৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।শুক্রবার

লালমনিরহাটে সরকারি রাজস্ব ফাঁকির ঘটনায় বরখাস্ত দলিল লেখক রমজান আলী।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ:

লালমনিরহাট সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমি রেজিস্ট্রারীতে দলিল অবমুল্যায়নে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ বেশ পুরানো। কিন্তু এবার অবমুল্যায়ন দলিল রেজিষ্ট্রারী করেও পুনরায় রাজস্ব ফাঁকির টাকা জমা করে ফেঁসে গেল দলিল লেখক মোঃ রমজান আলী। উক্ত দলিল লেখককে এক আদেশে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেন লালমনিরহাট সদর সাব-রেজিস্ট্রার আঃ রশিদ। তবে নাটকীয় রাজস্ব ফাঁকি ঘটনা বরখাস্তকৃত দলিল লেখক বরখাস্তের আগেই জবাব দিয়েছেন।

 

জানা গেছে, লালমনিরহাট শহরের তালুক খুটামারা দালালটারী এলাকার মৃত: ইমামুদ্দিনের পুত্র মোঃ হাসেম আলীর মোস্তফি মৌজার ১৭শতক ৩১পয়েন্ট জমি ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের ভুড়িধোঁয়া গ্রামের মৃত: হানিফ আলীর পুত্র মোঃ জিয়ারুল রহমান ও মোঃ এন্তাজুর হক এর নিকট সাব-কবলা মুলে বিক্রি করেন। যার চুড়ান্ত খতিয়ান নং ১১১৮, জেএল নং ৬৮, তৌজি নং ২২০, দাগ নং ৮৯৫ জমির পরিমাণ ১৭শতক ৩১পয়েন্ট। যার দলিল নং- ৪১২৯। তাং ১৮/০৭/২১ ইং। উক্ত জমির দলিল লেখক মোঃ রমজান আলী। যার সনদ নং-০৮/২০০৯ইং। তিনি ওই জমির শ্রেণি ডাঙ্গা থাকলেও কৌশলে তা দলা, ডোবা ও বাঁশঝাড় করেন। তাছাড়া সাব-রেজিস্ট্রারের চোখে ধুলা দিয়ে মাত্র ১লক্ষ ২৯হাজার টাকার মূল্য একখানা দানপত্র দলিল রেজিষ্টারী করে নেন। ওই এলাকার সরকারি নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী দলিলটিতে ২লক্ষ ৭৬হাজার টাকার বিপরীদে ১৫হাজার ১শত ৮০টাকার রাজস্ব ও স্ট্যাম্প ফাঁকি দেয়া হয়। এ নিয়ে দলিল লেখকদের মাঝে আলোচনা ও সমালোচনায় ফাঁস হয়ে পড়ে। কিন্তু অবমুল্যায়ন দলিলটি রেজিষ্ট্রারীর ১মাস পেরিয়ে গেলেও তখন পর্যন্ত রহস্যজনক কারণে দলিল লেখক মোঃ রমজান আলীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এরেই প্রেক্ষিত গত ১৩ আগস্ট বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সদর সাব-রেজিস্ট্রার আঃ রশিদ নড়েচড়ে বসেন। ওই সময় তিনি বলেন, আমি বিষয়টি ইতিমধ্যে জেনে গেছি। সংশ্লিষ্ট দলিল লেখককে দলিল অবমুল্যায়নের ঘাটতি টাকা ব্যাংকে জমা দিতে বলেছি এবং তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে জবাব চাওয়া হবে। ১৬ আগস্ট আসেন সব তথ্য পাবেন।

১৬ আগস্ট, আবারও তথ্য নিতে সদর সাব-রেজিস্ট্রার আঃ রশিদ এর কাছে গেলে তিনি অফিস সহকারী শাহ আলমকে দলিল অবমুল্যায়নের সব তথ্য দিতে বলেন।

অফিস সহকারী শাহ আলম বলেন, দলিল লেখককে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি এখনো দেয়া হয়নি। চিঠি খসড়া করা হয়েছে। ১৭ আগস্ট, আসেন এর মাঝে দলিল লেখককে চিঠি দেয়া হবে। ওই দলিল লেখককে ১৭ আগস্ট সাময়িক বরখাস্তের চিঠি দেয়া হয়। যার স্মরক নং ৬০। তাং ১৯/০৭/২১ইং।

১৭ আগস্টের ইস্যুকৃত চিঠিতে ১৯ জুলাই তারিখের রহস্য কি, অফিস সহকারী শাহ আলম বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার স্যার জানেন, আমি কিছু বলতে পাড়বো না।

সাময়িক বরখাস্তের চিঠিটি এক মাস পূর্বের তারিখ দিয়ে ইস্যু’র আদেশে বলা হয়, পরর্বতী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রমজান আলীকে দলিল লিখিত পঠিত ও মুসাবিদা করণ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হল। উক্ত নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দলিল লেখক রমজান আলী প্রায় প্রতিদিন কারও না কারও লাইসেন্স ব্যবহার করে দলিল লিখিত পঠিত ও মুসাবিদা করছেন।

 

একটি বিশ্বাস্থ্য সূত্র জানান, ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দলিল লেখক রমজান আলী যত দলিল করেছে তার অর্ধেকেই (অবমুল্যায়ন) সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। যা তদন্ত করলে প্রমাণ মিলবে।

এখানে আসল আর নকলের কোন ভেদাভেদ নেই, টাকা হলে সব হয়। দলিল লেখক রমজানেও কিছু হবে না। যা হচ্ছে তা লোক দেখানো। এসব ঘটনায় আজ পর্যন্ত কারও লাইসেন্স বাতিল বা শাস্তি হয়নি।

 

এ বিষয়ে দলিল লেখক রমজান আলী সাংবাদিকদের বলেন, সরকারী রাজস্ব ঘাটতি টাকা, আমি তা ব্যাংকে জমা করেছি। তারপরেও আমার কাছে জবাব চেয়ে সাব-রেজিস্টার চিঠি দিয়েছেন। আমি জবাবও দিয়েছি। সাব-রেজিস্ট্রারের চিঠি কবে পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে রমজান আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমি ১৭ আগস্ট চিঠি পেয়েছি এবং জবাবও দিয়েছেন। ১৯ জুলাইয়ের চিঠি ১৭ আগষ্ট পেলেন আবার জবাবও দিলেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি।

 

লালমনিরহাট সদর সাব রেজিস্ট্রার আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ফাঁকি দেয়া রাজস্ব আদায় পূর্ব অভিযুক্ত দলিল লেখককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তর আগেই জবাব দিল দলিল লেখক রমজান আলী এমন প্রশ্নে জবারে সাব রেজিস্ট্রার সাংবাদিকদের বলেন, আমি অফিসের নিয়ম মেনে তার কাছে জবাব চেয়েছি।

 

এ ব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রার খালিদ মোহম্মদ বিন আসাদ সাংবাদিকদের জানান, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রাজস্ব ফাঁকির ঘটনায় আমি কিছুই জানি না। তবে অভিযোগ হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।