব কষে অস্তিত্বের, হিসাব কষে শ্রেষ্ঠত্বের, হিসাব কষে রুজি’র,পণ্য আর পুঁজির, গড়ে সম্পদের সমাহার,যখন পৃথিবী জুড়ে অনাহার, মানুষ-মানুষকে ভেবে পর,ভেঙ্গে যায় মানুষেরই ঘর, হে বিভক্ত মানুষের দল,বন্ধ করো হলাহল, আত্মঘাতী মানুষের জীবনের দায় স্রষ্টা কিংবা তাঁর পৃথিবীর নয়, এতটুকু যদি হয় বোধদয়,তবে মানুষেরই হবে জয়, মানুষ সুস্হির হোক,

নতুন সন্ধি হোক মানুষ-মানুষের হোক ।

 

সাংবাদিক সুমাইয়া আক্তার শিখা।

মানুষ- মানুষের হোক।

গিয়েছিলাম তোর গাঁয়ে
ইমরান হোসাইন

গিয়েছিলামরে তোদের গাঁয়ে
আউশ ধানের আঁকাবাকা আইল ধরে
ফিরেছিলামরে আবার সেই পথে
যেথায় রাখাল এসেছে গরু-মহিষ চড়াতে ।

মাঠ যেথায় সবুজে ঘেরা
আজ আবার পৌষের দেখা
ভুলেছিস কি তোরা হলুদ ফুলে ভ্রমরের খেলা ?

ফিরতে পারিনিরে তোর গাঁয়ে থেকে
রোদ মেখেছিতো চন্দ্র মুখে
সারি সারি বক উড়ে যায়
সন্ধ্যা নামায় মাঝ রাস্তায় ।
ভুলেছিস কি সূর্য খেলা ?
যাবার বেলায় লাল করে যায় পশ্চিমা আকাশটা ।

যদি কখনো ফিরিস এ রাস্তায়
ভুলিসনে তুই ঘাস ফড়িঙের উড়ে যাওয়া
আবার যদি ফিরিস মাঠে
রোদ ওঠার সেই প্রমোদধ্বনিতে
ভুলিসনেরে ঘাসের ডগায় শিশির গুলোকে ।

দেখিস কি সময় করে মুষলধারে বৃষ্টি পরে
শুনিস কি সেই তেঁতুল পাতার বাঁশির সুর ?
জানিস ? সে দিন গাঁয়ের সেই মস্তবড় পুকুড় পারটাতে গিয়েছিলাম ।
যেথায় হাঁস ডুবে যায় অবিরাম, শামুকের খোঁজে ।

তোর সঙ্গে বাস্তব দেখা আর নাই বা হলো
চল না ? অনুভূতির প্রগাঢ়তায় শৈশবে ফিরে যাই ।

গিয়েছিলাম তোর গাঁয়ে

আতশীর প্রেম

মোঃ রোকনুজ্জামান রাসেল

 

অস্তমিত সূর্যের শেষ আভা

মিশে যায় দিগন্তের অতলে

ঘরে ফেরে সব লোক

ফাঁকা করে রাস্তা ও গলি।

 

ল্যাম্পপোস্টগুলো আলোহীন

দাঁড়িয়ে থাকে অন্ধকারে।

 

শয্যাশায়ী ক্ষুধার্ত স্বামীর জীবন

অভাবী আতশীর প্রেমে

কানায় কানায় পূর্ণ।

তবু সারে নাতো অসুখ

ঘোচেনা অভাব

মেটেনাতো পেটের ক্ষুধা?

 

আবছা আলোয় ঘরের কোণে

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে

চঞ্চল হয়ে ওঠে আতশী।

মাশকরার ছোঁয়ায় মুছে দেয়

দু‘চোখে ক্লান্তির রং।

সস্তা প্রসাধনীর তীব্র সুবাস

ঘামে ভেজা দেহকে লুকোয়।

খুব করে সাজে যতভাবে যায় সাজা

চুড়ি, টিপ, দুল, ফুল, ঠোঁট, গলা, মাজা।

সাঙ্গ হল সাজা।

 

দূরে বাঁশি বাজিয়ে স্টেশন ছাড়ে

নয়টার লোকাল ট্রেন

আকাশে দূরন্ত তারাগুলো ছুটে চলে

উত্তর থেকে দক্ষিণে।

গলির মোড়ে নেড়ি কুকুরগুলো

চিৎকার করতে করতে যায়

দক্ষিণ থেকে উত্তরে।

আতশী বেড়িয়ে পড়ে রাস্তায়

সবার কাছে প্রেম বেঁচতে।

আতশীর প্রেম