৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।মঙ্গলবার

দীর্ঘ ২৩বছর ধরে অবহেলায় মহেশখালী কালারমারছড়া খাদ্যগুদাম

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

নুরুল বশর (মহেশখালী) কক্সবাজার,

ধুসর শেওলা জমে আছে দালানের এর চারপাশে। কোথাও লজ্জাবতি গাছ আবার কোথাও বা জন্মেছে সাইকাস।আবার কেউ লিখেছেন কাউকে উদ্দেশ্য করে চিরকুট। দীর্ঘ ২৩বছর ধরে অবহেলায় পড়ে থাকা মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের বর্তমান পরিষদের পশ্চিমে খাদ্য গুদামের চিত্র এটি।

মহেশখালী উপজেলার দু’টির একটি খাদ্য গুদাম পৌরসভার রাখাইন পাড়ায়,অন্যটি উপজেলার মধ্যবস্হিত ইউনিয়ন কালারমারছড়ায়।পৌরসভা,কুতুবজুম,বড় মহেশখালী, ছোট মহেশখালী ইউনিয়নে যথাযথভাবে সেবা দেওয়া গেলেও ভোগান্তিতে রয়েছে মাতারবাড়ি,ধলঘাটা,শাপলাপুর,হোয়ানক ও কালারমারছড়ার স্হানীয় জনগণ। উত্তরপ্রান্ত থেকে প্রায় ১৭-১৮ কি.মি দূরে অবস্হিত খাদ্য গুদাম থেকে খাদ্য বন্টনে অনেকটা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দরিদ্র মানুষের। তাছাড়া ধলঘাটা,মাতারবাড়ি দ্বীপাঞ্চল হওয়ায় যথাযথ সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

কালারমারছড়ার বিশালাকৃতির খাদ্য গুদামটি প্রায় ১একর ৪২শতক জায়গার উপরে গড়ে উঠেছিল। ১৯৯৮ সালের পর থেকে কোন কারণ ছাড়ায় এ খাদ্য গুদামের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়! অন্যদিকে দীর্ঘদিন থেকে অরক্ষিত পড়ে থাকায় খাদ্যগুদামের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।

খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক “সারাদেশে পুরাতন খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ” শীর্ষক প্রকল্পটি ৩১৬৮৭.৫৭ লক্ষ টাকা (সম্পূর্ণ জিওবি) ব্যয়ে জুলাই ২০১৮ হতে জুন ২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়নাধীন ছিল। প্রকল্পের আওতায় খাদ্য অধিদপ্তরের স্থাপনাসমূহে ৫৫০টি পুরাতন খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত এবং অবকাঠামো নির্মাণ করার জন্যও বলা হয়েছিল।এখন এ অর্থবছরে কতটুকু কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক !

এই বিষয়ে উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর কর্মকর্তা তপন কুমারের জানান, দায়িত্বরত থাকাকালীন তিনি স্হানীয় চেয়ারম্যানের সাথে মালামাল মজুদ বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। তবে বদলির কারণে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।

এ বিষয়ে কালারমারছড়া খাদ্যগুদামের দায়িত্বরত নৈশ প্রহরী আবুল কালাম জানান, কোহেলীয়া নদী ভারাট হয়ে গভীরতা কমে যাওয়া বড় বড় মালবাহী নৌকা ঘাটে ভিড়তে পারেনা। এতে মালবাহী নৌকা চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তাছাড়া খাদ্য গুদামস্হ স্হল সড়কটি টেকসই না হওয়ায় মালামাল মজুদকরণ বন্ধ হয়ে যায়।তবে স্হানীয়দের দাবী, বর্তমানে খাদ্য গুদাম সংলগ্ন এডিবি নির্মিতব্য সড়কটি টেকসই হওয়ায় মালামাল পরিবহন করা খুবই সহজ। উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর যদি এই বিষয়টি আমলে নেয় তাহলে দুঃখ দূর্দশা ও ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ।

কালারমারছড়া ইউনিয়নের একজন ডিলারের সাথে কথা বললে হতাশাব্যঞ্জকভাবে জানান, মালামাল নিয়ে আসতে পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় তারা লাভের অংশটুকুও পাচ্ছে না। এছাড়াও দূরবর্তী স্থান থেকে পরিবহনযোগে মাল আনতে ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের।

কালারমারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমিন টিপু বলেন, তখনকার সময়ে নির্মাণ করা এই খাদ্যগুদামটি এখন ভূতুড়ে ঘর হিসেবেই পড়ে আছে। বর্তমানে এরকম একটি গুদাম নির্মাণ করতে হলে কয়েক কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। আমার মনে হয়, এই দালানটি কিছুটা মেরামত করলেই পুনরায় চালু করা যেতে পারে। এতে করে মহেশখালীর উত্তর প্রান্তের এলাকার হাজারো মানুষ এর সেবা নিতে পারবে।

এ ব্যাপারে কালারমারছড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ জানান, মহেশখালী উপজেলার অধীনে এই খাদ্যগুদামটি নির্মাণ করা হয়েছিল।পরে কোন কারণ ছাড়ায় এ গুদামঘরের আর কোন ব্যবহার করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে পুনঃসংস্কার করে এটি চালু করা যেতে পারে। আর যে কারণগুলো দেখাচ্ছে কর্তৃপক্ষ তা সরেজমিনে এসে দেখে বিবেচনা করতে পারবে গুদামটি ব্যবহারের উপযুক্ত কিনা! এ গুদামটি চালু করলে সরকারের অনেকটা ব্যয় কমে আসবে। কারণ যে খাদ্যগুদাম থেকে মালামাল আনা হয় তা কালারমারছড়া খাদ্যগুদাম থেকে ১৮-১৮ কিমি দূরে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।