১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।শনিবার

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্যের ১৫ বছর।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

এম এ রশীদ সিলেট থেকে।

 

সাফল্যের ১৫ বছর অতিক্রম করল সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। টিলা ও সমতল ভূমি ঘিরে নগরীর আলুরতল এলাকায় কৃষিক্ষেত্রে শিক্ষাদান ও দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে ২০০৬ সালের ২রা নভেম্বর যাত্রা করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি কৃষিক্ষেত্রে দেখিয়েছে অনন্য সাফল্য। বর্তমানে ৬টি অনুষদে ৪৭টি বিভাগ রয়েছে। প্রায় ৫০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা সিকৃবি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে ছোট-বড় টিলা।

 

সিলেট-জাফলং-তামাবিল বাইপাস রাস্তার পাশে ১২ একর ২৯ শতক ভূমি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিঃক্যাম্পাস ও গবেষণা মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে। বিসিএস পরীক্ষাসহ দেশে-বিদেশে আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা আজ সফল। ভাবতে ভালই লাগছে এরা সবাই এখন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করে আছে এবং বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধুর সম্পর্কের কারণেই তারা আজ সফল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় চলছে গবেষণা কার্যক্রম। যার স্বীকৃতিস্বরূপ বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারীর সময়েও আন্তর্জাতিক স্কোপাস ইনডেক্স জার্নালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১০০ এর অধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনায় হাওরে জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে এখানকার গবেষকরা। বোরো ফসলনির্ভর হাওরাঞ্চলে এক সময় শীতকালেও মাঠের পর মাঠ পতিত থাকত। সুনামগঞ্জের হাওরসহ বিভিন্ন হাওরের প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে সিকৃবি নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। চলছে মসলা জাতীয় ফসল নিয়ে গবেষণা। প্রোটিন সমৃদ্ধ সিকৃবি শিম-১ ও সিকৃবি শিম-২ জাত দুইটি সিলেট অঞ্চলে বছরব্যাপী প্রোটিনের চাহিদা মেটাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সিলেট অঞ্চলের কৃষি আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্য জানার জন্য স্থাপন করা হয়েছে অটোমেটেড এগ্রোমেটিওরোলজিক্যাল স্টেশন। কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণা করে চমক দেখিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। হাওরে দারিদ্র্য বিমোচনে আগাম ধান চাষে সাফল্য, সিলেটের আবহাওয়া অনুযায়ী গ্রীষ্মকালীন শিম ও টমেটোর জাত উদ্ভাবন, আধুনিক কম্পিউটার ভিশন এর মাধ্যমে চায়ের ইমেজ প্রসেসিং প্রযুক্তির দ্বারা চায়ের চারটি গ্রেড নির্ভুলভাবে নির্ণয়ের পদ্ধতি উদ্ভাবন, স্বয়ংক্রিয় সেচ যন্ত্র উদ্ভাবন, উলম্ব ভাসমান খামারে (ভার্টিক্যাল ফ্লটিং বেড) একক স্থান হতে অধিক ফসল উৎপাদন করে ক্রম-হ্রাসমান ভূমির উপর চাপ কমানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন, মাছের মড়ক রোধে ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনসহ নানাবিধ গবেষণার পাশাপাশি বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ রক্ষায় চলছে গবেষণা।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম শোয়েব জানান, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা, গবেষণা এবং প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম চালিয়ে নিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলেই কাজ করে যাচ্ছেন।

 

তিনি বলেন, এখানকার গ্র্যাজুয়েটরা শিক্ষা গবেষণার পাশাপাশি শিল্প সংস্কৃতিতে এগিয়ে রয়েছে এবং দেশ বিদেশে মেধার স্বাক্ষর রাখছে। ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন বলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পারে সেই লক্ষ্যে কোভিড-১৯ মহামারীর সময়েও সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক পাঠদান ও পরীক্ষাসমূহ অব্যাহত রয়েছে।

 

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার জানান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বছরের একটি অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনার পাশাপাশি ৩০ বছরের একাডেমিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন অনুষদে অত্যাধুনিক গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। এ কারণে করোনাকালীন সময়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনাসহ অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

 

সবার সহযোগিতা পেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।