মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ:
লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১০নং বড়বাড়ি ইউনিয়নে নিজ বাড়ী থেকে ব্যাস দেব রায় নামে এক ব্যক্তির পায়ে ও গলায় দঁড়ি বাধা অবস্থায় গলিত লাশ উদ্ধার করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ। তবে লাশটি পোকা ধরার কারণে চেহারা বিকৃত হওয়ায় চেনার কোন উপায় নেই।
নিহত ব্যাস দেব রায় (৩১) ১০নং বড়বাড়ী ইউনিয়নে ছাট হরনারায়ণ (আমতলা) এলাকার মৃত প্রসন্ন কুমার রায়ের ওরফে বাউরা ধনীর ছেলে।
সোমবার (২ আগস্ট) রাত ৮টায় লাশ উদ্ধার করার পর রাত ১০টায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ইন্সেপেক্টর) শহিদুল ইসলাম।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মারুফা জামান ও লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহা আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ, নিহতের মা ও এলাকাবাসী জানায়, নিহত ব্যাস দেব রায় ও তার মা নয়ন তারা রাণীসহ ওই বাড়ীতে বসবাস করতেন। ছেলে নেশাগ্রস্ত হওয়ায় মায়ের প্রতি অত্যাচার করত ব্যাস দেব রায়। এই অত্যাচার সইতে না পেরে নয়ন তারা রাণী গত এক বছর আগে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় বোনের বাড়ীতে চলে যান। এরপর থেকে ওই বাড়ীতে ব্যাস দেব রায় একাই বসবাস করতেন। আশপাশে তেমন বাড়ী ঘরও নেই। সোমবার (২ আগস্ট) স্থানীয় প্রতিবেশী পথচারীরা গন্ধ পেয়ে ঘরে গিয়ে পোকা ধরা গলিত লাশটি বিছানার ওপর দেখতে পেয়ে লালমনিরহাট সদর থানার ওসিকে জানায়। পরে পুলিশ রংপুর সিআইডিকে অবগত করেন।
আমতলা বাজারের নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক দোকানী সাংবাদিকদের জানান, তিন দিন আগে সে খুব সকালে আমার দোকান থেকে খরচ নিয়ে যায়, সেদিন দোকানে প্রথম কাস্টমার ছিলো ব্যাস। তার থেকে তাকে আর দেখা যায় নি।
নিহতের মা নয়ন তারা রাণী বলেন, আমি খবর পেয়ে বোনের বাড়ী উলিপুর থেকে এসে দেখি ছেলে ব্যাস দেব রায়ের গলিত লাশ ঘরে বিছানার উপর পরে ছিল। আমার এক ছেলে ৮/৯বছর আগে মারা গেছে। মেয়ে গাইবান্ধায় জামাইয়ের বাড়ীতে থাকে। এক ছেলে অনেক দিন হতে নিখোঁজ।
তিনি আরও বলেন, ব্যাস দেব রায় নেশাগ্রস্ত হওয়ায় আমাকে গালি-গালাজ করতো সব সময়ই। এজন্য গত এক বছর আগে আমি বোনের বাড়ীতে চলে গিয়েছি। সে একাই বাড়ীতে থাকতো। এখন কি থেকে কি হয়েছে, আমি এর সঠিক বিচার চাই।
লালমনিরহাট সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ইন্সেপেক্টর) শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাস দেব রায়ের চেহারা বিকৃত হওয়া ও লাশ পচে যাওয়ার কারণে সিআইডি কোন কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি। দেবের পায়ে ও গলায় দঁড়ি বাধা অবস্থায় নিজ শয়ন ঘরের বিছানার উপর ছিল। আমরা সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে গলিত লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি।
Leave a Reply