[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

কয়রার দক্ষিণ বেদকাশীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন স্বেচ্ছাশ্রমে রিং বাঁদ দিলেও আতঙ্কিত এলাকাবাসী ।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

কয়রা উপজেলার সর্ব দক্ষিণের জনপদ কপোতাক্ষ নদের কোল ঘেঁষে যাওয়া দক্ষিণ বেদকাশীর মাটিয়াভাঙ্গা এলাকার পাউবোর বেড়িবাঁধ ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। রাতে হঠাৎ নদী ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করার উপক্রম হলে স্থানীয়রা রাত জেগে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করে এযাত্রা রক্ষা পেলেও ভাঙ্গন আতংকে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী বসবাসকারী জনগণ। 

বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় ২ শ মিটার বাঁধ নদীতে গ্রাস করে নেয়। তাৎক্ষণিক স্থানীয় বাসিন্দা ঐ রাতে একটি রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে সক্ষম হয়। তবে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে যে কোন সময় লবণ পানিতে প্লাবিত হবে কয়েকটি গ্রাম।

দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ দিদারুল আলম জানান,
সুন্দরবনঘেঁষা আড়পাঙ্গাসিয়া নদী ও কপোতাক্ষ নদের মোহনা সংলগ্ন বাঁধটিতে এক মাস আগেই ফাটল দেখা যায়। বিষয়টি পাউবোকে জানানো হলেও তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। 

তিনি বলেন, অল্প কিছু বস্তা ড্যাম্পিং করে দায়সারা কাজ করা হয়েছিল তখন। তাই গত রাতে আগের ফাটলটি হঠাৎ বড় হয়ে বাঁধ ধ্বসে গেছে। ভাঙনের খবর শুনে রাতেই ঘটনাস্থলে যান মাটিয়াভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সোহেল গাজী, আক্তারুল মোল্যা, নয়ন খাঁ সহ আরও অনেকেই। তারা গিয়ে দেখেন, বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে নদীতে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ছে। তাৎক্ষণিক গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে ঐ রাতেই তারা দ্রুত রিং বাঁধ নির্মাণ করেন। এতে করে আর লোকালয় পানিতে প্লাবিত হয়নি।

 তবে জোয়ারের পানি যেভাবে বাড়ছে, এতে দ্রুত সংস্কার কাজ না করা হলে আবারও ভাঙনের ঝুঁকি আছে বলে জানান তারা। মাটিয়াভাঙ্গা গ্রামের অজিয়ার শেখ বলেন, দেখতে দেখতে নদীর বাঁধ কিভাবে ভেঙ্গে গেলো তা বুঝতে পারলাম না। মনে হলো বাড়িঘর সব তলিয়ে যাবে। তবে রিং বাঁধ দেওয়ায় এ যাত্রা মনে হয় রক্ষা হলো।

 দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওসমান গনি খোকন বলেন, সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে ঐ রাতেই কাজ করে করে রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে।

 পাউবো সূত্র জানা গেছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পুনর্বাসন’ প্রকল্পের আওতায় কয়রা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের দুটি পোল্ডারে ( ১৩-১৪ /১ ও ১৩-১৪ /২) প্রায় ১,২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। ৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে উচ্চতা-প্রশস্ততা বৃদ্ধি, ঢাল সংরক্ষণ, নদীশাসন ও চর বনায়নের কাজ করা হচ্ছে। মাটিয়াভাঙ্গার ভাঙন এলাকাটিও ওই প্রকল্পের অংশ।

 পাউবোর সাতক্ষীরা-২ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর কবীর বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে বাঁধটি মেরামতের কাজ চলছে। তিনি বলেন, কাজ চলমান অবস্থায় বৃহস্পতিবার  রাতে বাঁধটি ভেঙে গেছে। কংক্রিট ব্লক নির্মাণের সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাতেই বিকল্প রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে পারায় এলাকা প্লাবিত হয়নি।  তবে স্থানীয়দের দাবি আগামী বর্ষার আগে ঠিকমতো বাঁধের কাজ শেষ না হলি বড় বিপদের সম্মিখিন হবেন তারা।

 পাউবো সাতক্ষীরা-২ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। তবে জমি অধিগ্রহণ জটিলতা, বরাদ্দ বিলম্ব, বালু-মাটির সংকট এবং নদীর ভাটার সময়ের ওপর নির্ভর করতে হওয়ায় কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে। মাটিয়াভাঙ্গা এলাকার বাঁধে জরুরী ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছে। সংকিত হওয়ার কিছু নেই।

কয়রা, খুলনা প্রতিনিধি 
তারিখঃ ০৬/১২/২৫ ইং। 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *