ইমরান হাসান বুলবুল, ত্রিশাল(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে মুফতি আবু সাঈদ নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের প্রহারে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে সাড়ে চার বছরের শিশু ইসমাইল। বাবা-মার ডির্ভোস হওয়ায় দাদুর বাড়িতে পালিত শিশুটি পরিবার ভয়ে মুখ খোলতে নারাজ! মাদ্রাসা কমিটি ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে রাজি হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি সাঈদ লাপাত্তা।
মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের চাউলাদি আমতলা বাজারে দুষ্টুমি করায় শিশুটিকে বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয় মারকাযুশ শায়খ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.) মাদ্রাসার ওই শিক্ষক। মারতে মারতে শিশুটিকে একপর্যায়ে সিঁড়ি থেকে নিচে ফেলে দেন তিনি। এতে তার মাথা ও মুখে মারাত্মক জখমের সৃষ্টি হয়। শিশুটি এখন ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিশুটির মা-বাবার ছাড়াছাড়ি হয়েছে বেশ কিছুদিন হলো। বাবা সুলতান মিয়া আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। শিশুটি বৃদ্ধ দাদির কাছে থেকে বড় হচ্ছে। চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় মাদ্রাসার সামনে সে দুষ্টুমি করছিল। এ কারণে তাকে ধরে নিয়ে বেদ দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেন মাদ্রাসা শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম আবু সাঈদ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মুনসুর বলেন, শিশুটিকে বেশ মারধর করা হয়েছে। তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে মুখ ও মাথার আঘাতের চিহ্ন একটু গভীর। তাকে আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি।
মারধরের সত্যতা স্বীকার করে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির সদস্য নূরুল ইসলাম বলেন, আমরা মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটি এই শিশুটির যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় বহন করব।
মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি এবিএম আরিফুর রহমান সেলিম বলেন, আমি ঘটনাটি জানার পর শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। তার চিকিৎসা চলছে। ঘটনাটি অনাকাংক্ষিত। হুজুর এর আগে কখনও এমনটি করেননি। এখন কেন এমনটি হলো তা আমিও বুঝতে পারছি না।
কর্মস্থালে না থাকায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মুফতি সাইদ অপরাধ স্বীকার করে বলেন, তাকে এভাবে মারা ঠিক হয়নি। তবে আমি তাকে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেইনি। সে আগেই সিঁড়ি থেকে পড়ে মাথায় ও মুখে আঘাত পেয়েছে। এরপরেও কেন তাকে মারা হলো এমন প্রশ্নে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি তিনি। আপনি এখন কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ত্রিশাল আছি বলে লাইনটি কেটে দেন।
Leave a Reply