১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১লা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

খুলনা রূপসায় মন্দির ও হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় আটক দশ, র‌্যাবের টহল জোরদার।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

খুলনা প্রতিনিধি।

 

খুলনার জেলার রূপসা উপজেলার শিয়ালী গ্রামে কয়েকটি মন্দির এবং স্থানীয় হিন্দু মালিকানাধীন কিছু দোকান ভাংচুর করার ঘটনায় দশ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হামলার ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকেলে।

 

গ্রামটির হিন্দু অধিবাসীরা বলছেন, হামলকারীরা অন্তত চারটি মন্দির এবং ভেতরে থাকা প্রতিমা ভাংচুর করেছে। পুলিশ অবশ্য হামলার শিকার হওয়া মন্দির ও অন্যান্য স্থাপনার সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।

 

প্রশাসন থেকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে। রূপসা থানার পুলিশ বলছে, শনিবার রাতেই এ নিয়ে একটি মামলা হওয়ার পর ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মামলাটিতে কাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ।

 

রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেন বলছেন, “এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে”। র‌্যাব-৬ এর একটি টহল দলকে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।

 

রূপসার ইউএনও এবং থানার ওসি দু’জনেই গণমাধ্যমকে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় মসজিদে নামাজ চলার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ‘গান-বাজনা’ করছিলেন অভিযোগে দুই পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয়, যেটাকে তারা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে বর্ণনা করছেন। তবে রূপসা উপজেলার নির্বাহী অফিসার বলছেন, ওই দ্বন্দ্বের সমাধান সেদিনই হয়ে গিয়েছিল এবং ওইদিনের ঘটনার সাথে শনিবারের হামলার সম্পর্ক নেই।

 

ইউএনও রুবাইয়া তাছনিম বলেন, শুক্রবারের ঘটনার পরপরই প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনি স্থানীয় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ‘আমরা জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা সাথে সাথে সেখানে যাই এবং স্থানীয়দের সাথে বৈঠক করে দ্বন্দ্বের মিটমাট করি,’ জানান ইউএনও।

 

খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, রূপসা এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সেখানে অবস্থান করছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেছে।

 

এদিকে খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার শিয়ালি গ্রামে পাশ্ববর্তী এলাকার কিছু দুর্বৃত্ত শনিবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর লুটপাট মন্দির ভাংচুর ও শারীরিক নির্যাতন করেছে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

 

দলটির পক্ষ থেকে জড়িত দোষী ও মদদদাতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এবং এই জঘন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা, হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি, আক্তারুজ্জামান বাবু এমপি সহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

 

অন্যদিকে রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের ইশা ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ও শিয়ালী বাজার জামে মসজিদের ইমাম নাজিম মজুমদারের উপর হিন্দু সম্প্রদায়ের অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে মূল সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

 

 

 

এদিকে রূপসার শিয়ালী গ্রামে সহিংসতার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। তিনি এক বিবৃতিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি বন্ধ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

 

তিনি বলেন, “রূপসার মানুষ শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। বছরের পর বছর এই অঞ্চলের মানুষ মসজিদ থেকে ভেসে আসা আজানের ধ্বনি এবং মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি’র সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। তাই বছরের পর বছর গড়ে ওঠা শান্তি ও সম্প্রীতির যে সহাবস্থান রূপসার মানুষ মজবুত রেখেছেন, তা যেন রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক মতলবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সুতরাং প্রকৃতভাবে যে বা যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনা হোক।” হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার-প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি সরকারী বরাদ্দের আবেদন জানান বিবৃতিতে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।