কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি ।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমানপুর কারিগরপাড়ায় নিজের লাইসেন্স করা বন্দুক মাথায় ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন নজরুল ইসলাম (৭০) নামের এক ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে তাঁর আত্মহত্যার পেছনের প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায় , নজরুল ইসলাম তাঁর দোতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থাকতেন। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতে খাবার খেয়ে তিনি নিজের শোয়ার ঘরে যান। এরপর গভীর রাতে তিনি তাঁর লাইসেন্সকৃত দোনলা বন্দুক নিয়ে ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে যান। সেখানেই তিনি মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন।
প্রতিবেশী আলাউদ্দিন জানান, রাত ১টা থেকে দেড়টার দিকে নজরুল ইসলাম তাঁকে ফোন করে বলেন, ‘আমার বন্দুক লোড করা হয়ে গেছে। তুই একটু ৯৯৯-এ কল কর।’ এর পরপরই তিনি কল কেটে দেন। আলাউদ্দিন সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন, কিন্তু বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় ভেতরে ঢুকতে পারেননি। অনেকবার কল করেও নজরুল ও তাঁর ছেলে ইয়াসির আরাফাতের সাড়া না পেয়ে তিনি ফিরে যান। পরদিন সকালে তিনি নজরুল ইসলামের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন।
পারিবারিক জানা যায় , ভোরে নজরুল ইসলামের ছেলে ইয়াসির আরাফাত তাঁকে শোওয়ার ঘরে দেখতে না পেয়ে খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি নিচতলার কক্ষে বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। তবে তিনি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নজরুল ইসলাম ছিলেন এলাকার একজন পরিচিত কাপড় ব্যবসায়ী এবং একজন সামাজিক মানুষ। তিনি তিন ছেলে-মেয়ের জনক ছিলেন।
খবর পেয়ে কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না মিয়া, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বরসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহের মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে লাইসেন্সকৃত বন্দুক, লাইসেন্স এবং ৪৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে।
কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না মিয়া বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে তার ব্যাংকে ঋণ ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ হলে আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’