মো: রেজাউল ইসলাম শাফি, কুলাউড়া(মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ
সাংবাদিকতায় দুই যুগ অতিক্রম করলেন কুলাউড়ার সিনিয়র সাংবাদিক এম, আতিকুর রহমান আখই। এই দুই যুগ অতিক্রম করা নিয়ে তিনি আবেগঘন এক স্মৃতিচারণ করেছেন। নিম্নে তা পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
সাংবাদিকতার দুই যুগ —-এম,আতিকুর রহমান আখই
সাংবাদিকতায় আমার দুই যুগ পুর্ণ হয়েছে। এই দীর্ঘ পথ চলায় অনেক চড়াই উৎরাই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। ১৯৯৭ সালে মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পাতাকুঁড়ির দেশ পত্রিকার মাধ্যমেই সাংবাদিকতায় আমার হাতেখড়ি। কুলাউড়ার সিনিয়র সাংবাদিক এম মছব্বির আলী ভাই এর হাত ধরে এ মহান পেশায় যুক্ত হই। শুরুতে মছব্বির ভাই এর আন্তরিক সহযোগিতা কোন দিন ভুলতে পারবনা। আমাকে উৎসাহিত করতে অনেক সময় নিজে নিউজ লিখে আমার নামে ছাপিয়ে দিতেন। আমি ভুলে শুদ্ধে এবং সাধু ও চলিত ভাষার সংমিশ্রণে নিউজ লিখে দিতাম কিন্তু তিনি দীর্ঘ সময় নিয়ে তা সংশোধন করে পত্রিকা অফিসে পাঠাতেন এবং আমাকে নানা উপদেশ ও পরামর্শ দিতেন। উমেদ ভাই ও শেফুল ভাইয়ের সহযোগিতার কথা চিরদিন মনে থাকবে। আমি যখন সাংবাদিকতা শুরু করি তখন কুলাউড়ায় হাতেগোনা কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন, তাদের মধ্যে শ্রী সুশীল সেন গুপ্ত, নারু স্যার,( ইত্তেফাক ও সিলেটের ডাক) আব্দুল ওয়াহিদ, ওয়াহিদ স্যার( সংবাদ), শাকিল রশীদ চৌধুরী, (সিলেট কন্ঠ ও বাংলা বাজার) , আলা উদ্দিন স্যার (আল আমিন ও যুগভেরী), আবুল কালাম আজাদ ও নিপ্পন চৌধুরী ( অনুপম) এম, মছব্বির আলী, (দৈনিক খবর ও খবর গ্রুপ), মূয়ীনুর রহমান চৌঃ, আজকের সিলেট,সফিকুল হাসান সোহেল (আজকের কাগজ) রাজানুর রহিম ইফতেখার ( দৈনিক সংগ্রাম) প্রমুখ।
পরবর্তীতে কুলাউড়া থেকে সাপ্তাহিক মানব ঠিকানা, কুলাউড়ার ডাক,হাকালুকি, সীমান্তের ডাক ও সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হওয়ায় অনেকেই সাংবাদিকতায় সম্পৃক্ত হয়ে কুলাউড়ার সাংবাদিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন। সাপ্তাহিক পাতাকু্ঁড়ির দেশ পত্রিকার মাধ্যমে শুরুটা হলেও পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে দৈনিক সিলেট বানী,সিলেট পরিক্রমা, দৈনিক কাজির বাজার ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত তদন্ত রিপোর্ট, গোয়েন্দা রিপোর্ট সহ অনেক দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এছাড়া কুলাউড়া থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক হাকালুকি ও কুলাউড়ার ডাক পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। এছাড়া ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় সাপ্তাহিক অর্থকাল এর সহকারী সম্পাদক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছি।দীর্ঘ পথ চলায় সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে লুকিয়ে থাকা অনিয়ম দুর্নীতি সহ নানা অপরাধ সম্পর্কে দেশ জাতি ও প্রসাশনের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কুলাউড়ার যানজট সমস্যা সহ জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন করেছি।
একাধিক ক্রাইম নিউজ করার কারনে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হুমকি পর্যন্ত আমাকে দেয়া হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে সাংবাদিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ক্রাইম নিউজের সংখ্যা কমছে। একজন একটা নিউজ করলে সেটাকে কাঠ চাট করে কপি পেস্ট করেই সাংবাদিকতা চালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রাইম নিউজ না করার পিছনে প্রসাশন ও প্রভাবশালী মহলের সাথে সাংবাদিকদের গভীর সখ্যতাও একটি বড় কারন। সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বেড়ে যাওয়ায় অাগের মতো এখন আর সাংবাদিককতায় ফুলটাইম সময় দিতে না পারলেও সাংবাদিকতা ছেড়ে দেইনি। জীবনের প্রথম পেশা সাংবাদিকতাকে কোন দিনই বিদায় জানানো সম্ভব নয়। এখনো সামান্য সময় পেলে লিখতে বসি, চোখের সামনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখি। প্রকাশিত হয় বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন পোর্টালে। আমার সাংবাদিকতার এই দুই যুগে যে বা যারা বিভিন্ন ভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন আমি তাদের কাছে ঋণী। সকলের আন্তরিক সহযোগিতাই আমার আগামী দিনের পথ চলার প্রত্যয়।
Leave a Reply