শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শাজাহানপুরে যুবদল নেতার মারপিটে একটি পা হারানো মানসিক প্রতিবন্ধি মেহেদী হাসান ওরফে রাজুর (৩০) অবশেষে মৃত্যু হয়েছে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় দুই মাস চিকিৎসাধিন থাকার পর গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। এর আগে ৫ অক্টোবর বিকেলে তার ডান পা কেটে ফেলা হয়েছিল।
নিহত মেহেদী হাসান শাজাহানপুর উপজেলার চোপীনগর ইউনিয়নের শাহনগর বিলায়েতপাড়া গ্রামের দিনমজুর আজাহার আলী ওরফে রাজা মিয়ার ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মেহেদী হাসান মানসিক ভাবে অসুস্থ্য হওয়ায় তিনি ঝোঁপ-ঝাড়ে বাঁশের কঞ্চির খুঁটি গেড়ে প্লাষ্টিকের বস্তা দিয়ে ঘর বানিয়ে খেয়াল খুশি মত থাকতেন। গত ২০ আগষ্ট রাত সাড়ে ১২টার দিকে মেহেদী হাসান বাড়ির অদূরে বাঁশঝাড়ের ভিতর গিয়ে দেখেন তার ঝুপড়ি ঘরে বসে শাহনগর ডাক্তারপাড়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য একাধিক নাশকতা মামলার আসামী মারুফ হোসেনসহ ৪-৫ জন আড্ডা দিচ্ছে। তখন তাদেরকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললে যুবদল নেতা মারুফ হোসেন প্রতিবন্দি রাজুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরের দিন ২১ আগষ্ট বেলা ৩টার দিকে যুবদল নেতা মারুফ হোসেন লাঠি দিয়ে আবার রাজুকে এলোপাথারি মারপিট করে। একপর্যায়ে পিটিয়ে ডান পায়ের হাটুর নীচে থেতলে ভেঙ্গে ফেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধিন থাকাকালিন সময়ে বেশ কয়েকবার অস্ত্রপাচার করার পরও পায়ের মাংস পঁচে খসে পড়তে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ৫ অক্টোবর বিকেলে হাটুর উপর পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়। এরপর সেখানে চিকিৎসাধিন থাকা অবস্থায় গত বুধবার রাত ১২ টার দিকে মেহেদী হাসান রাজু মারা যান। এর আগে মারপিটের ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় যুবদল নেতা মারুফ হোসেন আদালতে স্বশরিরে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠান।
শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মরদেহের পোষ্টমর্টেম শেষে স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় প্রথমে মারপিটের মামলা করা ছিল। এখন হত্যা মামলাও হবে।