[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

শ্যামনগরে সরস্বতি পূজা উপলক্ষে আদিবাসীদের মোরগ লড়াইয়ের আসর।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় সুন্দরবন সংলগ্ন ভেটখালী মুন্ডাপাড়ায় অনুষ্ঠিত হল ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াইয়ের আসর। শত মানুষের ভিড়ে ঠাসা ঐ ময়দানে সকলের চোখের সামনে বাঁধা ধারালো ছুরির আঘাতে একের পর এক মোরগ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আবার অনেক মোরগ অস্ত্রের আঘাতে পালিয়ে যায়। প্রতিটি লড়াইয়ে বেজে ওঠে মুহুর্মুহু করতালি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সরস্বতী পূজা উপলে দিন ব্যাপী ভেটখালী মুন্ডাপাড়ায় মকর-সংক্রান্তি এবং সরস্বতী পূজার দিনে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে মোরগ-লড়াইয়ের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয় আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের কৃষ্ণপদ মুন্ডা জানান, টুসু উৎসবের অংশ হিসেবে পৌষ পার্বণ এবং সরস্বতী পুজো উপলে মোরগ লড়াইয়ের আসর বসে ভেটখালী গ্রামের মুন্ডাপাড়ায়। মোরগের পায়ে ধারাল ছোট ছুরি বেঁধে দেওয়া হয়। একটার উপরে একটা ঝাঁপিয়ে পড়ে বড়সড় চেহারার দুই প্রতিপ মোরগ। লড়াই শেষে রক্তারক্তি করে জয় পরাজয় নির্ধারিত হয়।

আয়োজক কমিটি নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বাবা দাদার মুখে শুনেছি, এক সময়ে জমিদারেরা বধ্যভূমিতে প্রজাদের মধ্যে মল্লযুদ্ধ দেখে আনন্দ পেতো। তা দেখে মনে মনে ােভে ফেটে পড়তো গরিব প্রজারা। কিন্তু লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে পারতো না। সেই আক্রোশ থেকেই আদিবাসী মানুষ ঠিক করেন, মোরগ লড়াইয়ের মাধ্যমে এর জবাব দেবেন। ক্রমে ক্রমে অনেক পরিবর্তন এসেছে এই লড়াইয়ের নিয়ম-কানুনের। এখন মোরগ লড়াইয়ে বহু টাকার বাজি খেলা হয়। জয়ী মোরগের মালিকেরও মেলে বীরের সম্মান, রাতভর হাড়িয়া খেয়ে চলে নাচগানের অনুষ্ঠান।

মোরগ লড়াইয়ের আসরে মোরগের মালিক দেবব্রত সর্দার জানান, সাধারণ মোরগের দাম পাঁচ শত থেকে ছয় শত টাকা। সেখানে ভারতের রাঁচি শহর থেকে নিয়ে আসা একটি মোরগের দাম বার শত থেকে পনের শত টাকা। পৌষ সংক্রান্তিতে কিংবা সরস্বতী পূজোর দিন মোরগ কিনে সারা বছর তাকে প্রশিতি করে তোলা হয় লড়াইয়ের জন্য। স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে মোরগ লড়াইয়ে জয়ী হওয়া খুবই গর্বের ব্যাপার মনে করেন।

ছবি- শ্যামনগর ভেটখালী মুন্ডা পাড়ায় সরস্বতি পূজা উপলক্ষে মোরগ লড়াই।

রনজিৎ বর্মন

তাং-২৭.১.২৩

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *