[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

নালিতাবাড়ীতে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের উদ্যোগে ” ভুলি নাই ভুলবো না”স্লোগানে আলোচনা ও দোয়া আয়োজন।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

শাহাদত তালুকদারঃ

শেরপুরের নালিতাবাড়িতে ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার নালিতাবাড়ী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের উদ্যোগে ১৯৯৬ সালের ১২ আগস্ট যারা সড়ক দুর্ঘটনা নিহত হয়েছে তাদের জন্য আলোচনা ও দোয়ার আয়োজন করেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নালিতাবাড়ী প্রতিরোধ যোদ্ধার সভাপতি ফজলুল হক ফজল।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযোগিতা করেন নালিতাবাড়ী পৌরমেয়র আলহাজ্ব আবু বক্কর সিদ্দিক।

প্রিয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত সদস্য আলহাজ্ব গোলাম ফারুক।

আরও উপস্থিত ছিলেন নালিতাবাড়ী প্রতিরোধ যোদ্ধার সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদি।

আলোচনা সভায় প্রায় ২০০ জন প্রতিরোধ যোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভাটি নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় অফিসে করা হয়।

 

১৯৯৬ সালের ১২ আগষ্ট আরো একটি শোকাবহ দিন নালিতাবাড়ি উপজেলা বাসির জন্য।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ১৫ আগষ্ট। সেই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র,যুবক সহ সর্বস্তরের মানুষ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। সারা বাঙলার ন্যায় নালিতাবাড়ী উপজেলার অনেকেই সেদিন বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।

তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আঃ হালিম উকিল,বৈধ্য নাথ কর, গৌরাঙ্গ পাল, জসিম উদ্দিন, বাহাদুর শাহ, হায়দার আলী, বদিউজ্জামান বদি, ফজলুল হক,নিজাম উদ্দিন সহ অনেকে।

তাদের মাঝে আঃ হালিম উকিল,বৈধ্য নাথ কর ও গৌরাঙ্গ পাল কে সামরিক বাহিনী ধরে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র মামলায় সামরিক আদালতের মাধ্যমে জেলে বন্দি করে। তাঁরা দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি জীবন কাটিয়েছেন।বন্দি জীবন কাটিয়েছেন তাদের মতো হাজারো প্রতিরোধ যোদ্ধা।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম সামরিক বাহিনীর কারণে বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার প্রতিবাদকারী প্রতিরোধ যোদ্ধারা সামরিক সরকারের অত্যাচারে অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য ঢাকায় দফায় দফায় বৈঠকে বসে প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের নেতারা।তারি ধারাবাহিকতায় নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অনেকেই সে দিন ঢাকাতে গিয়েছিলেন। বৈঠক করেছেন, ফিরছিলেন বাড়িতে কিন্তু ভালুকার অদুরে সড়ক দুর্ঘটনায় সকলের বাড়ি ফেরা হয়নি।

নির্মম ভাবে নিহত হলেন বৈধ্য নাথ কর, জসিম উদ্দিন, গৌরাঙ্গ পাল, বাহাদুর শাহ,সংকর সাহা ও গাড়ি চালক তোফাজ্জল হোসেন।

১২ আগষ্ট রাতে খবর পেলাম ভালুকার সড়ক দুর্ঘটনার, রাতের মধ্যেই খবর ছড়িয়ে পড়লো মৃত্যু মিছিলের। কখনো খবর আসছে হায়দার আলী মাষ্টার ( আমার দাদার ভাই ) মারা গেছেন, একেক সময় একেক জনের নাম।

ভোর হলো, ততক্ষণে নিশ্চিত হওয়া গেছে কে মৃত্যু বরণ করেছেন।কে কে হাসপাতালে আছেন। সেদিন প্রকৃতি ছিল কান্না বৃষ্টিতে ভরপুর, মানুষের আবেগের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছিল আকাশ, বাতাস।প্রকৃতিও সেই কান্নার সাথে যোগ দিয়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ফেলে কেঁদেছিলো।

আজ ১২ আগষ্ট তাদের ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী।১৯৯৬ সালে তাদের স্মৃতিকে কে চীর স্মরণীয় করে রাখার জন্য তাদের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে গঠিত হয় সবুজবাগ স্মৃতি সংসদ।

আলোচনা সভায় বক্তব্য সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন যারা প্রতিরোধ যোদ্ধা তাদেরকে যেনো মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *