১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।৩০শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।শনিবার

শার্শার পুটখালী ইউনিয়নে নির্বাচনী তান্ডব, অধিকাংশ জনপদ ও হাটবাজার জনশূন্য ।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ নজরুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি ।

 

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ শার্শার পুটখালী জনপদ আতঙ্কিত করে তুলেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল গফফার সরদার। এলাকার মানুষের কাছে নিজের গ্রহনযোগ্যতা না থাকায় গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতিক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় এবার বিজয় নিশ্চিত করতে তিনি নৌকা প্রতীককে কলুশিত করে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে পুটখালীর জনপদে তান্ডব চালিয়ে সন্ত্রাসীর রামরাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। যে কারণে দিনের বেলায়ই অধিকাংশ জনপদ ও হাটবাজার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ শান্তিপ্রিয় পুটখালীবাসীর।

 

স্থানীয়রা জানান, আগামী ২৮ নভেম্বর পুটখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আব্দুল গফফার সরদারের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এলাকায় অস্ত্রের মহড়ার সাথে মুহু মুহু বোমা বিষ্ফোরণ আর গুলির শব্দে এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত রেখে ঘুমহারা করেছে। সেসাথে গফফার বিরোধী শান্তিপ্রিয় জনকে পিটিয়ে ও বাড়িঘর ভাংচুর করে বাড়িছাড়া করেছে। অনেককে আবার জীবননাশের হুমকি দিয়ে অবরুদ্ধ করেছে যার যার নিজ বাড়িতে। জনমনে ত্রাস! এই বুঝি গফফার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা এলো। কখন জানি কোন মায়ের বুক খালি হলো, কখন জানি কোন সন্তান পিতৃহারা বা কোন স্ত্রী বিধবা হয়। মনে শান্তি নেই, আতঙ্কিত তন্দ্রা, মনে শুধু ভয় আর ভয়। অত্যাচারি গফফার সরদারের ২৮ তারিখের ভোট কবে পার হবে এই নিয়ে সংশয় জনমনে বিরাজ করছে।

 

কথা হয় গফফার সরদারের সন্ত্রাসী কর্তৃক সদ্য (২১ নভেম্বর, রবিবার দুপুরে) ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত পুটখালী ইউনিয়নের শিবনাথপুর বারপোতা এলাকার সালাউদ্দিনের স্ত্রী ফতেমার সাথে। তিনি বলেন, আমার ছেলে চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসির উদ্দিনের আনারস মার্কার পোস্টার টাঙানোয় গফফার সরদারের সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়িতে এসে ছেলেকে খোজ করে। আমি কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা চুলের মুঠি ধরে এলোপাতাড়িভাবে আমাকে মারধর করে এবং তাদের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আমার স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করতে যায়। একপর্যায়ে আমরা স্বামী-স্ত্রী বাড়ির পাশের খালে ঝাপ দিয়ে সাতারকেটে এপারে পালিয়ে আসি। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন এবং আইনের আশ্রয়ে যেতে পারেননি।

 

কথা হয় পুটখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বালুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, পুটখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিতর্কিত সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল গফফার সরদার এবারের নির্বাচনে অবৈধপন্থায় জয়লাভ করতে এলাকার চিহ্নিত ইয়াব আলী, বদিয়ার, শফিক, কামরুল, আকরমসহ অগনিত সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে সন্ত্রাসীর রাজত্ব কায়েম করায় আমরা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেই। যেকারণে গফফার সরদার ক্ষিপ্ত হয়ে দিনে-দুপুরে আমার বাড়িসহ আমার ছেলের বাড়ি ও এলাকার অনেকগুলি বাড়ি ভাংচুর করে। সেসাথে বালুন্ডা গ্রামের তবিবরের ছেলে তরিফকে মেরে দাঁত ভেঙে দেয়। পিটিয়ে আহত করে আশরাফ আলী হরকরার ছেলে শফিকুর রহমান ও মোহাম্মদ আলীর ছেলে বাবুকে। যাদের ভয়ে তিনি নিজেও বাড়িছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানালেন এই আওয়ামীলীগ নেতা।

 

কথা হয় পুটখালী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শিবনাথপুর গ্রামের মমিন মেম্বরের সাথে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে চলা ও দীর্ঘ ২ বছর যাবত করোনা মহামারীর সময় এলাকাবাসীর পাশে না থাকা গফফার সরদার হঠাৎ নির্বাচন করতে আসায় পুটখালীবাসী তা মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি। যেকারণে আমরা দূর্দিনের কান্ডারি, করোনা মহামারীর সময় এলাকাবাসীর পাশে থেকে অন্ন-বস্ত্রের সহযোগিতাকারি নাসির উদ্দিনের পক্ষ নিয়ে তার আনারস প্রতিকে চেয়ারম্যান নির্বাচন করায় তা মেনে নিতে পারেননি গফফার সরদার। সেকারণে আমার বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে এবং আমার পরিবার পরিজনের লাঠিপেটা করে রেখেছে তার পোষ্য সন্ত্রাসীরা। গত তিনদিন যাবত তিনি ভয়ে বাড়িতে যেতে পারছেন না বলে জানালেন এই যুবলীগ নেতা।

 

আসন্ন ২৮ নভেম্বর পুটখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এলাকার সহিংসতা নিয়ে কথা হয় আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনকারি চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসির উদ্দিনের সাথে। তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, এলাকাবাসীর দাবির মুখে তিনি নৌকার বিপক্ষে নয়, গফফার সরদারের বিপক্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী হউন। এই মানুষটি যে এতো খারাপ প্রকৃতির আর এই নির্বাচনে এতো প্রহসন তা জানলে তিনি নির্বাচন করতে আসতেন না। মনে হচ্ছে নির্বাচন থেকে সরেযেতে, তারপরেও এলাকাবাসীর কাকুতি-মিনতির কারণে সরতে পারছিনা। পুটখালী ইউনিয়নের সর্বত্রই চলছে নৌকাকে অপব্যবহার করে এলাকাবাসীর উপর জুলুম-নির্যাতন। খুবই ভয়ে আছি, কখন না জানি কোন মায়ের বুক খালি করে ওই কূ-চক্রী গফফার সরদারের সন্ত্রাসীরা। তারপরে আবার নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচন করায় তারা সাজানো নাটকে মুহু-মুহু বোমা ও গুলির বিষ্ফোরণসহ নানা অপকর্ম ঘটিয়ে আমার সমর্থকদের উপর হামলা-মামলা করছে।

 

বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান বলেন, পুটখালী ইউনিয়ন শান্ত।তিনি আরো বলেন আমি যতদিন আছি চেষ্টা করব সুষ্ঠু নির্বাচন করানোর জন্য।

 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।