এম এফ এইচ রাজু
ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় আ. লীগ বনাম জাতীয় পার্টি জেপির সংঘর্ষের ঘটনার ৮ দিন পর ৩ নং তেলিখালি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শামসুদ্দিন হাওলাদার সহ আওয়ামী লীগের ৩২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়া থানায় মামলা হয়েছে৷ মামলার বাদী জাতীয় পার্টি জেপির অঙ্গ সহযোগী সঙ্গঠন জাতীয় যুব সংহতির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ। মামুনুর রশিদ (৪৫) ভান্ডারিয়া পৌর শহরের ৪ নং ওয়ার্ডের জয়নাল আবেদীনের ছেলে ও জাতীয় যুব সংহতি ভান্ডারিয়া উপজেলা শাখার সদস্য সচিব।
ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশিকুজ্জামান ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ ১৯:৩০ এর সময় ভান্ডারিয়া থানার মামলা নং ১৯ ধারা ১৪৩, ৩৪১,৩২৩, ৩২৫, ৩০৭, ৩৭৯, ৪২৭ ও ৫০৬ (২) পেনাল কোড ১৮৬০ এ মামলাটি রুজু করেছেন বলে মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়।
এছারাও দায়েরকৃত মামলাটির এজাহার সুত্রে আরও জানা যায়, মামলার বিবাদীদের সাথে বাদী মামুনুর রশিদ সহ কতিপয় সাক্ষীদের বহুদিন ধরে সামাজিক বিরোধ থাকায় গত ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালি ইউনিয়নের জুনিয়া সাকিনস্থ মির্জা বাড়ী মসজিদের সম্মুখে জাতীয় পার্টি জেপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন কর্তৃক পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিকালে ১৬ এপ্রিল সকল বিবাদীরা একত্রিত হইয়া ধর্মীয় অনুষ্ঠান পন্ডকরার পরিকল্পনা করেন। পরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঐদিন রাত ১২:০০ টার দিকে অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাংচুর সহ হামলা চালান বিবাদীরা, এতে মঞ্চে থাকা ৫০০ শত চেয়ার, তাবু ও বাঁশ ভাংচুরে এক লক্ষ্য টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
পরদিন ১৭ এপ্রিল জাতীয় পার্টি জেপির স্থানীয় নেতা কর্মীরা পুনরায় মঞ্চ তৈরি করে পূর্ব ঘোষিত অনুষ্ঠানের সকল প্রকার ব্যবস্থা করেন, অতঃপর অনুষ্ঠান শেষে মামুনুর রশিদ, জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক, রেজাউল হক রেজভি জমাদ্দার এবং জাতীয় পার্টি জেপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সহ কতিপয় সাক্ষীদের নিয়ে গাড়ি যোগে ভান্ডারিয়া পৌর শহরের উদ্দেশ্যে রওনা করলে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬:৪০ এর দিকে জুনিয়া মির্জা বাড়ীর সামনের পাকা রাস্তায় বিবাদীরা গাছের গুড়ি বিছিয়ে এবং বে-আইনি জনতাবদ্ধে দলগত হইয়া চারদিক হইতে এলোপাথারি ইট পাটকেল ছুরে প্রথমে গাড়ির গতিরোধ করেন বিবাদীরা।
অতঃপর গাড়ি বহরে অতর্কিত হামলা এবং লুটপাট চালিয়ে ১. ঢাকা মেট্রো-চ-১১-২১৪৮ (হাইএস), ২. ঢাকা মেট্রো-চ-১১-৫৬৫৯ (হাইএস), ৩. চট্র মেট্রো-চ-১১-২১৪৮ (হাইএস), ৪. ঢাকা মেট্রো-চ-১৩-১২৮৯ (হাইএস), ৫. ঢাকা মেট্রো-গ-১৫-৭৪৭৯ প্রাইভেট গাড়ি ভাংচুর করে আনুমানিক দশ লক্ষ্য টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করেন তিনি। এসময় সাথে থাকা দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাংবাদিক সঙ্করজীত সমাদ্দার ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাকেও মারধর করে আড়াই লাখ টাকার ক্যমেরা ছিনিয়ে নেয়া সহ রেজভি জমাদ্দারের পকেট থেকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা লুটপাটের দাবী জানান দায়েরকৃত মামলার বাদী মামুনুর রশিদ।
দায়েরকৃত এ মামলাটির বিবাদীরা হলেন, ১. তেলিখালি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সামসুদ্দিন হাওলাদার (৪৫), ২. সাদ্দাম হাওলাদার হিরা (৩০), ৩. মুক্তা হাওলাদার (৩৫), ৪. অহেল হাওলাদার (৪০), ৫. মাহাবুব (৩০), ৬. মামুন হাওলাদার (৩০), ৭. নাসির হাওলাদার (৫০), ৮. জামাল হাওলাদার (৬০), ৯. রাজু আকন (২৬), ১০. কাওসার খা (২২), ১১. সাইদুল খা (৫০), ১২. রিপন খলিফা (৩০), ১৩. সোহেল বেপারী (২৫), ১৪. জাহিদ আকন (২০), ১৫. মাছুম মাতুব্বর (২৫), ১৬. শহীদ পহলান (৪০), ১৭. আসলাম পহলান (৪০), ১৮. হাসিব মাতুব্বর (৩০), ১৯. মিজান মেম্বর (৪০), ২০. কবির আকন (৫৫), ২১. মামুন হাওলাদার (৪০), ২২. মনির হাওলাদার (৩৫), ২৩. মোঃ টিপু তালুকদার (৪৮), ২৪. লিটন পেশকার (৪৮), ২৫. মোঃ চপল হাওলাদার (৪৫), ২৬. মোঃ রুবেল (৪২), ২৭. মোঃ মিরাজ (৩৫), ২৮. রিসান সিকদার (৩০), ২৯. আল আমিন সরদার (৩০), ৩০. সুদেব দাস (২৭), ৩১. ইসতিয়াক সজল ( ৩০), ৩২. ফারুক খান (৪৫) এদেরকে প্রধান বিবাদী হিসেবে উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে বিবাদী করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে৷
ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশিকুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় ভান্ডারিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে, মামলার তদন্ত চলছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷