[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

রংপুরে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী অন্তঃস্বত্ত্বা ধর্ষক গ্রেফতার।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

পীরগঞ্জে প্রতিবেশী বড় ভাইয়ের লাম্পট্যের শিকার হয়ে এক ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ৬ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ার ঘটনায় ধর্ষক মোনতাজ ওরফে মমতাজ আলীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

শনিবার (১৪ আগষ্ট) পড়ন্ত বেলায় সহকারী পুলিশ সুপার, রংপুর (ডি সার্কেল) নির্দেশে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে করতোয়া নদীর জাতেরঘাট হতে ধর্ষক নদী পার হয়ে পালানোর সময় গ্রেফতার করা হয়।

অন্তঃস্বত্ত্বা স্কুলছাত্রী ও তার পরিবার সূত্র জানায়, উপজেলার টুকুরিয়া ইউনিয়নের সুজারকুটি গ্রামের মৃত- ইসমাঈল আলীর পুত্র দু’সন্তানের জনক মোনতাজ ওরফে মমতাজ আলী (৬২) প্রতিবেশী হতদরিদ্র শ্রবণ প্রতিবন্ধী বাবা ও শারিরীক প্রতিবন্ধী মা’য়ের একমাত্র কন্যা ওই স্কুলছাত্রীকে নির্জন বাড়িতে ভাত রান্নার ছলনা দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে মুখে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যার হুমকী দেখিয়ে বলপূর্বক ধর্ষণ করে। গ্রাম্য সম্পর্কে ওই স্কুলছাত্রী মমতাজের ছোট বোন।

সে স্থানীয় সুজারকুটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। প্রায় ৬মাস পূর্বে লম্পট মমতাজ আলীর পুত্রবধু শাহানাজ পারভীন সন্তানসম্ভবা হওয়ায় তাকে সিজারের জন্য রংপুর মেডিকেল ভর্তি করা হয়। এ সময় পুত্র লিটন মিয়া, কন্যা স্বপ্না বেগম (এক সন্তানের জননী) ও তার স্ত্রী ছানোয়ারা বেগমও মেডিকেলে গেলে ৩দিন বাড়ি ফাঁকা ছিল। এ সুযোগে মমতাজ আলী ওই স্কুলছাত্রীকে নানা ভয়-ভীতি, অর্থের প্রলোভন ও মেরে ফেলার হুমকী দেখিয়ে প্রায়ই ভোগ করে আসছিল।

এদিকে প্রকৃতির চিরাচরিত নিয়মে ওই স্কুল ছাত্রী তার অজান্তে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। গ্রাম প্রতিবেশীরা তার শারিরীক গঠন পরিবর্তনের ঘটনায় নানাভাবে প্রশ্নবানে জর্জরিত করতে থাকে। বিষয়টি ওই স্কুল ছাত্রী বরাবরই অস্বীকার করে আসছিল। সে তখনও জানতো না যে, তার গর্ভে সন্তান। এক পর্যায়ে গত ৭ আগষ্ট ‘ডিআর ইমার উদ্দিন কমিউনিটি হাসপাতাল’এ নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ৬ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা বলে জানান।

এ বিষয়ে পরিবারের লোকজন ওই স্কুলছাত্রীর নিকট জানতে চাইলে সে উল্লেখিত ঘটনা খুলে বলে। বিষয়টি গত ইদুল-আজহা’র ২দিন পূর্বে গ্রামে জানাজানি হলে প্রভাবশালী মোনতাজ ওরফে মমতাজ আলী ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই অসহায় স্কুলছাত্রীর বাড়িতে হামলা চালায়। অব্যাহত ভয়-ভীতি ও হুমকীর কারণে প্রাণভয়ে ওই স্কুলছাত্রী গত ৪ আগষ্ট

বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। বাবা-মা প্রতিবন্ধী হওয়ায় তারা ভয়ে আইনের আশ্রয় নেয়ারও সাহস করেনি।

ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন্য স্কুলছাত্রীর চাচা বুলু মিয়া ও তার স্ত্রী সমস্ত বেগম স্থানীয় সুজারকুটি মসজিদে বিচার প্রার্থণা করলে গত রোববার (৮ আগষ্ট) রাতে সালিস বৈঠক হয়। বৈঠকে মমতাজ আলী ওই স্কুলছাত্রীকে তার অপকর্মের জন্য এক লক্ষ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেন।

ফলে মিমাংসা বৈঠক ভেস্তে যায়। বিষয়টি সহকারী পুলিশ সুপার (ডি সার্কেল) কামরুজ্জমান অবহিত হলে পীরগঞ্জ থানা পুলিশকে অভিযুক্ত ধর্ষক মমতাজ আলীকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি সহকারী পুলিশ সুপার (ডি সার্কেল) নিশ্চিত করেছেন।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *