১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

শাজাহানপুরে গিফট দেয়ার কথা বলে এক ব্যক্তিকে  অপহরণের চেষ্টায় মাইক্রোবাস সহ গ্রেফতার ৭।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় গিফ্ট দেয়ার কথা বলে মোস্তফা রাশেদ (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণের চেষ্টায় থানা পুলিশের হাতে মাইক্রোবাস সহ ৭ ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে। এ ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো; মোস্তফা রাশেদের বড় ছেলে খালেদ মাহমুদ (২৫), রাজশাহী জেলার বোয়ালিয়া থানার বালিয়াপুকুর গ্রামের মৃত আব্দুল মাজিদের ছেলে মোসাদ্দেকুর রহমান (৩৬), একই থানার কয়েরদারা বিলপাড়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুস সাত্তার (৩৬), একই জেলার কাশিয়াডাঙ্গা থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে অলি (৪২), পাবনা সদর থানার পৈলানপুর গ্রামের আরিফুল ইসলামের ছেলে নোমান আরাফাত (২৫), একই থানার ছাতিয়ানী গ্রামের শহিদ আলীর ছেলে আজিজুর রহমান সুমন (৪৪) এবং লস্করপুর গ্রামের রেহেজ শেখের ছেলে ড্রাইভার মানিক শেখ (৩২)।

মামলা সূত্রে জানাগেছে, বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার পোড়াপাইকর গ্রামের মৃত আবেদ আলী প্রামাণিকের ছেলে মোস্তফা রাশেদ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট। পোড়াপাইকর গ্রামের পৈতৃক বসতভিটা ছাড়াও শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়নের মাঝিড়াপাড়া গ্রামে ৩ শতক জমির উপর মোস্তফা রাশেদের একটি বাড়ি আছে। ২০১৫ সালে চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণের পর স্ত্রী ও ৩ ছেলেকে নিয়ে পৈতৃক ভিটেমাটি পোড়াপাইকর গ্রামেই বসবাস করতেন মোস্তফা রাশেদ। অপরদিকে শাজাহানপুরের মাঝিড়া পাড়ার বাড়ি ভাড়া দেয়া ছিল। এখন থেকে প্রায় ২ বছর আগে সম্পত্তি নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে বিবাদ শুরু হয় মোস্তফা রাশেদের। ওই বিবাদের কারণে গত ২ মাস যাবত পরিবার ছেড়ে শাজাহানপুরের মাঝিড়া পাড়ার ৪ কক্ষ বিশিষ্ট বাড়ির ১টি কক্ষে একাকি বসবাস শুরু করেন মোস্তফা রাশেদ। ওই বাড়ির অপর ৩টি কক্ষে ৩ জন ব্যাচেলর ভাড়াটিয়া বসবাস করছেন। সেই সাথে সিএনজি চালিয়ে এবং বাড়ি ভাড়া ও পেনশনের টাকা জমিয়ে প্রতি মাসে স্ত্রী সন্তানদের জন্য টাকা পাঠাতেন। অপরদিকে বাবার সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে বড় ছেলে খালেদ মাহমুদ (২৫) তার বাবাকে অপহরণ পূর্বক হত্যা ও গুম করার পরিকল্পনা করে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাবা মোস্তফা রাশেদ। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক গত সোমাবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একটি অজ্ঞাত মোবাইল ফোন থেকে মোস্তফা রাশেদকে জানায় যে, বাংলা লিংক কোম্পানী থেকে গিফ্ট এসেছে, সেটি শাজাহানপুর উপজেলার সি-বøক এলাকা থেকে নিতে হবে। রাত সাড়ে ১০টায় একই নাম্বার থেকে আবারও ফোন আসে গিফ্ট মাঝিড়া স্ট্যান্ড থেকে নিতে হবে। সবশেষে রাত ১২টার দিকে ফোন করে জানায় যে, গিফ্ট দেওয়ার জন্য মোস্তফা রাশেদের বাসাতেই তারা আসছেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোস্তফা রাশেদ দেখতে পান তার বড় ছেলে খালেদ মাহমুদ ৬ সহযোগিকে নিয়ে ঘরে অনধিকার করিয়া শাজাহানপুর থানা পুলিশের পরিচয় দেয় এবং তাদের সাথে থানায় যাইতে বলে। তাতে রাজি না হইলে মোস্তফা রাশেদের দুই হাত রশি দিয়া বাঁধিয়া এবং মুখ চেপে ধরে কোলে তুলে নিয়া মাঝিড়া বাজারের নিকট রাস্তার উপর নিয়া যায়। সেখানে অপহরণের জন্য আসামীদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে (ঢাকা মেট্রো চ ১১-৫৪১৫) মোস্তফা রাশেদকে উঠায়। মাইক্রোবাস স্টার্ট দেয়ার মুহুর্তে মোস্তফা রাশেদের বাড়ির ভাড়াটিয়া নাজমুল, ওমার ফারুক, হেলাল উদ্দিন অপহরণের বিষয়টি বুঝতে পেরে দৌড়ে মাইক্রোবাসের সামনে গিয়ে হাজির হয় এবং থানা পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোস্তফা রাশেদকে উদ্ধার করে এবং মাইক্রোবাস সহ অপহরণের সাথে জড়িত ৭ ব্যক্তিকে আটক করে।

আপরদিকে গ্রেফতারকৃতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, মোস্তফা রাশেদকে মানসিক রোগী উল্লেখ করে তার চিকিৎসার জন্য পাবনা সদরের মাসুম বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘আলোর পথ’ নামক একটি মানসিক/মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ফোন করে মোস্তফা রাশেদের বড় ছেলে খালিদ মাহমুদ। সেই ফোন পেয়ে আলোর পথ মানসিক/মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মাইক্রোবাসে করে মোস্তফা রাশেদকে নিতে এসেছিলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মিরা। রোগী নিতে এসে তারা পারিবারিক দ্ব›েদ্বর কারণে ফেঁসে গেছেন। ‘আলোর পথ’র নির্বাহী পরিচালক মো: আলভী আদনান জানিয়েছেন, রোগি নিতেই তার কর্মিরা মাইক্রোবাস নিয়ে বগুড়ার শাজাহানপুরে এসেছিল।

 

শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানিয়েছেন, সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে খালিদ মাহমুদ তার বাবা মোস্তফা রাশেদকে অপহরণের পর হত্যা ও গুম করার পরিকল্পনা করেছিল মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় খালিদ মাহমুদ সহ তার ৬ সহযোগিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিও আটক করা হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।