এম,এ,রশীদ সিলেট থেকে :
সিলেট কোতোয়ালী থানা ও বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশের নাকের ডগায় চলছে রমরমা মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়। কিন্তু এসব অপরাধ দমনে পুলিশের ভূমিকা একদম নিরব। শুধুমাত্র মাদক সেবন ও বিক্রিতেই ক্ষান্ত নয় এসব মাদক কারবারিরা। তারা রাতে মাতলামিসহ ছিনতাই ও চুরির মতো ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদের পুঁজি সংগ্রহ করে চলছে। এতে দিন দিন ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসীসহ সিলেটে বেড়াতে আসা বিভিন্ন পর্যটক।
জানা যায়, সিলেট নগরের সংযোগ সেতু ক্বিন ব্রিজের উত্তর পারে আলী আমজদের ঘড়ি ঘর সংলগ্ন স্থানে এসব মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের একটি নিরাপদ আস্তানা গড়ে তুলেছে মাদক কারবারিরা। তারা ক্বিন ব্রিজের নিচে প্রকাশ্য দিবালোক ও রাতে এসব অপরাধ কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। যা অবশ্যই সিলেট কোতোয়ালী থানা ও বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির জানা থাকার কথা।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ক্বিনব্রিজের নিচ দিয়ে সার্কিট হাউজের পাশের রাস্তা ধরে দৃষ্টি নন্দন নদীর তীরের দিকে হেঁটে গেলেই যে, কারো নজরে পড়বে সার্কিট হাউজের দেয়াল ঘেষা ফুটপাতে কয়েক জন দেহ ব্যবসায়ী নারী খদ্দেরের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। দিনের বেলা এরা ব্রিজে নিচে অবস্থান করে। একজন খদ্দের পেলেই দেহ ব্যবসায়ী নারীরা ঢুকে যান খদ্দের নিয়ে অন্ধকার নোংরা ব্রিজের নিচে। এই দেহ ব্যবসায়ী নারীদের খদ্দের অধিকাংশ নিম্ন শ্রেণীর পুরুষ ও উঠতি বয়সি যুবকরা। প্রতিদিন চলছে এভাবে অসামাজিক কার্যকলাপ।
দিনের আলো কিংবা রাতের আধারে সার্কিট হাউজের দেয়াল ঘেষা ফুটপাত যেন উন্মুক্ত প্রস্রাব খানা। আর রাস্তার দু-পাশ যেন গাজা সেবনের নিরাপদ স্থান। এই পথ ধরে হাটলেই যে কোন সময়, যে কারো চোখে পড়বেই লাইনে দাঁড়িয়ে ফুটপাতের পথচারী, দোকানী, রিক্সা কিংবা ভ্যান ড্রাইভারদের প্রস্রাব করার দৃশ্য। আর নাকে ভেষে আসবে গাঁজা সেবনের ঝাঁঝালো গন্ধ। যদিও প্রশাসনের কারো নজর পরেনা। অথচ এই রাস্তা ধরে প্রতি নিয়ত সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের গাড়ি চলাচল করে।
সিলেট মহানগরের ইতিহাস ঐতিয্যের ক্বিনব্রিজ, দেশের দীর্ঘতম সুরমা নদী, আলী আমজাদের ঘড়ি, পীর হাবিবুর রহমান লাইব্রেরী, সারদা হল, দৃষ্টিনন্দন সিলেট সার্কিট হাউজকে ঘিরে লেগে থাকে দিন রাত দেশী বিদেশী পর্যটকদের ভীড়। এখানে বেড়াতে আসা হাজার হাজার পর্যটক গাজার ঝাঁঝালো গন্ধে বিরক্ত হোন। এবং পরিবার পরিজন নিয়ে আসা এসব পর্যটকরা সন্ধ্যার পরে প্রকাশ্যে দেহ ব্যবসা দেখে লজ্জিত হয়ে চেহারায় বিরক্ত প্রকাশ করেন। যা সিলেট মহানগরবাসীর জন্যও লজ্জা। ক্বিনব্রিজের নিচের অংশ মাটি দিয়ে ভরাট করে দিলে অসমাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হবে বলে মনেকরেন সুধিজন।
সিলেটের প্রবেশ দ্বার নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী ক্বীনব্রিজ নিচে সকল অপকর্ম ও অসমাজিক কার্যকলাপ বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সিলেটের সচেতন জনগণ। তাদের দাবি, সন্ধ্যার পর এসব এলাকায় টহলরত পুলিশ একটু সচেতন হলেই এই সমস্যা থেকে উত্তরণ পাওয়া সম্ভব। টুকাই ও মাদকসেবীদের জমায়েত হতে না দিলে বা ক্বিনব্রিজ সংলগ্ন স্থানে তাদের আস্তানা ভেঙে দিলে এসব অপরাধ কর্মকান্ড রোধ হয়ে যাবে। এজন্য তারা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
Leave a Reply