পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অ্যাপ্রোচ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ স্থাপন হবে। এরফলে পরিবেশগত ও মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হবে। সমাজে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের ব্যবধানও ঘুচবে। আন্তঃসম্পর্কের মিথস্ক্রিয়ায় উচ্চশিক্ষায় নতুন পরিবর্তনের ধারা তৈরি হবে।’
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শতবর্ষের আলোয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনুষ্ঠান উদযাপনের চতুর্থ দিনে আলোচনা সভায় অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হবার মূল কারণ জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি। সেই জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি করার পর একে আদর্শ শিক্ষায়তনে পরিণত করা আবশ্যক। বিজ্ঞান মনস্ক একটি আধুনিক গবেষণা নির্ভর বিদ্যাপীঠ তৈরি করতে হবে এই পাদপীঠকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বহু অ্যাপ্রোচ আমি মনে করি আধুনিক ও অগ্রসর। বিভিন্ন জনের সমালোচনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলবো-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে। কখনো কখনো বলা হয় এখানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা সুযোগ পায় বেশি। এটি ঠিক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তিমূলক অ্যাপ্রোচ এখানে আছে। এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। যেটি নাই সেটি হচ্ছে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ইনক্লুসিভ অ্যাপ্রোচে নিয়ে আসা। এই পদ্ধতিটি এখানে তৈরি করতে হবে। কারণ আমাদের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা বিদেশগামী হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য ভয়ানক ক্ষতির দিক। এইসব মেধাবী অংশকে সংস্কৃতি চর্চা এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার দায়বদ্ধতা আমাদের আছে। এর দায় শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একা নিতে পারে না। সুতরাং যেভাবে মাদ্রাসা শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করা হয়েছে, একইভাবে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করবার আগামী দিনের যে চ্যালেঞ্জ তার মধ্যদিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্যই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উৎকর্ষতায়, শিল্প-সাহিত্যে অনন্য হয়ে উঠবে। এই পাদপীঠে আমাদের অনেক ঋণ। এর প্রতিটি ঐতিহ্য আমাদের পবিত্র আমানত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আমানত আগামী দিনে অক্ষুণ্ণ থাকবে আজকের শতবর্ষে এই হউক আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়। এই প্রতিষ্ঠান আরও উজ্জ্বল হউক, আলোকবর্তিকায় ভরে উঠুক। এর প্রতিটি শিক্ষার্থী আত্মমর্যাদার সঙ্গে বলে উঠুক আমি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এই হউক আমাদের আগামী দিনের পথ চলার অনুপ্রেরণা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহাদত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুইয়া, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার প্রমুখ। এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
Leave a Reply