মোঃ সাইফুল ইসলাম: শালিখা (মাগুরা ) প্রতিনিধি:
মাগুরার, শালিখায় ১৯৭১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বরে স্বাধীনতা যুদ্ধের অংশ তালখড়ি যুদ্ধ নামে পরিচিত একটি যুদ্ধে শহীদ হওয়া ৭ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করল উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ।১৩ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ১১ টায় এ উপলক্ষে তালখড়ি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও পরে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড: কামাল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোঃ বাতেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু বকর মাস্টার, উপজেলার বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ। স্থানীয় একাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায় ১৯৭১ সালের ১৩ ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার এ দিনে ভারত থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ফরিদপুরের দিকে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে শালিখা উপজেলা সদর আড়পাড়া ডাক-বাংলা ও আড়পাড়া হাইস্কুলে অবস্থানরত রেঞ্জার পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী আড়পাড়া থেকে ৫ কি:মি দূরে পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িতে অবস্থান গ্রহণ করে। মুক্তিযোদ্ধার দলটি জমিদার বাড়ির কাছাকাছি আসলে পাকিস্তান বাহিনীর সদস্যরা তাদের উপর আক্রমন করে ওই যুদ্ধে ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ও ১৭ জন রেঞ্জার পুলিশ ও রাজাকার হতাহত হয়। হানাদার বাহিনী তাদের হতাহত সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে গেলেও ৭ জন মুক্তিযোদ্ধার মৃতদেহ ওইখানে পড়ে থাকে পরে গ্রামবাসীরা ৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মৃতদেহ আড়পাড়া- কালিগঞ্জ সড়কের পাশে তালখড়ি গ্রামের একটি গণকবরে দাফন করে। এখানে কারা শায়িত তার খোঁজ এলাকার কেউ জানে না। দীর্ঘদিন যাবৎ গণকবরটি ঝোপঝাড়ের আড়ালে পড়ে থাকে । ১৯৮৪ সালে উপজেলা সৃষ্টি হওয়ার পর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের এই গণকবরটি খোঁজ পড়ে। অবশেষে উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে এই গণকবরের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে সাতটি স্তম্ভ নির্মাণ করে চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেয়া হয় । তারপর থেকে প্রতি বছর ধরে ২৬ শে মার্চ ১৬ ই ডিসেম্বর জাতীয় দিবস উপলক্ষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধায় শহীদদের স্মরণ করা হয়। এখন থেকে প্রতি বছর ১৩ ই সেপ্টেম্বরে জাতীয় দিবস গুলোর মত একই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।