শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি :
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় আমরুল ইউনিয়নে হঠাৎ করে সিঁদ কেটে চোরের উপদ্রব বেড়েছে। এক সপ্তাহে ইউনিয়নে বড়নগর মধ্যপাড়া, যাদবপুর, রামপুর, আমরুল পাড়া গ্রামে রাতের আঁধারে সিঁদ কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত ৪ গ্রামের প্রায় ১৬ টি বাড়িতে চুরি উদ্দেশ্য সিঁদ কাটে সিঁদেল চোরেরা।
আজ শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে চুরি হয় বড়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের সুজনের ঘরে। তিনি জানান, মোটরসাইকেল কেনার জন্য ৭০ হাজার টাকা ঘরে রাখা ছিল। আল্লাহর রহমতে এযাত্রায় বেঁচে গেছি, চোরেরা সিঁদকেটে ঘরে প্রবেশ করলেও টাকা নিতে পারেনি। বাক্সের ভিতর টাকাগুলো ব্যাগে রাখা ছিল, চোরেরা টাকা খুজতে সবগুলো কাপড় টাকার ব্যাগের ওপর রাখছে তাই টাকা খুজে পাইনি। তবে চোরেরা কিছু জমির দলিল কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে বাশঁঝাড়ে ফেলে গেছে। তিনি আরও জানান, রাত ২ টার পর এ চুরি হতে পারে। কারণ আমি রাত ২ টার পর্যন্ত মোবাইল অনলাইনে ছিলাম তারপর ঘুমে যায়।
একই রাতে বড়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের শামীম হোসেনের ঘরেও চুরি করেছে। তার স্ত্রী মারুফা আকতার বলেন, আমাদের ঘুমের ভিতরে চোরেরা রাতে সিঁদ কেটে ঘরে রাখা বাক্সের ভিতরে ব্যাগে থাকা আমার লেখার সকল সনদ, ভোটার আইডি কার্ড, সোনার গহনা, বালা, নুপুর, আংটি, পুরাতন ধাতব মুদ্রা ও ৩০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে টাকা পয়সা ও গহনা একত্রে বক্স ভিতর তালা দিয়ে রাখছিলাম।
তবে স্থানীয় সচেতনতামহল এটিকে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির কারণ হিসেবে দেখছেন। কোন সংবদ্ধ চক্র ধারাবাহিক ভাবে আমরুলের নিদিষ্ট এলাকার বিভিন্ন ওর্য়াডে এ কাজ করে যাচ্ছ।
আমরুলে ধারাবাহিক ভাবে চুরির ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা দেখা যায়।
গত বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ইউনিয়ন বড়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত তছলিম উদ্দিন পুটু ছেলে শামীম হোসেন ও মৃত অয়েজ উদ্দিন ছেলে সুজন এর বাড়ি সিঁদ কেটে টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিস চুরির ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত সোমবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার আমরুল ইউপি রামপুর গ্রামে ৪ টি বাড়িতে সিঁদকেটে ঘরে প্রবেশ করে। রামপুর গ্রামবাসীরা জানান, সোমবার রাতে রামপুর গ্রামের আব্দুল হান্নানের দেড় ভরি স্বর্ণ আর মুকুল হোসেন বাড়ি ঢুকে শার্টের পকেটে থাকা মাত্র ২০ টাকা নিয়েছে । একই রাতে মাহমুদুল হাসান মিন্টু ও আব্দুল মজিদ বাড়িতে ৩ জায়গায় সিঁদ কেটে,চুরি না করেই চলে যায় ।
চুরির শিকার রামপুর পূবপাড়া গ্রামের আব্দুল হান্নান জানান, রাত ১০ টার দিকে ঘুমিয়ে যাই। সকালে উঠে দেখি ঘরের সিঁদ কেটে ঘরে থাকা দেড় ভরি সোনা গহনা চুরি নিয়ে গেছে।
তার আগে রাত ৫ ই সেপ্টেম্বর রবিবার আমরুল যাদবপুর গ্রামে ২ টি বাড়িতে চুরি হয়েছে। আর ১ টি বাড়িতে সিঁদ কেটে চুরি না করে রেখে চলে গেছে।
যাদবপুর গ্রামের ইলিয়াস সানি দাবি করেন ওই রাতে ঘরে থাকা তার স্ত্রী ২ ভরি সোনা সহ ১৫ হাজার ১শ টাকা চুরি করে নিয়েগেছে সিঁদেল চোরেরা।তবে চোরের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। একই গ্রামের সিঁধেল চুরির শিকার মন্টু মিয়া দাবিকরেন গরু বিক্রি করে রাখা নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালামালও নিয়ে গেছে চোরেরা।
এছাড়াও গত শুক্রবার রাতে আমরুল নগর রামপুর পূবপাড়া দবির, আব্দুর, লিটন, শহিদুল বাড়ি থেকে সিঁদ কেটে অর্ধ লক্ষধিক টাকা সহ কাপড় ও আসবাবপত্র চুরির অভিযোগ তুলেন।
স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল কাদের জানান, কোন একটি সংঘবদ্ধ চত্রু এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এ সিঁদ কাটার ঘটনা ঘটাতে পারে।
চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আটল জানান, আমাদের এলাকায় পূবে চুরির ঘটনা ছিল, হঠাৎ করে এক সপ্তাহ ধরে সিঁদ কেটে চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। থানা পুলিশ বিষয়টি জেনে তৎপর দৃষ্টিতে দেখছেন। পাশাপাশি গ্রাম পুলিশদের সহোযোগিতায় রাতে টহল দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছেন।
Leave a Reply