[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

বিদ্যার দেবী সরস্বতীর বাহন রাজহংস কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

কথায় বলে, ‘বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ’। সেই সব পার্বণের মধ্যেই একটি প্রাচীন ও অতি পরিচিত ঐতিহ্যমণ্ডিত পূজা হল বিদ্যার দেবী সরস্বতীর পূজা। মাঘ মাসে শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী মায়ের পূজা করা হয়। দেবী সরস্বতীর পূজা প্রাচীন যুগ থেকেই বাঙালীর হৃদয় ও অন্তরে সমাদৃত হয়ে আসছে। তিনি শুক্ল বর্ণ, শুভ্র হংসবাহনা, বীণা রঞ্জিত পুস্তক হস্তে অর্থাৎ একহাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক।

দেবী শুক্লবর্ণা কেন?
শুক্ল বর্ণ মানে সাদা হল ভাল গুণের প্রতীক। পবিত্র গীতার চতুর্দশ অধ্যায়ের শ্লোকে আছে, ‘তত্র সত্ত্বং নির্মলাত্বাৎ’ অর্থাৎ সত্ত্ব, তমো ও রজোগুণের মধ্যে সত্ত্বগুণ অতি পবিত্র গুণ। স্বচ্ছতার প্রতীক, নির্মলতার প্রতীক। আবার ওই অধ্যায়ের ১৭ নম্বর শ্লোকে বলা হয়েছে- ‘সত্ত্বাৎ সংজায়তে জ্ঞানং’ অর্থাৎ সত্ত্বগুণে জ্ঞান লাভ হয়। তাই জ্ঞানময়ী সর্বশুক্লা দেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী জ্ঞানে গুণান্বিত বলে তার গায়ের রঙ শুক্লবর্ণ অর্থাৎ দোষহীনা। পবিত্রতার মূর্তি আর জ্ঞানদান করেন বলে তিনি জ্ঞানদায়িনী।

দেবী বাহনা রাঁজহংস কেন?
জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর বাহন রাজহংস। কারণ হাঁস অসারকে ফেলে সার গ্রহণ করে। দুধ ও জলের মিশ্রণ থেকে জল ফেলে শুধু দুধটুকু গ্রহণ করে কিংবা কাদায় মিশ্রিত স্থান থেকে তার খাদ্য খুঁজে নিতে পারে। মায়ের সঙ্গে পূজিত হয়ে শিক্ষা দিচ্ছে, সবাই যেন অসার/ ভেজাল/ অকল্যাণকরকে পরিহার করে নিত্য পরমাত্মাকে গ্রহণ করে এবং পারমার্থিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে।

দেবী বীণাপানি কেন?
বীণার জীবন ছন্দময়। বীণার ঝংকারে উঠে আসে ধ্বনি বা নাদ। বিদ্যার দেবী সরস্বতীর ভক্তরা সাধনার দ্বারা সিদ্ধিলাভ করলে বীণার ধ্বনি শুনতে পায়। বীণার সুর অত্যন্ত মধুর। তাই বিদ্যার্থীদেরও মুখ নিঃসৃত বাক্যও যেন মধুর ও সঙ্গীতময় হয়। সেই কারণেই মায়ের হাতে বীণা। তাই দেবী সরস্বতীর আরেক নাম ‘বীণাপাণি’।

দেবী সরস্বতীর হাতে পুস্তক কেন?
বিদ্যার্থীদের লক্ষ্য জ্ঞান অন্বেষণ। আর জ্ঞান ও বিদ্যার অন্বেষণের জন্য জ্ঞানের ভান্ডার ‘বেদ’ তার হাতে রয়েছে। সেই বেদই বিদ্যা। তিনি আমাদের আশীর্বাদ করছেন আমাদের জীবনকে শুভ্র ও পবিত্র করতে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *