উপজেলা প্রতিনিধি কয়রা।
চলতি মৌসুমে সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গোলপাতা পারমিটে রাজস্ব অতিরিক্ত অর্থ আদায়, নৌকার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৪গুন বেশি গোলপাতা আহরণ,কূপে নিযুক্ত বনকর্মকর্তাদের ঘুষবাণিজ্য, বাওয়ালীদের নিয়ম বর্হিভুত বনজদ্রব্য(সম্পদ) কর্তক করা চলছে। সূত্র জানায়, গত ৩১ জানুয়ারী পশ্চিশ সুন্দরবনের ৮ টি ফরেস্ট ষ্টেশন থেকে গোলপাতার পারমিট শুরু হয়েছে যা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চালু থাকবে। খুলনা রেঞ্জে শিবসা কূপ ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে সাতক্ষীরা গোলপাতা নামে ২ টি কূপের মাধ্যমে আড়াই শতাধিক বিএলসি ধারী কাঠের তৈরী বড় নৌকা বর্তমানে সুন্দরবনে গোলপাতা কর্তন করতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতিমধ্যে গোলপাতা ভর্তি নৌকা লোকালয়ে আসতে শুরু করেছে। নৌকা গুলো ২/৩ স্তরের মলমলা গিয়ে ৫'শ মণের পারমিটে আড়াই হাজার মণের বেশি অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাই করছেন।পশ্চিম সুন্দরবনে শিবসা ও সাতক্ষীরার দুইটি গোলপাতার কূপে ২ জন কূপ কর্মকর্তা, সহযোগী কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন বন রক্ষী রয়েছে। তারা মূলত সংশ্লিষ্ট কূপে গোলপাতা কর্তনের জন্য বিএলসি ধারী নৌকার মালিকদের ঘের বরাদ্ধ দেয়া, নৌকার সঠিক পরিমাপ করা,অতিরিক্ত বোঝাই নিয়ন্ত্রণে ২/৩ স্তরের মলম সহ অন্যান্য বনজ দ্রব্য(সম্পদ) কর্তন থেকে বাওয়ালীদের বিরত রাখতে সার্বক্ষণিক নজরদারী করণের মর্মে বন বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টো দেখা যায়, ধুরান্তর বাওয়ালীরা কূপ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ৫'শ মণ ধারন ক্ষমতা নৌকায় অতিরিক্ত আড়াই থেকে তিন হাজার মণ গোলপাতা বোঝাই করে নিয়ে আসছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়রার ভান্ডার পোল এলাকার কয়েকজন বাওয়ালী জানিয়েছেন, অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাইয়ের জন্য বহর মালিকের মাধ্যমে বন রক্ষীদের মোটা অংকের উৎকোস দিয়ে থাকি।ফলে সরকার প্রতিটি নৌকা থেকে ট্রিপ প্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা হারে রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিয়মবর্হিভূত ভাবে গোলপাতা আহরণের সুযোগ দিয়ে বাওয়ালীদের কাছ থেকে এভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কূপে নিযুক্ত বনকর্মকর্তা ও বনরক্ষীরা৷
সুন্দরবনের পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু নাসের মোহাম্মদ মোহসীন হোসেন জানান,বন কর্মকর্তারা গিয়ে নৌকা চেক করেছে, বিএলসি পরিক্ষা নিরীক্ষা শেষে পারমিট দেয়া হয়েছে৷ গোলপাতার নৌকায় মলম ব্যবহার না করতে বাওয়ালীদের সতর্ক করা হয়েছে সাথে বনরক্ষী ও কূপকর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে কঠিন ভূমিকা রাখতে বলা হয়েছে।তার পরও কেউ রাজস্ব ফাকি দিয়ে অতিরিক্ত গোলপাতা আনছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।কোন প্রকার অনিয়ম ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।উৎকোচের ব্যাপারে আমার জানা নেই খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।