স্বপন মাহমুদ,সরিষবাড়ী প্রতিনিধি:
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা রোগী ও তাঁদের স্বজনরা। প্রধান গেট থেকে শুরু করে রোগীদের ওয়ার্ড পর্যন্ত পুরো হাসপাতালজুড়ে স্থানীয় এসব দালালদের অবাধ বিচরণ ও আধিপত্য বিস্তারের করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের সামনে, জরুরি বিভাগের ভেতরে-বাইরে, বহির্বিভাগে ও চিকিৎসকদের প্রায় প্রতিটি দরজার সামনে এবং অন্তর্বিভাগের সব কটি ওয়ার্ডেই দালালদের অপতৎপরতা।
হাসপাতাল এলাকা ঘুরে আরো দেখা গেছে, হাসপাতাল রোডের রাস্তার পাশে দুই দিকে প্রায় অর্ধশত ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজি ল্যাব ও প্রাইভেট চেম্বার গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে দু-তিনটির লাইসেন্স থাকলেও বেশির ভাগেরই কোনো অনুমোদন নেই। এদিকে দালালদের দৌরাত্ম্য ও তাঁদের রাজনীতির কাছে নিরুপায় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।দালালদের একটি এক চিত্র দেখা যায়, হাসপাতালের সহকারী মেডিক্যাল কর্মকর্তা আশিকা আক্তারের রুমে গিয়ে। স্থানীয় এক ক্লিনিকের দুই দালালকে নিয়ে বসে খোশগল্পে মেতে আছেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেই ‘আমরা রোগী না ক্লিনিকে কাজ করি’ বলে বের হয়ে যান। পরে কথা হয় ওই সহকারী মেডিক্যাল কর্মকর্তা আশিকা আক্তারের সঙ্গে। দালালদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় রোগীদের সঙ্গে কক্ষে ঢুকে আবার রোগীর সঙ্গেই বের হয়ে যান তাঁরা। এখন রোগী কম, তাই রুমে বসেছিলেন। তাঁরা তো সব ডাক্তারের রুমে রুমেই যান। কেউ তো তাঁদের রুমে ঢুকতে নিষেধ করেন না।’
মহাদান ইউনিয়নের বনগ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা পারবীন আক্তার (২৬) বলেন, পেটের ব্যথা নিয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা করতে দেন। এ সময় কয়েকজন দালাল এসে ঘিরে ধরে বলে আপা কি হয়েছে কাজটা দেখি কি লিখেছে। আমার সাথে আসেন আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি পরীক্ষা করার জন্য। হাসপাতালের ভিতরে কোন পরীক্ষা হবে না।
ভুক্তভোগী পাপিয়া বেগম নামে এক রোগীর স্বজনরা বলেন, এসব দালালরা জোর করে রোগীকে ক্লিনিকে নিয়ে যায় পরীক্ষা করার জন্য। পরীক্ষা সময় যদি লাগে ৩০মিনিট সেখানে ২ ঘন্টা বসিয়ে রাখেন। যাতে সরকারী হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে আবার এসে রিপোর্ট দেখাতে না পারে। আর রিপোর্ট দেখাতে না পারলেইতো তাদের চেম্বারে গিয়ে ফিস দিয়ে ডাক্তারকে রিপোর্ট দেখাতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সাহেদুর রহমান সাহেদ বলেন, ‘দালালদের কাছে কর্তৃপক্ষ অসহায়। হাসপাতাল এলাকা দালালমুক্ত করতে বারবার আইন-শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা করেও লাভ হয়নি।
Leave a Reply