সরদার বাদশা নিজস্ব প্রতিনিধি
খুলনা বিভাগ
১৩ ডিসেম্বর ডুমুরিয়া পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ডিসেম্বর মাস থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয় এই দিনে।দিবসটি উপলক্ষ্যে গতকাল সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধান সড়কগুলোতে র্যালি প্রদর্শনী শেষে উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, প্রধান অতিথি ছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন পারভীন রুমা,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি
মোঃ রিয়াজুল ইসলাম,সহ-সভাপতি উত্তম মন্ডল , অশোক দেবনাধ , রিক্তা রায়,রাকিবুল ইসলাম ( পিন্টু )সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহাতাব হোসেন মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম লিপু, দপ্তর সম্পাদক লালন সোহাগ আলম বাপ্পি, অর্থ সম্পাদক জয়দেব কুমার সাহা, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক কমলেশ মন্ডল, তাপস তরফদার, সদস্য মোড়ল আখতারুজ্জামান (বাবলু) এ সময় বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক ডুমুরিয়া মুক্তদিবস হিসেবে ঘোষণার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে ১০ ডিসেম্বর কপিলমুনি মুক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর আমরা যারা ডুমুরিয়ার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম তারা ডুমুরিয়ায় ফিরে আসি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ডুমুরিয়া থানায় স্থাপিত মিলিশিয়া বাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ করার। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখি মিলিশিয়া বাহিনী পালিয়ে গেছে। তখন উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় মিছিল করে এবং আমরা ডুমুরিয়াকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করি। তিনি আরো বলেন, যখন দেখি সারাদেশে বিভিন্ন অঞ্চল শত্রুমুক্ত দিবস পালিত হচ্ছে তখন নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়। আমরাও তো ’৭১ সালে ডুমুরিয়ায় শত্রুমুক্ত এলাকা ঘোষনা করি। দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর। অথচ সেই দিনটির কথা অনেকেই জানেন না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এটি একটি ঘটনা। কিন্তু নতুন প্রজন্মকে তা জানাতে হবে। তিনি বলেন, বয়স বেড়েছে। প্রকৃতির নিয়ম অনুয়ায়ী বেশি দিন হয়তো বাচঁবো না। মুক্তিকালিন সময়ে এই ডুমুরিয়ার চুকনগরে ২০ মে ঘটে ভয়াবহ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। যা দেশের সবচেয়ে বড় গণহত্যা বলে জানা যায়। তিনি বলেন, ডুমুরিয়া এলাকার খর্ণিয়া, বানিয়াখালী, কাপালিডাঙ্গা, কাকমারী, শলুয়া এবং ডুমুরিয়া-বটিয়াঘাটা উপজেলা সীমান্ত বারোআড়িয়ায় রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। সেই ডুমুরিয়া শত্রুমুক্ত হয়েছিল ১৩ ডিসেম্বর যা অনেকেই জানেন না। নিজের কর্তব্য ও দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে ২০১১ সালে প্রথম দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তার পর থেকে আড়ম্বর সহকারে দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে।
Leave a Reply